মোঃ ইউনুছ, মুরাদনগর (কুমিল্লা) জেলা প্রতিনিধিঃ মাদক এখন বাংলাদেশের জাতীয় জীবনের অন্যতম একটি মারাত্মক সমস্যা। মাদকাসক্ত সমাজ জাতির পঙ্গুত্ব বরণের অন্যতম কারণ হয়ে দাঁড়িয়েছে। বর্তমানে শহর ছাড়িয়ে এই মাদক পাড়াগাঁয়েও পৌঁছে গেছে। দেশের ৬৮ হাজার গ্রামের সব গ্রামেই পাওয়া যায় মাদকদ্রব্য। এমন একটি গ্রাম খুঁজে পাওয়া যাবে না যে, এই গ্রামে মাদকাসক্ত ব্যক্তি নেই। এসব মাদক সেবনকারী ব্যক্তিদের মধ্যে সবচেয়ে বেশি হল ‘ইয়াবা’ সেবনকারী। মাদক বিরোধী সমাজ গড়ি মাদককে না বলি এই শ্লোগানকে সামনে রেখে কুমিল্লার মুরাদনগর উপজেলার যাত্রাপুর ইউনিয়ন পরিষদ আয়োজিত পরিষদ হল রুমে এক আলোচনা সভা অনুষ্ঠিত হয়েছে।
আলোচনা সভায় ইউপি’র সদস্য মোঃ আলী আশ্রাফ এর সভাপতিত্বে প্রধান অতিথি হিসেবে বক্তব্য রাখেন, যাত্রাপুর ইউপি’র চেয়ারম্যান আবুল কালাম আজাদ, বিশেষ অতিথি হিসেবে বক্তব্য রাখেন মোচাগড়া আদর্শ উচ্চ বিদ্যালয়ের প্রধান শিক্ষক মোঃ তাজুল ইসলাম, যাত্রাপুর নূরিয়া ও হেফজ খানার প্রতিষ্ঠাতা হাফেজ মোঃ বাশারত ভূইয়া, মুরাদনগর উপজেলা কৃষি সম্প্রসারণ উপসহকারী অফিসার মোঃ শাম মিয়া, ইউপি’র সচিব রফিকুল ইসলাম, ভবানীপুর দাখিল মাদ্রাসার শিক্ষক সফিকুল ইসলাম, যাত্রাপুর ইউনিয়ন পরিষদ সদস্য বাবুল দেব নাথ, বাবুল মিয়া, মোঃ ফারুক মিয়া, মোঃ আল আমিন, মোঃ সেলিম, আনিছুজ্জামান, মোঃ জসিম উদ্দিন সরকার, মোঃ জজ মিয়া, মোঃ আবুল খায়ের, তাসলিমা আক্তার, আলেখা বেগম ও মোসাঃ স্বপ্না আক্তার, মাওলানা জাজিদুল ইসলাম, আবদুল সালাম, সাবেক ইউপি’র সদস্য আবদুল্লাহ আল স্বপন, সংবাদকর্মী আবুল কালাম আজাদ, মসজিদের ইমাম, স্কুল শিক্ষক, মাদ্রাসা শিক্ষক, সমাজসেবক ও শুধীজনরা উপস্থিত ছিলেন।
সভায় বক্তারা বলেন, বেঁচে থাকার মাঝেই মানুষ জড়িয়ে পড়ে কেউ সুকর্মে, কেউ আবার কুকর্মে। কর্ম গুনে কেউ হয় বাবুর্চি, কেউ আবার হয় হিরোইনচি। হিরোইনচি বলা হয় একজন নেশাখোর মাদকাসক্ত ব্যক্তিকে। তাহলে ইয়াবা সেবনকারীকে লোকে কী বলে? তাকে বলা হয় বাবাখোর। ইয়াবা হলো বাবা, যে সেবন করে সে-হলো খোর, সব মিলিয়ে বাবাখোর। ইয়াবা হল বর্তমান যুগের মাদকদ্রব্য নেশাজাতীয় ট্যাবলেট। এটি আসে পার্শ্ববর্তী কোনও এক দেশ থেকে। এই ইয়া বাবা (ইয়াবা) এখন গোটা দেশটাকেই গ্রাস করে ফেলেছে ক্রমাগতভাবে। চুরি, ছিনতাই, ডাকাতি, খুন ও যৌন হয়রানির মতো অপরাধের নেপথ্যের অন্যতম কারণ হলো মাদকাসক্ত। মাদকাসক্তদের মধ্যে ছাত্র, ব্যবসায়ী, শ্রমিক, রিকশাচালক ও অন্যান্য শ্রেণী পেশার মানুষও রয়েছে। বাদ যাচ্ছে না নারীরাও।
বাংলাদেশের বর্তমান সরকার দেশে সন্ত্রাস ও মাদকের বিরুদ্ধে জিরো টলারেন্স গ্রহণ করেছে। আমাদের শিক্ষাব্যবস্থা, কৃষ্টি-কালচার চর্চার প্রতিবন্ধক হিসেবে সমাজের প্রতিটি রন্ধ্রে রন্ধ্রে মাদক বিরাজ করছে। আসুন, মাদকের ভয়াবহতা রোধে আজই শপথ গ্রহণ করি। এই মরণব্যাধির বিরুদ্ধে যুদ্ধ ঘোষণা করে আওয়াজ তুলি- মাদককে না বলি, অপরাধমুক্ত সমাজ গড়ি।