সোমবার, ০৯ ডিসেম্বর ২০২৪, ০৬:২৬ পূর্বাহ্ন

রূপনগর বেড়িবাঁধে ২টি সিসা তৈরির কারখানা চলছে হুমকির মুখে প্রাকৃতিক পরিবেশ জীব ও বৈচিত্র

রিপোর্টারের নাম
  • আপডেট টাইম : শনিবার, ৪ মে, ২০২৪
  • ৬৪ বার পঠিত

 

নিজস্ব প্রতিবেদকঃ- রাজধানী ঢাকার মিরপুর শাহআলী মাজার হইতে আশুলিয়া যেতে হাতের ডানপাশে পানি উন্নয়ন বোর্ড ও রূপনগর থানাধীন গোড়াণ চটবাড়ী মুক্তিযোদ্ধা পুর্নবাসন সমিতি লিমিটেড এর বাম পাশে ব্লক তৈরির কারখানার মাঝে বেড়িবাঁধ এলাকায় ২ টি সীসা তৈরির কারখানা চলছে।
হুমকির মুখে প্রকৃতিক পরিবেশ জীব ও বৈচিত্র।

কারখানার দুষিত কালো ধোঁয়ায় এলাকাবাসীর জীবন অতিষ্ঠ হয়ে উঠেছে।

সরজমিনে গিয়ে দেখা যায় ২৬ থেকে ২৮ বছরের ২০/২৫ জন শ্রমিক কেউ ব্যাটারি থেকে প্লেট বের করছে, কেউ রাতে আগুন জ্বালিয়ে সিসা তৈরি করার জন্য চুলার পাশে প্লেট সাজাচ্ছে।

এই কারখানা একটির মালিক গাইবান্ধা জেলার সাঘাটা উপজেলার কামালের পাড়া ইউনিয়নের কিংকরপুর গ্রামের আবুল কালাম এর পুত্র মোঃ ওয়াজেদ আলী ও চাকুলী গ্রামের নজমুল ইসলাম এর পুত্র মোঃ শাকিল আহাম্মেদ রেজা এবং আরেকটি কারখানার মালিক একই উপজেলার চাকুলী গ্রামের মোঃ ফেরদৌস মীর এর পুত্র মোঃ মোনারুল ইসলাম।

নাম প্রকাশে অনিচ্ছুক এলাকাবাসী জানান প্রতিদিন রাত ৮:০০ হইতে ভোর ০৫:০০ ঘটিকা পর্যন্ত ব্যাটারীর প্লেট জ্বালিয়ে সিসা তৈরী করে।
তখন আগুনের শিখা ৪০/৫০ ফুট উপরে ওঠে।

এ ব্যাপারে এলাকার স্থানীয় জনৈক মো: জহিরুল ইসলাম ও প্রায় ৪০/৪৫ জন বিভিন্ন জেলা হইতে আগত ভাড়াটিয়া গার্মেন্টস ফ্যাক্টরির শ্রমিকেরা অভিযোগ করে বলেন প্রতিদিন রাত্রি ৮:০০ ঘটিকা হইতে ভোর ০৫:০০ ঘটিকা পর্যন্ত যখন চুল্লিতে কাঠ কয়লার আগুনে পুরাতন ব্যাটারি প্লেট জ্বালিয়ে সিসা তৈরি করে ,তখন আশেপাশের এলাকায় বাড়ির ভিতরে থাকা কষ্টসাধ্য হয় নিঃশ্বাস বন্ধ হওয়ার উপক্রম হয়।

এই কারখানার ধোঁয়ার ফলে আশেপাশে দুই তিন কিলোমিটার এলাকায় বাড়ির ভিতরে থাকা লোকজনের নাক মুখ চোখ জ্বালা করে ,এলাকার শিশু ও বৃদ্ধরা শ্বাসকষ্ট সহ বিভিন্ন রোগে প্রতিনিয়ত আক্রান্ত হচ্ছে।

কিন্তু এদের বিরুদ্ধে কেউ কখনো কোনো ব্যবস্থা নেয় না যারা আসে টাকা খেয়ে মনের সুখে গান গাইতে গাইতে চলে যায় ,আমরা এদের কাছে অসহায় কখনো জোর করে কাউকে কিছু বলতে পারি না প্রাণভয়ে কারণ এদের অনেক মাস্তান ভাড়াটিয়া সন্ত্রাসী বাহিনী আছে।
যারা বিভিন্ন ভয় দেখায়,আমরা বিভিন্ন জেলা হইতে এসে বাসা ভাড়া নিয়ে থাকি চাকরি করি বিধায় সবসময় এদের কাছে জিম্মি ও অসহায়।

কারখানা দুইটি কিছু নেতার ছত্রছায়ায় চলার কারনে বিভিন্ন মামলা হামলার ভয়ে কেউ মুখ খুলে কিছু বলার সাহস পাচ্ছেনা।

এলাকাবাসী জানান কারখানা দুটির দুষিত ধোঁয়া ও এসিড পানির জন্য আশেপাশের মাঠের ফসল গাছের ফল নদীর মাছের ব্যাপক ক্ষতি সাধন হচ্ছে।

এলাকাবাসী আরও জানান এই কারখানার আশপাশের জমি ও মাঠের ঘাস কেটে গবাদিপশুকেও খাওয়াতে পারছেনা পশুর মৃত্যুর ভয়ে।
তারা আরও বলেন এই কারখানার আশেপাশের মাঠের ঘাস খেলেই গরু মারা যাবে এই ধোঁয়া ও ছাই বাতাসে উড়িয়ে যতোদূর গিয়ে পড়বে সেই এলাকার ঘাস খেলেই গরু মারা যাবে নিশ্চিত।

