শনিবার, ০৭ ডিসেম্বর ২০২৪, ০৬:১৩ পূর্বাহ্ন

রায়গঞ্জে বিয়ের তথ্য গোপন করে স্বাস্থ্য কমপ্লেক্সে চাকরি,প্রথম স্বামীকে ডিভোর্স না দিয়ে দ্বিতীয় বিয়ে

রিপোর্টারের নাম
  • আপডেট টাইম : শনিবার, ২৫ নভেম্বর, ২০২৩
  • ১৭৩ বার পঠিত

মোঃ রেজাউল করিম খান ভ্রাম্যমান প্রতিনিধি: সিরাজগঞ্জের রায়গঞ্জ স্বাস্থ্য কমপ্লেক্সে বিয়ের তথ্য গোপন করে এক নারীকে মিড ওয়াইফ পদে চাকরি নেয়ার অভিযোগ উঠেছে লুবনা জাহান মীম নামে এক নারীর বিরুদ্ধে।

অভিযুক্ত নারী কাজীরপুর উপজেলার চর ভানুডাঙ্গা এলাকার হযরত আলীর মেয়ে।তথ্য গোপন করে চাকুরির বিষয়টি নিয়ে এলাকায় চাঞ্চল্যের সৃষ্টি হয়েছে।

ভুক্তভোগী ও অনুসন্ধানে জানা যায়, পাবনা জেলার সাথিয়া থানার কাশিনাথপুর এলাকার জাকারিয়া হোসাইনের সঙ্গে ফেসবুকে পরিচয় হয় লুবনা জাহান মীমের। পরে তাদের মধ্যে প্রেমের সম্পর্ক গড়ে উঠে। যার ফলশ্রুতিতে ২০১৯ সালের ১৬ ডিসেম্বর তারা বিয়ে করেন।

অভিযুক্ত লুবনা জাহান মীমের প্রথম স্বামী ভুক্তভোগী জানান, বিয়ের পর আমরা ঢাকাতে সংসার শুরু করি। তারপর আমার স্ত্রীর স্বাস্থ্য কমপ্লেক্সে চাকরি হয়। যেখানে আমাদের বিয়ের কথা অস্বীকার করে অবিবাহিত মর্মে চাকরিতে যোগ দেয়। এই চাকরির পিছনে আমার অবদান ছিল খুবই গুরুত্বপূর্ণ। নিজের শ্রম,মেধা ও অর্থ দিয়ে আমি আমার স্ত্রীকে সরকারি চাকরি নিয়ে দেই। আর বর্তমানে এই সরকারি চাকরিটার কারনে আজ আমার স্ত্রীকে হারাতে হলো। কেননা চাকরি পাওয়ার পর থেকেই তার অনেক পরিবর্তন লক্ষ করেন ভুক্তভোগী জাকারিয়া।

তিনি জানতে পারেন তার স্ত্রী পরকীয়াতে আসক্তের বিষয়ে জানার সাথে সাথে স্ত্রীর বিরুদ্ধে সাথিয়া থানায় জিডি করেন।পরে তার স্ত্রী সিরাজগঞ্জের রায়গঞ্জ আলাউদ্দিন সরকারের ছেলে পৌর সভায় কর্মরত স্বপন সরকারের সাথে, তাকে কোন প্রকার আইনি নোটিশের মাধ্যমে ডিভোর্স না দিয়ে ২য় বিবাহ করে।

অভিযুক্তকারীর ২য় স্বামী স্বপন সরকার রায়গঞ্জ পৌর সভাতে চাকরি করে।স্বপন সরকার ভুক্তভোগীর স্ত্রীকে নানান ভাবে প্রলোভন দিয়ে বলেন,বলেন তোমার ১ম স্বামী পাবনা থেকে কিছুই করতে পারবে না।আমি তোমার পাশে আছি।

ভুক্তভোগীর দাবি গত ১২-১০-২৩ তারিখে তার নিকট থেকে বিভিন্ন প্রয়োজনে টাকা নিয়ে নেয়।তার পরের দিন১৩- ১০-২৩ তারিখে তাকে জানায় হসপিটাল থেকে ফোন দিয়েছে দ্রুত যেতে হবে এই মর্মে স্বপন সরকার সাথে করে চলে যায় এবং একই দিনেই বিয়ে করে।

২য় বিয়ের আগে মুহূর্তে আমাকে আইনি ভাবে কোন নোটিশ না দিয়ে ডিভোর্স না করে রায়গঞ্জ পৌর সভায় কর্মরত স্থানীয় স্বপন সরকারের সাথে বিয়ে করে।

বিয়ের বিষয়ে আমি জানার পর স্বপন সরকার কে আমি ফোন দিয়ে বিষয়টি মিমাংসা করার কথা বললে আমার কথা না শুনে উল্টো আমাকে নানান ভাবে হুমকি ধামকি প্রদান করে ও পরে আমার বাড়িতে আমার স্ত্রীর সাথে করে বখাটেদের নিয়ে এসে হুমকি ধামকি প্রদান করে।

পরে আমি আদালতের দারস্থ হয়ে তাদের নামে মামলা দায়ের করি যা চলমান।

ভুক্তভোগী পাবনা জেলার জাকারিয়ার স্ত্রী মিড ওয়াইফ পদে চাকুরি করা লুবনা খাতুন তাদের বিবাহের তথ্য গোপন করে সরকারি চাকুরিতে যোগদান ও পরে তাকে আইনি ভাবে ডিভোর্স না দিয়ে ২য় বিবাহ করে তার সাথে যে সামাজিক ও অর্থনৈতিক প্রতারণা করেছে সে বিষয়ে স্থানীয় প্রশাসনের হস্তক্ষেপ কামনা করে তদন্ত সাপেক্ষে প্রয়োজনীয় ব্যবস্থা নেওয়া দাবি জানিয়েছেন তিনি।

