রবিবার, ০৮ ডিসেম্বর ২০২৪, ০৬:৫৩ অপরাহ্ন

রোদে পুড়ি বৃষ্টিতে ভিজি, দোষ মোগো কপালের-কাঁদলেন মহিপুরে আশ্রয়ন কেন্দ্রের বাসিন্দারা

নীল রতন কুন্ডু নিলয়, কলাপাড়া(পটুয়াখালী)প্রতিনিধি :
  • আপডেট টাইম : মঙ্গলবার, ২৪ অক্টোবর, ২০২৩
  • ৮৪ বার পঠিত

রোদে পুড়ি বৃষ্টিতে ভিজি, দোষ মোগো কপালের-কাঁদলেন মহিপুরে আশ্রয়ন কেন্দ্রের বাসিন্দারা

নীল রতন কুন্ডু নিলয়, কলাপাড়া(পটুয়াখালী)প্রতিনিধি :

মহিপুরে লতাচাপলী ইউনিয়নের নয়ামিশ্রিপাড়া গ্রামে অবস্থিত ল²ীবাজার আশ্রয়ন কেন্দ্রে জরাজির্ণ ধ্বংসস্তুপের মধ্যে বাধ্য হয়ে বসবাস করছেন ভিটা-মাটিহীন অসহায় মানুষগুলো। প্রতিনিয়ত বৃষ্টিতে ভিজে, রোদে পুড়ে ভাগ্য বদলের ¯^প্ন দেখে এখানকার বাসিন্দারা। ২৫টি পরিবার নিয়তির নিকট ভাগ্য পরিবর্তনের ফরিয়াদ জানাচ্ছে প্রতিমুহূর্তে। কর্তাব্যক্তিদের নিকট একাধিকবার মেরামতের আবেদন করেও কোন সুফল মেলেনি। দীর্ঘ বছর মেরামতের উদ্যোগ না নেয়ায় বসবাসের অনুপযোগী হয়েছে ঘরগুলো।
তথ্য সূত্রে জানা যায়, ২০০৪-০৫ অর্থ বছরে নয়ামিশ্রিপাড়া গ্রামে ল²ীবাজার আশ্রয়ন কেন্দ্রটি নির্মাণ করা হয়। দুই সারিতে চারটি ব্যারাকে ৪০টি ঘর কক্ষ রয়েছে। আধাঁপাকা টিনসেট আশ্রয়ন কেন্দ্র নির্মাণে বাংলাদেশ নৌ-বাহিনীর একটি টিম কাজ করেন। নির্মাণ শেষে ঘরগুলো এলাকার অসহায় পরিবারকে বরাদ্দ দেয়া হয়। সেই থেকে এখনো ২৫টি পরিবার ঝুঁকি নিয়ে বসবাস করলেও ১৫টি পরিবার অন্যত্র চলে গেছে। অভাবের সাথে যুদ্ধ করতে করতে ক্লান্ত হয়ে উপকূলের বিভিন্ন স্থানে তারা বসতি স্থাপন করেছে। এখনও বসবাস করছে যারা, তাদের ভাষ্য যারা চলে গেছে, তারা ভাল আছে রবিবার সরেজমিনে ঘুরে দেখা গেছে, টিনের চালায় মরিচা ধরে সম্পূর্ণ নষ্ট হয়ে গেছে। বড় বড় অসংখ্য ছিদ্র হওয়ার কারণে মেরামত করতে পারছেন না বাসিন্দারা। যাদের সামর্থ আছে তারা ঘরের ভিতরে মোটা পলিথিন বিছিয়ে ছাপড়ার নিচে বাস করছেন। আর যাদের পলিথিন কেনার সামর্থ নেই, বৃষ্টিতে ভিজে, রোদে শুকাচ্ছেন। আশ্রয়ন প্রকল্পের ঘরগুলোর খুঁটি (পিলার) খসে পড়ছে। মাত্রাতিরিক্ত লবনাক্ততার কাররে লোহার এ্যাঙ্গেলগুলো নাজুক হয়ে পরেছে। ঘরগুলো ভেঙ্গে না পরলেও যে কোন মুহূর্তে বড় ধরণের দূর্ঘটনার আশংকা করেছেন এখানকার বাসিনন্দারা। প্রত্যেকটি ঘরের দরজা, জানালা, বেড়া ভেঙ্গে গেছে। পাটের চট ও পলিথিন দিয়ে কোনমতে চলছে বসবাস। বৃষ্টি হলেই ঘরে থাকা চাল, ডাল, শুকনো খাবারসহ কাপড়-চোপড় ভিজে যাচ্ছে। এক কথায় অভিভাবকহীন আশ্রয়ন কেন্দ্র বসবাসকারীরা মানবেতর জীবন যাপন করছে।
এসময় কথা হয় রাশেদা বেগম, ফাতেমা খাতুন, মনিরা বেগম, ছকিনা বেগম, আলেয়া বিবি, খাদিজা বেগমসহ অনেকের সাথে। তারা বলেন, মোরা দিন আনি দিন খাই। রোদে পুড়ি বৃষ্টিতে ভিজি। সরকার মোগো আশ্রয়ন কেন্দ্রে আশ্রয় দিয়ে আর খোঁজ খবর নেয় না। ভাগ্যে যা আছিল তা অইতে আছে। কারো প্রতি কোন রাগ নাই, কারো দোষ নাই, দোষ মোগো কপালের।’
আশয়ন কেন্দ্রের সভাপতি মো. মানিক মিয়া অভিযোগ করে বলেন, এখানে বসবাসরত মানুষের দু:খ দুর্দশার চিত্র তুলে ধরে একাধিকবার উপজেলা নির্বাহী কর্মকর্তা বরাবরে আবেদন করলেও কোন সুফল আসেনি। শুধু আবেদনের প্রেক্ষিতে দুবার মহিপুর ইউনিয়ন ভূমি অফিসের সহকারী কর্মকর্তা (তহসিলদার) পরিদর্শন করেছেন। কিন্তু কাজের কাজ কিছুই হচ্ছে না। গত কয়েক বছর যাবৎ আর কোন আবেদন করি নাই। তিনি আরও জানান, লতাচাপলী ইউনিয়ন পরিষদের চেয়ারম্যান, ক্ষমতাসীন দলের নেতারা বার বার পরিদর্শন করেছেন। পরিদর্শন পর্যন্তই তাদের উদ্যোগ ইতি টানে, আলোর মুখ দেখে না।
এ প্রসঙ্গে কলাপাড়া উপজেলা নির্বাহী কর্মকর্তা মো. জাহাঙ্গীর হোসেন বলেন, আমি এখানে আসার পর বিষয়টি কেউ আমাকে অবহিত করেননি। আমি দ্রুত সময়ের মধ্যে সরেজমিনে পরিদর্শন করবো। আশ্রায়ন প্রকল্পে বসবাসকারীদের মজিববর্ষের ঘরে পুনবাসনের উদ্যোগ গ্রহণ করা হবে।

নিউজটি শেয়ার করুন

Leave a Reply

Your email address will not be published.

এ জাতীয় আরো খবর..
এই পত্রিকার সকল সংবাদ, ছবি ও ভিডিও স্বত্ত্ব সংরক্ষিত © ২০২১ দৈনিক মাতৃজগত    
কারিগরি সহযোগিতায়ঃ Bangla Webs
banglawebs999991