এরই সুত্র ধরে গুগলে সার্চ দিয়ে বিভিন্ন পত্রিকা নিউজ ও টেলিভিশন নিউজে জানা যায়।

২০২৩ সালে ব্রাহ্মণবাড়িয়ার সদর উপজেলার দাড়িয়াপুর এলাকায় অবৈধভাবে গড়ে ওঠা সিসা তৈরির কারখানায় ৩ মাসে ২৫টি গরু মারা গেছে।
সুত্রঃ দৈনিক প্রথম আলো।

২০২৩ সালে কিশোরগঞ্জের তাড়াইলে সিসা তৈরির কারখানা কারনে ৭ গরুর মৃত্যু।
সুত্রঃ সময়ের কন্ঠস্বর

২০২৩ সালে সিসা কারখানার নির্গত বিষাক্ত বর্জ্য খালে হবিগঞ্জের মাধবপুরে পানি খেয়ে ১২ গরুর মৃত্যু।
সুত্রঃ দৈনিক যুগান্তর পত্রিকা।

২০২৩ সালে গোপালগঞ্জ জেলার কাশিয়ানী উপজেলার রাতইল সিসা তৈরি কারখানা এলাকার মাঠের ঘাস, লতা ও আঁখের পাতা খেয়ে ১২টি গরু মারা গেছে।
সুত্রঃ বাংলাভিশন টেলিভিশন।

২০২২ সালে ধামরাই সিসা তৈরি কারখানায় তিন মাসে ৮ গরুর মৃত্যু, অসুস্থ অর্ধশতাধিক।
সুত্রঃ দৈনিক জনবানী

২০২২ সালে নরসিংদীর বেলাবতে পাঁচ দিনে হাফিজ অ্যাগ্রো কমপ্লেক্স নামের একটি খামারে একে একে পাঁচটি গরুর মৃত্যুর ঘটনা ঘটেছে।
সুত্রঃ দৈনিক প্রথম আলো।

২০২২ সালে কিশোরগঞ্জের কটিয়াদীতে সিসা তৈরি কারখানার পাশে দুটি গ্রামে ৩০টি গরুর মৃত্যু।
সুত্রঃ আজকের পত্রিকা।

২০২৪ সালের মার্চ মাসে ঝিনাইদহের হরিণাকুন্ডু উপজেলার চারাতলা নামক স্থানে অবৈধ সীসা কারখানার বিষক্রিয়ায় ১২ টি গরুর মৃত্যু হয়েছে।
সুত্রঃ Rtv

গুগলে সার্চ দিয়ে জানাযায় দেশের বিভিন্ন এলাকায় এমন আরও শতাধিক কারখানার কারণে গরু মারা গেছে এমন তথ্য মেলে,আরও জানাযায় দেশের যে যে এলাকায় পুরাতন ব্যাটারী আগুনে জ্বালিয়ে সিসা তৈরির কারখানা করে সেই এলাকার মাঠের ধান নষ্ট, পুকুর ও বিলের মাছের নিধন হয়েছে।

কারখানার শ্রমিকদের গণমাধ্যম কর্মীরা জিগ্যেস করলে আপনারা এই কারখানায় কাজ করেন কিভাবে এরতো প্রচুর গন্ধ,আইন শৃঙ্খলা বাহিনী আপনাদের কিছু বলেনা?

শ্রমিকরা বলেন এতে আমাদের শরীরের প্রচুর ক্ষতি হয়,থানা পুলিশ তেমন কিছু বলেনা কিন্তু উপজেলা প্রশাসন বা এসিল্যান্ড, পরিবেশ অধিদপ্তরের লোকজনকে কেউ জানালে তারা ভ্রাম্যমাণ আদালতের মাধ্যমে বন্ধ করে দেয়।

কারখানা দুটির মালিক গাইবান্ধা জেলার ১।মোঃ মোনারুল ইসলাম ২।মোঃ ওয়াজেদ আলী ৩। শাকিল আহাম্মেদ রেজা এদের নিকট এই কারখানার পরিবেশ অধিদপ্তরের ছাড়পত্র আছেকিনা জানতে চাইলে গণমাধ্যম কর্মীদের বলেন, আমাদের কোনো কাগজপত্র নেই সবাইকে ম্যানেজ করেই কারখানা চালাতে হয়।

আপনারা নিউজ করলে করেন সমস্যা নাই আমরা সবাইকে ম্যানেজ করেই চলি,নিউজ করলে পরিবেশ অধিদপ্তরের লোক, এসিল্যান্ড এনারাইতো আসবে দেখা যাবে নিউজ করে কি করতে পারেন।

এলাকার সচেতন মহল অতি দ্রুত পুরাতন ব্যাটারি আগুনের জ্বালিয়ে সিসা তৈরির কারখানা দুইটি ভ্রাম্যমান আদালত পরিচালনা করে উচ্ছেদ করার জন্য ঢাকা বিভাগীয় কমিশনার ,ঢাকা বিভাগীয় পরিবেশ অধিদপ্তর ও সংশ্লিষ্ট থানা পুলিশের সুদৃষ্টি কামনা করেন।

নিউজটি শেয়ার করুন

Leave a Reply

Your email address will not be published.

এ জাতীয় আরো খবর..
এই পত্রিকার সকল সংবাদ, ছবি ও ভিডিও স্বত্ত্ব সংরক্ষিত © ২০২১ দৈনিক মাতৃজগত    
কারিগরি সহযোগিতায়ঃ Bangla Webs
banglawebs999991