কক্সবাজারের পেকুয়া উপজেলার নুইন্যামুইন্যা ব্রিজ সংলগ্ন বিল থেকে মোহছেনা আক্তারের রগকাটা মৃতদেহ উদ্ধার করে পুলিশ। তার প্রথম স্বামী মালয়েশিয়ায়সড়ক দুর্ঘটনায় মৃত মোহম্মদ তৈয়বের জমানো ও তার রুমমেটদের দেয়া ৮ লাখ টাকা আনতে গিয়ে দ্বিতীয় স্বামী ও তার সহযোগীদের হাতে মোহছেনা খুন হয়েছে বলে র্যাব, পুলিশ ও নিহতের স্বজনদের সাথে কথা বলে জানা গেছে। ইতিমধ্যে ওই ঘটনায় প্রধান অভিযুক্তসহ দুইজনকে গ্রেফতার করা হয়েছে।
পেকুয়ার একটি সূত্র জানায়, সোমবার বিকেল থেকে রিদুয়ান ও সুজনকে চকরিয়ার কোনাখালী বটতলী বাজারের পাহারাদার বদিউল আলম প্রকাশ বদাইয়ার ছেলে হান্নান, ছাদেরঘোনা এলাকার আবু তাহেরের ছেলে ছাদেক, বটতলী বাজারের পান ব্যবসায়ী খাসপাড়া এলাকার বাইশ্যার ছেলে নাজেম উদ্দিন নাজুকে একাধিকবার বৈঠক করতে দেখা গেছে। এছাড়া ঘটনার পর থেকেই তাদেরকে এলাকায় আর দেখা যাচ্ছে না বলে জানিয়েছে সূত্রটি।
এবিষয়ে পেকুয়া থানার ওসি শেখ মোহাম্মদ আলী বলেন, ‘বুধবার ভোররাতে পুলিশ ও র্যাব যৌথ অভিযান চালিয়ে মোহছেনার দ্বিতীয় স্বামী রিদুয়ান ও তার সহযোগী সুজনকে গ্রেফতার করা হয়। তাদের কাছ থেকে প্রাথমিকভাবে কিছু তথ্য পাওয়া গেছে। মোবাইল রেকর্ড ও একটি খালি স্ট্যাম্পও হাতে এসেছে পুলিশের।’
গ্রেফতাররা হলেন- চকরিয়ার কোনাখালী ইউনিয়নের দক্ষিণ কোনাখালীর আবদুল হাকিম গ্রামের নুরুল আলমের ছেলে রিদুয়ান সিকদার হৃদয় ও তার ভাগিনা ছাদেরঘোনার কবির হোসেনের ছেলে সুজন।
জানা যায়, রিদুয়ান ও নিহতের আগের স্বামী তৈয়ব একই রুমে থাকতেন। তারা ভাল বন্ধু ছিলেন। এক সড়ক দুর্ঘটনায় তৈয়ব মারা যান। এরপর তৈয়বের জমানো কিছু টাকা ও মালয়েশিয়ায় বসবসরাত প্রবাসীদের আর্থিক সহযোগিতার ৮ লাখ টাকা তৈয়বের স্ত্রী মোহছেনাকে দিতে রিদুয়ানকে দেওয়া হয়। ওই টাকা দেওয়ার কথা বলেই মোহছেনার সাথে সখ্যতা গড়ে তোলে রিদোয়ান।
নিহতের ছেলে আরিফ বলেন, ‘সোমবার আমার মাকে টাকা দেওয়ার কথা বলেই ডেকে নিয়ে যায় আমার সৎ বাবা রিদুয়ান। তবে সেটা কিসের টাকা আমি জানি না। তবে মা যাওয়ার সময় ব্যাগে করে একটি স্ট্যাম্প নিয়ে যায়। যা পরে পুলিশ জব্দ করেছে।’
খোঁজ নিয়ে জানা যায়, ওই ৮ লাখ টাকা মোহছেনাকে দেওয়ার জন্য স্ট্যাম্পমূলে চুক্তি করেছিল রিদুয়ান।
পেকুয়া থানার ওসি শেখ মোহাম্মদ আলি বলেন, ‘ওই ঘটনায় নিহতের ছেলে বাদি হয়ে একটি হত্যা মামলা দায়ের করেছে যার একমাত্র আসামি রিদুয়ান।
তিনি আরও বলেন, ‘এমন একটি হত্যা কখনও একজন করতে পারে না। ধৃতকে জিজ্ঞাসাবাদ করে ওই হত্যায় কারা কারা জড়িত তা জানা যাবে।’
র্যাব ১৫ এর অধিনায়ক লে. কর্নেল মো. খাইরুল ইসলাম বলেন, ‘আমরা ভোররাতে অভিযানটি শেষ করেছি। ধৃতদের প্রাথমিক জিজ্ঞাসাবাদে কিছু তথ্য পেয়েছি।আরো অধিকতর তদন্তের স্বার্থে এখনি সব বলা সম্ভব হচ্ছেনা বলে জানান তিনি।