গোলজার হোসেন হিরা বিশেষ প্রতিনিধি:
রাজশাহী মেডিকেল কলেজ (রামেক) হাসপাতালের অনিয়ম যেন কোনোভাবেই থামছে না। কখনো নার্সদের অবহেলা, কখনো আনসার সদস্যদের ,,দম্ভ আবার কখনো চিকিৎসকের রূঢ় আচরণ—সব মিলিয়ে হাসপাতালটি যেন এক অন্য জগত, যেখানে রোগী নয়, রাজা হয়ে বসে আছেন ডাক্তার থেকে সুইপার পর্যন্ত সবাই। তবে সবাই যে একই রকম তা নয়, কিছু ব্যতিক্রম সেবক-সেবিকাও রয়েছেন যারা আন্তরিকভাবে রোগীদের সেবা দিয়ে যাচ্ছেন—এমন মন্তব্য করেছেন একাধিক রোগীর স্বজন।
রবিবার (২২ জুন) বিকেল ৪টার দিকে রাজশাহী মহানগরীর বোয়ালিয়া থানার টাইলস পট্টিতে মোটরসাইকেল দুর্ঘটনায় আহত হন সাংবাদিক শেখ মোঃ রুমেল (৩৫)। আহত অবস্থায় তিনি তার কয়েকজন সহকর্মীকে ফোন করে ঘটনাটি জানান। খবর পেয়ে সংবাদকর্মী আহম্মদ মোস্তফা শিমুল, রাবিনুর রহমান রিয়াদ, মোঃ পারভেজ ইসলাম, রাতুল সরকার, সাইদ ও জনি ছুটে যান ঘটনাস্থলে এবং তাকে উদ্ধার করে রাজশাহী মেডিকেল কলেজ হাসপাতালের জরুরি বিভাগে নিয়ে যান।
জরুরি বিভাগে চিকিৎসক তার পায়ের ক্ষতস্থানে ড্রেসিংয়ের নির্দেশ দিয়ে পাঠান রুম নম্বর-১১ তে। কিন্তু সেখানে গিয়ে দেখা যায়, ড্রেসিং রুম তালাবদ্ধ এবং আশপাশে কোনো সেবক নেই। আহত সাংবাদিকের পা দিয়ে তখনো রক্ত ঝরছিল, তবুও মিলছিল না চিকিৎসা। এভাবে প্রায় ৩০ মিনিট অতিবাহিত হয়।
শেষমেশ রুমেল রামেক হাসপাতালের পরিচালককে ফোন করে বিষয়টি জানালে কিছুক্ষণের মধ্যেই একজন আনসার সদস্য সেখানে উপস্থিত হন এবং কর্তব্যরত সেবকদের বারবার জানালেও কেউ সাড়া দিচ্ছিল না। অবশেষে একজন ব্যক্তি এসে ড্রেসিং করেন, কিন্তু তিনি জানান, তিনি বাথরুমে ছিলেন। এমন অজুহাত প্রসঙ্গে রুমেল বলেন, “৪০ মিনিট ধরে কেউ বাথরুমে থাকেন কীভাবে? এটা দায়িত্বে অবহেলার নামান্তর।”
তিনি আরও বলেন, “রামেকে প্রতিদিন শত শত রোগী আসে। যদি জরুরি রুম তালাবদ্ধ থাকে, তাহলে গুরুতর আহত রোগী রক্তশূন্য হয়ে মারা যেতেও পারে। এটা খুবই উদ্বেগজনক ও দুঃখজনক। ডেকে আনলে কেউ ‘৩ নম্বর হাত’ দেখিয়ে অজুহাত দেবে, এটা বন্ধ হওয়া দরকার।”
এ ঘটনায় তিনি রামেক হাসপাতালের পরিচালক বরাবর লিখিত অভিযোগ দায়ের করবেন বলেও জানান ভুক্তভোগী সাংবাদিক শেখ মোঃ রুমেল।