কে এম নাছির উদ্দিন সিনিয়র ক্রাইম রিপোর্টার: “তোমার সৃষ্টির পথ রেখেছে তুমি অ্যাকীলা, সকল সৃষ্টি মাঝে তুমি প্রকাশে নিরবধি “রবীন্দ্রনাথ ঠাকুরের এমনই অমর পঙক্তির ছোঁয়া নিয়ে বৃহস্পতিবার (৮ মে) শুরু হয়েছে সিরাজগঞ্জের শাহজাদপুরে বিশ্বকবির ১৬৪তম জন্মবার্ষিকী উপলক্ষে তিন দিনব্যাপী উৎসব।সকাল ১০টায় শিল্পকলা একাডেমির শিল্পীদের জাতীয় সংগীত পরিবেশনের মাধ্যমে আনুষ্ঠানিকভাবে উদ্বোধন হয় এই সাহিত্য-সংস্কৃতির মহোৎসবের। সভাপতিত্ব করেন সিরাজগঞ্জের জেলা প্রশাসক মুহাম্মদ নজরুল ইসলাম। স্বাগত বক্তব্য দেন শাহজাদপুর উপজেলা নির্বাহী অফিসার মোঃ কামরুজ্জামান। প্রধান অতিথি হিসেবে উপস্থিত ছিলেন পার্বত্য চট্টগ্রাম বিষয়ক মন্ত্রণালয়ের সচিব মোঃ আব্দুল খালেক। বিশেষ অতিথি ছিলেন পুলিশ সুপার মোঃ ফারুক হোসেন। বিশ্বকবির সাহিত্যকর্ম ও দার্শনিক ভাবনা নিয়ে আলোচনায় অংশ নেন রবীন্দ্র বিশ্ববিদ্যালয়ের বাংলা বিভাগের সহকারী অধ্যাপক খায়রুন্নেছা এবং ঢাকা বিশ্ববিদ্যালয়ের বাংলা বিভাগের সহকারী অধ্যাপক ড. রাহাত আলম। তারা রবীন্দ্রনাথের জীবনদর্শন, মানবতা ও চেতনার বহুমাত্রিকতা নিয়ে বিশ্লেষণ করেন।শিল্প-সাহিত্য ও সঙ্গীতের মূর্ছনায় মুখরিত হয়ে ওঠে শাহজাদপুর। স্থানীয় ও জেলার বিভিন্ন সাংস্কৃতিক সংগঠনের শিল্পীরা পরিবেশন করেন রবীন্দ্রসংগীত, আবৃত্তি ও নৃত্য। “আমার সোনার বাংলা”, “এখানে কেউ থাকে না” কিংবা “জীবনের জয়গান”— এমন সব কালজয়ী কবিতা ও গানের মধ্য দিয়ে মুগ্ধ হন দর্শক-শ্রোতারা।রবীন্দ্রনাথ ঠাকুরের শাহজাদপুরবাস-জীবন ছিল তাঁর সাহিত্যিক রত্নভাণ্ডারের অন্যতম উর্বর অধ্যায়। এখানেই বসে তিনি রচনা করেছেন ‘চোখের বালি’, ‘ঘরে বাইরে’, ‘ছুটি’, ‘পোস্টমাস্টার’-এর মতো বহু কালজয়ী গল্প ও উপন্যাস।”আমার এই পথ চাওয়াতেই আনন্দ সারা দিন ধরি আমি পথের দিকে চেয়ে থাকি।”এই কবিতার মতোই শাহজাদপুর অপেক্ষা করে প্রতি বছর প্রিয় কবির জন্মদিনে তাঁকে নতুনভাবে আবিষ্কারের জন্য। আগামী দুই দিনেও চলবে আলোচনা, প্রদর্শনী ও সাংস্কৃতিক পরিবেশনা। সাহিত্যপ্রেমীরা বলছেন, “এ আয়োজন যেন প্রতি বছর আরও বিস্তৃত হয়, যাতে নতুন প্রজন্ম জানে— রবীন্দ্রনাথ কেবল কবি নন, তিনি বাংলার প্রাণসত্তা।”