নিজস্ব প্রতিবেদক:রাজশাহী নগরীতে তালেবানি কায়দায় ফিল্মি স্টাইলে একদল কিশোর গ্যাং নাচানাচি আর উল্লাস করতে দেখা গেছে। সঙ্গে বাদ্যও বাজছে,তালে তালে কিশোররা নাচছে।১৯ সেকেন্ডের একটি ভিডিও সামাজিক যোগাযোগ মাধ্যমে ভাইরাল হয়েছে।
তাদের হাতে রামদা, চাইনিজ কুড়াল, চাকুসহ নানা ধরনের অনেক অস্ত্র। একজন এরই মধ্যে বলছে, ‘এই মাইর্যা দিস না রে বাপ’! এই ভিডিওটি ভাইরাল হয়েছে সামাজিক যোগাযোগ মাধ্যমে।
ঘটনাটি রাজশাহীর শাহমখদুম থানার গাংপাড়া এলাকার বলে জানা গেছে।
বিষয়টি সামাজিক যোগাযোগ মাধ্যমে ভাইরাল হওয়ার পর তোলপাড় শুরু হয়েছে। পুলিশ ও গোয়েন্দা সংস্থার সদস্যরা এই কিশোরদের খোঁজ শুরু করেছে। তবে মঙ্গলবার রাত সোয়া আটটা পর্যন্ত তাদের পরিচয় জানতে পারেনি।
শাহ মখদুম থানার ভারপ্রাপ্ত কর্মকর্তা (ওসি) ইসমাইল হোসেন বলেন, ‘খোঁজ নিয়ে জেনেছি এই ভিডিও অন্তত চার মাস আগের। তখন আমি এই থানার ওসি ছিলাম না। নাচানাচির সময় ওরা নিজেরাই ভিডিওটা করেছিল। আজ সেটা ভাইরাল করে দেওয়া হয়েছে।’ ওসি জানান, এই কিশোর গ্যাং গ্রুপেরই এক ছেলের নাম আরাফাত। তাকে চারদিন আগে একই গ্রুপের অন্যরা মেরেছে। আরাফাত এখন গুরুতর আহত অবস্থায় হাসপাতালে চিকিৎসাধীন। এই ছেলেটাকে মারধরের কারণে তার পক্ষের কেউ ভিডিওটা ছেড়ে দিয়েছে। আরাফাতের অভিভাবক গতকাল (সোমবার) থানায় অভিযোগ করতে এসেছিলেন।
কিন্তু তিনি কারো নাম জানাতে পারেননি। তবে মামলা হয়েছে। এখন কারা আরাফাতের ওপর হামলা করেছে এবং চার মাস আগে কারা অস্ত্র হাতে উল্লাস করছিল তার সবকিছুই বেরিয়ে আসবে। রাজশাহী মেডিকেল কলেজ হাসপাতাল সূত্রে জানা গেছে, আরাফাতের মাথায় গুরুতর আঘাত রয়েছে। ইতোমধ্যে তার মাথায় অস্ত্রপাচার করা হয়েছে। এখনো শারীরিক অবস্থা সংকটাপন্ন। তাকে হাসপাতালে নিবিড় পরিচর্যা কেন্দ্রে (আইসিইউ) রাখা হয়েছে। রামেক হাসপাতালের আইসিইউ ইনচার্জ ডা. আবু হেনা মোস্তফা কামাল জানান, চারদিন আগে হাসপাতালে আনার পরেই আরাফাতকে আইসিইউতে নেওয়া হয়েছে। তাঁর শারীরিক অবস্থা অত্যন্ত সংকটাপন্ন। শাহ মখদুম থানার ওসি ইসমাইল হোসেন জানান, কিশোর আরাফাতের উপর হামলার ঘটনায় মঙ্গলবার থানায় মামলা রেকর্ড করা হয়েছে। কারা অস্ত্র হাতে উল্লাস করছিল তা তদন্তেই পাওয়া যাবে। তদন্তে যাদের পাওয়া যাবে তাদের বিরুদ্ধে আইনানুগ ব্যবস্থা গ্রহণ করা হবে।
স্থানীয়রা জানান, তিনদিন আগে গাংপাড়া এলাকার কিশোর গ্যাং সদস্যরা চাঁদাবাজির টাকায় খাওয়া-দাওয়া করে অস্ত্র হাতে নাচানাচি করে শো-ডাউন করে আতঙ্ক সৃষ্টি করে।
নগর পুলিশের অতিরিক্ত কমিশনার বিজয় বসাক জানান, ভিডিওটি পুলিশের হাতেও এসেছে। পুলিশ এই কিশোর গ্যাং সদস্যদের পরিচয় উদঘাটন করতে কাজ শুরু করেছে। শিগগিরই তাদের আইনের আওতায় আনা হবে।