মোঃ বাকিরুল ইসলাম,জামালপুর প্রতিনিধিঃ জামালপুরে মেলান্দহ উপজেলার ২ নং কুলিয়া ইউনিয়নের ভালুকা ফকির বাড়ি গ্রামে বাঁশের বেড়া দিয়ে চলাচলের পথ বন্ধ করে একটি পরিবারকে অবরুদ্ধ করেছে প্রতিপক্ষ।চলাচলের বিকল্প কোনো পথ না থাকায় পরিবারগুলোর সদস্যরা গত সাত দিন ধরে বাড়ি থেকে বের হতে পারছে না। ফলে ওইসব পরিবারের সদস্য নারী-পুরুষ ও শিশুরা পড়েছে চরম বিপাকে। আধা কিলোমিটার পথ পেরিয়ে তাদের হাট-বাজার ও চিকিৎসার জন্য যেতে হচ্ছে।
অবরুদ্ধ একটি পরিবারের পক্ষ থেকে ১৪ মার্চ মেলান্দহ থানা লিখিত অভিযোগ করা হয়েছে। অবরুদ্ধ পরিবারের সদস্য খুকি (৭৫) বলেন, বাড়ির জমিন দুই শ’ বছর ধরে চলাচলের জন্য ব্যবহার হয়ে আসছে। আমরা এখানে বাড়ি করার পর বিনা বাধায় ৩২ বছর রাস্তাটি ব্যবহার করছি। প্রতিপক্ষ ভালুকা গ্রামের মুন্তাজ (৪০) পিতাঃ মৃত অমেদ আলী ফকির, সাবেদ আলী (৫০) পিতা – মৃত হবিলা ফকির সামাদ (৫০) পিতা- মৃত হবিলা ফকির, বদি (৪০) পিতা- তমেজ ফকির, আব্দুর রহমান (৬০) পিতা- মৃত তমেজ ফকির, শাহিন (৩৫) পিতা- বদি ফকির স্থানীয় আধিপত্য বিস্তার ও ক্ষমতার অপব্যবহার করে আমাদের চলাচলের একমাত্র রাস্তটি বাঁশের বেড়া দিয়ে সাত দিন আগে বন্ধ করে দিয়েছে। আমাদের পরিবারের ৫ জন সদস্য অবরুদ্ধ হয়ে পড়েছে। আমার মেয়ে তহিরন বেগমকে অভিযুক্তরা কিল ঘুষি ও দড়ি দিয়ে বাঁধিয়ে রাখে, পরে স্থানীয়রা উদ্ধার করে মেলান্দহ সরকারি হাসপাতালে ভর্তি করে।
নাম প্রকাশে অনিচ্ছুক ভালুকা গ্রামের একাধিক ব্যক্তি জানান, ভালুকা চিনিতোলা সড়কের উত্তর পাশে খুকি বেগম -এর বাড়ি এলাকার লোকজনের কাছে ফকির বাড়ি হিসেবে পরিচিত। ১৯৯০ সালে খুকি ওই জমি কিনে নেয়। সেই থেকে ওই বাড়িতে বসবাস করে আসছে ওই এক পরিবার।
তাঁরা আরও জানান, ভালুকা -চিনি তোলা সড়ক থেকে বাড়িতে প্রবেশের রাস্তা বাঁশ দিয়ে বন্ধ করে দেওয়া হয়েছে। বাড়ির মধ্যে ফকির বংশের পাঁচটি পরিবার। পশ্চিম পাশে মুন্তাজ ফকির গরুর গোয়াল ঘর তুলেছেন। তার পাশে সাবেদ আলী শেখ টিন দিয়ে বন্ধ করে রেখেছে। পূর্ব পাশে পুকুর দিয়েছে প্রতিপক্ষরা। দক্ষিণ পাশ দিয়ে বাঁশের বেড়া দিয়ে হাঁটার পথ বন্ধ করে দেওয়া হয়েছে। দক্ষিণ ও পশ্চিম পাশে পানি থাকায় যাতায়াতের কোনো ব্যবস্থা নেই।
অবরুদ্ধ পরিবারের সদস্য পারভীম বেগম (৭৫) বলেন, সাত দিন ধরে বাড়ি থেকে বের হতে পারি না। আগে এই বাড়ি, ও বাড়ি গিয়ে সময় কাটাতাম। রাস্তা বন্ধ করে দেওয়ায় বাড়ির মধ্যে বসে থাকতে হচ্ছে। গরু-বাছুর নিয়ে আমরা রাস্তায় রাত কাটাচ্ছি। আমার আমার ভগ্নিপতি ঝাল মুড়ি ব্যবসা করে, বাড়িতে গাড়ি নিয়ে আসতে পারতেছে । তাই বিষয়টি নিয়ে দুঃশ্চিন্তায় আছি।
এই বিষয়ে প্রতিপক্ষ আব্দুর রহমান বলেন, বিগত ৩২ বছর ধরে আমাদের জায়গা দিয়ে চলাচল করতে দিয়েছি। এক সপ্তাহ আগে আমাদের সঙ্গে খুকি বেগম -এর ঝগড়া হয়, খুকির মেয়ে পারভীন বেগম আমাদের নামে কোর্টে মামলা দেয়। তাই আমরা চলাচলের পথ বন্ধ করে দিয়েছি। পৃথিবী যদি উল্টে যাই তাও খুকির পরিবারকে আমার রাস্তা দিয়ে যেতে দিবোনা।
২ নং কুলিয়া ইউনিয়নের ইউপি চেয়ারম্যান মোঃ আব্দুস সালাম বলেন, রাস্তা বন্ধের বিষয়টি নিশ্চিত, ওরা মেয়ে মানুষ এজন্য শক্তি করে পাইতেছেনা,পুলিশ গেয়েছিল তারা বলছে আমরা কি করব।
মেলান্দহ উপজেলা নির্বাহী কর্মকর্তা মোঃ শফিকুল ইসলাম বলেন, বিষয়টি আপনাদের কাছ থেকে প্রথম শুনলাম, ঘটনা সরেজমিনে গিয়ে তদন্ত করে প্রয়োজনীয় ব্যবস্থা নিব।