তবে এমন প্রতারকদের বিচারের আওতায় এনে দৃষ্টান্ত মূলক শাস্তির দাবি জানিয়েছেন।যেনো তার মতো আর কোন পুরুষ এমন প্রতারিত না হয় এবং সতর্কিত থাকতে পারে।

এ বিষয়ে রায়গঞ্জ স্বাস্থ্য কমপ্লেক্স এ মিড ওয়াইফ পদে কর্মরত অভিযুক্ত লুবনা জাহান মীমের সাথে গত বৃহস্পতিবার রাত ৮ টা পর্যন্ত অপেক্ষা করেও সাক্ষাৎ পাওয়া যায় নি।

তবে শুক্রবার সকালে তার কর্মস্থল রায়গঞ্জ স্বাস্থ্য কমপ্লেক্স গিয়ে তার সাথে কথা হয়, তিনি জানান,তাকে ভয়ভীতি দেখিয়ে এসব করা হয়েছে। তবে তিনি তার সাথে বিবাহ করেন নাই। পরে তার কাবিন নামা আর ঢাকায় বাসা বাড়িতে দীর্ঘদিন বসবাস করার কাগজ পত্র এবং লুবনা জাহান এর ব্যাংক একাউন্টে জাকারিয়া হোসাইন কে সম্পর্কে স্বামী হিসাবে নমিনির কাগজ পত্র দেওয়া এবং একাধিকবার রায়গঞ্জে দেখা সাক্ষাৎ এবং স্বামী স্ত্রীর সম্পর্কে মুঠোফোনে কথা বলা, সংসার করার বিষয়ে জানতে চাইলে তিনি জানান,যা হয়েছে আমার ইচ্ছের বিরুদ্ধে হয়েছে। তবে কেনো তিনি আইনি পদক্ষেপ নেন নাই এ বিষয়ে এ প্রতিবেদক কে কোন উত্তর দিতে পারেন নি অভিযুক্ত।

এ বিষয়ে রায়গঞ্জ পৌর সভায় কর্মরত অভিযুক্তর ২য় স্বামী স্থানীয় স্বপন সরকারের নিকট অভিযুক্ত তথ্য গোপন করে স্বাস্থ্য কমপ্লেক্স এ চাকুরি নেওয়া লুবনা জাহান মীমের বিষয়ে জানতে চাইলে তিনি মুঠোফোনে বলেন,তার আগে বিয়ে হয়েছিলো এটা আমাকে জানায়নি আর আমিও জানতাম না। বিয়ের পর যখন জানতে পারলাম তার ইতিপূর্বে বিয়ে হয়েছে। এবং সেই ছেলে মামলাও করেছে তাই তাকে বলে দিয়েছি আপাতত তোমার সাথে আমার কোন সম্পর্ক নাই। আগে প্রথম স্বামীর ঝামেলা মিটিয়ে আসো তার পর দেখা যাবে। না হলে আমি তাকে ডিভোর্স দিবো। বর্তমানে তার সাথে আমার কোন যোগাযোগ নাই।তার কাছে যখন জানতে চাওয়া হলো তাহলে তো আপনিও প্রতারিত হয়েছেন তাহলে কেন আইনের আশ্রয় নিলেন না তিনি কোন উত্তর দেন নি। এ বিষয়ে ভূক্তভোগী সাঁথিয়া থানায় একটি অভিযোগ দায়ের করেন। অতঃপর সাঁথিয়া থানার আওতায় কাশিনাথপুর পুলিশ ফাঁড়িতে কর্মরত এ এস আই মোঃ সাগর আলী জানান, প্রতারণা করে বিয়ে এবং পরে তা অস্বীকার করে অর্থ সম্পদ নিয়ে যাওয়ার বিষয়ে লুবনা জাহান মীম এবং ২য় স্বামীর সাথে যোগাযোগ করা হলে তারা বিষয়টি নিয়ে কোন কথা বলেনি। এমতাবস্থায় বাদীকে বিজ্ঞ আদালতের শরণাপন্ন হওয়ার জন্য বলা পরামর্শ দেওয়া হয়েছে।

তবে এ বিষয়ে কোর্টে মামলাও করেছেন ভুক্তভোগী জাকারিয়া।বিষয়টি তদন্ত সাপেক্ষে প্রয়োজনীয় ব্যবস্থা নিবেন প্রশাসন।এব্যপারে রায়গঞ্জ উপজেলা স্বাস্থ্য কমপ্লেক্স এর স্বাস্থ্য ও পরিবার পরিকল্পনা কর্মকর্তা আমীমুল ইহসান তৌহিদ জানান,অভিযুক্ত ১লা জুন ২০২১ সালে চাকুরিতে যোগদান করেন।তবে যতদূর জানি চাকুরির ক্ষেত্রে তার অঙ্গিকার নামা বা নিতিমালায় অবিবাহিত লেখা ছিলো।এ বিষয়ে কোন লিখিত অভিযোগ পেলে উর্ধতন কর্মকর্তার সাথে কথা বলে তদন্ত সাপেক্ষে প্রয়োজনীয় ব্যবস্থা নেওয়ার বিধান থাকলে সেটা নেওয়া হবে।

নিউজটি শেয়ার করুন

Leave a Reply

Your email address will not be published.

এ জাতীয় আরো খবর..
এই পত্রিকার সকল সংবাদ, ছবি ও ভিডিও স্বত্ত্ব সংরক্ষিত © ২০২১ দৈনিক মাতৃজগত    
কারিগরি সহযোগিতায়ঃ Bangla Webs
banglawebs999991