মোঃ আফ্ফান হোসাইন আজমীর, রংপুর ব্যুরো প্রধানঃ রংপুর মহানগরীসহ এ অঞ্চলে আট জেলায় তীব্র শীত ও ঘন কুয়াশা আর কনকনে ঠাণ্ডা অনুভূত হচ্ছে গত সপ্তাহখানেক ধরে। এতে চরম বিপাকে পড়েছেন শ্রমজীবী ও খেটেখাওয়া মানুষজন। তারা শীত নিবারণের জন্য গরম কাপড় পরছেন।
একই সঙ্গে শীতের কারণে রংপুর নগরীসহ জেলা ও উপজেলা শহরগুলোতে ফুটপাতে বেশ জমে উঠেছে পুরনো গরম কাপড়ের বিক্রি। অভিজাত কাপড়ের দোকানগুলোতেও ভিড় বাড়ছে ক্রেতাদের। এতে যেমন গরম কাপড়ের চাহিদা বেড়েছে, ঠিক তেমনি দোকানগুলোতে বিক্রি বেড়ে গেছে।
তবে এই অঞ্চলে হত-দরিদ্র, শ্রমজীবী ও খেটেখাওয়া মানুষজনসহ চরাঞ্চলের বাসিন্দারা সরকারি-বেসরকারি সাহায্য সহযোগিতা চেয়েছেন।
সরেজমিনে দেখা গেছে, সোয়েটার, জ্যাকেট, হুডি, ব্লেজার, শাল, মাফলার, কানটুপি ও হাত মোজার কদর প্রতিদিনই বাড়ছে। রংপুর নগরীর ছালেক মার্কেট, জামাল মার্কেট ও হনুমানতলা এরশাদ হকার্স মার্কেটসহ বিভিন্ন বিপণিবিতানে গিয়ে দেখা গেছে, সোয়েটার, জ্যাকেট, হুডি, ব্লেজার, শাল, মাফলার বেশি বিক্রি হচ্ছে। সঙ্গে কানটুপি, হাত ও পা হাত মোজারও চাহিদা অনেক। ঠাণ্ডা থেকে সুরক্ষার জন্য গরম কাপড়ের পাশাপাশি হাত ওকান টুপির বিকল্প নেই।
এছাড়াও মাঙ্কি টুপি, মাফলার টুপি, ক্যাপের মতো টুপি, ঝোলা টুপিসহ বিভিন্ন ধরনের টুপি বিক্রি হচ্ছে। ওলের তৈরি বিভিন্ন রঙ এবং সাইজের টুপিও বিক্রি হচ্ছে। অনেকে আবার পোশাকের সঙ্গে মিল রেখে লাল, সাদা, সবুজ, কালো, খয়েরি ও নীল রঙের টুপি কিনছেন। ২০০ টাকা থেকে ৭০০ টাকা পর্যন্ত একটি টুপি বিক্রি হচ্ছে। এ ছাড়াও চার থেকে এক হাজার টাকায় সোয়েটার ও জ্যাকেট বিক্রি হচ্ছে। চাদরেরও চাহিদা রয়েছে যথেষ্ট।
এদিকে নগরীর স্টেশন বাজার, সাতমাথা ও কাচারী বাজার এলাকায় বিভিন্ন ফুটপাতে পুরাতন কাপড়ের দোকানেও ভিড় বেড়েছে। এসব বিক্রেতারা ঢাকা, চট্টগ্রাম ও রংপুর থেকেই পুরাতন কাপড়ের বান্ডিল বা বস্তা ক্রয় করে রংপুর নগরীসহ এ অঞ্চলের বিভিন্ন এলাকায় এসব গরমের কাপড় বিক্রি করেন মৌসুমি ব্যবসায়ীরা। পুরাতন কাপড়ের দাম কম, তাই নিম্ন আয়ের মানুষ কম দামে কাপড় কিনছেন।
শ্রমজীবী আশরাফুল আলম বলেন, পুরাতন গরম কাপড়ের দোকানে এসেছি, এই ঠাণ্ডায় তেমনটা কাজ করতে পারছি না তাই কম দামে একটি জ্যাকেট কিনলাম।
নগরীর স্টেশন এলাকার পুরাতন কাপড় ব্যবসায়ী সবুজ মিয়া বলেন, গত কয়েক দিন থেকে এই এলাকায় কনকনে শীত নেমেছে। গরম কাপড়ও বিক্রি হচ্ছে বেশ।
টুপি ব্যবসায়ী সিরাজুল ইসলাম বলেন, বর্তমানে রংপুরে অনলাইন টুপির চাহিদা বেশি। আগে এই টুপি দেড়শ টাকায় বিক্রি হলেও এখন দুই থেকে আড়াইশ টাকায় বিক্রি হচ্ছে। এ ছাড়া বিভিন্ন ফ্যাশনেবল টুপি ৫ থেকে ৬শ টাকায় বিক্রি হচ্ছে।
রংপুরের জেলা প্রশাসক মোহাম্মদ মোবাশ্বের হাসান জানান, শীত মোকাবিলায় সবধরনের প্রস্তুতি রয়েছে জেলা প্রশাসনের। এরই মধ্যে নগরীর ৩৩ ওয়ার্ডসহ জেলার আট উপজেলা ও তিন পৌর এলাকায় সরকারিভাবে প্রথম পর্যায়ের ৪৬ হাজার কম্বল বিতরণ করা হয়েছে ও দ্বিতীয় পর্যায় ১৩ হাজার কম্বল বিতরণ করা হয়েছে। শীত মোকাবিলায় আরও ২৫ হাজার পিস কম্বলের চাহিদা সরকারের সংশ্লিষ্ট মন্ত্রণালয়ে পাঠানো হয়েছে