শাহ মোঃ আব্দুল মোমেন,রৌমারী (কুড়িগ্রাম)প্রতিনিধি: কুড়িগ্রাম জেলার রৌমারী উপজেলা হতে বকশীগঞ্জ পর্যন্ত প্রধান সড়কের বেহাল অবস্থা । চার বছর অতিক্রম করলেও শেষ হয়নি এই সড়কের সংস্কার কাজ । রাস্তাটির খারাপ অবস্থার কারণে বিশেষ করে টাঙ্গাইল, শেরপুর, জামালপুর, ময়মনসিংহ এবং ঢাকায় যাতায়াত করা জনসাধারণের সীমাহীন ভোগান্তির শিকার হচ্ছে । রাস্তায় যাতায়াতের জন্য অযোগ্য হয়ে পড়েছে । মাঝে মধ্যে ঘটেছে অনেক দুর্ঘটনা । ঢাকাগামী এই প্রধান সড়কের দেওয়ানগঞ্জ সীমান্ত থেকে কর্তিমারি পর্যন্ত প্রায় ৯ কিলোমিটার রাস্তায় বড় বড় খানাখন্দের সৃষ্টি হয়েছে । চার বছরের অধিক সময় আগে রাস্তা প্রস্তুতকরণ এবং সংস্কার কাজ শুরু হলেও ঠিকাদারি প্রতিষ্ঠানের গাফিলতিতে ও কাজের ধীরগতির কারণে দুর্ভোগে পড়েছে কয়েক লক্ষাধিক মানুষ । উন্নয়নকাজের যন্ত্রপাতি, মালামাল ও খোঁড়া মাটি রাস্তার পাশে ফেলে প্রতিবন্ধকতা তৈরি হয়েছে ।
সরেজমিনে গিয়ে দেখা যায়, সড়কের বিভিন্ন স্থানের দুই ধারের মাটি সরে গিয়ে রাস্তা ভেঙে বড় গর্ত সৃষ্টি হয়েছে । গতকাল শনিবার রাতে গর্তে রৌমারী থেকে ঢাকাগামী একটি পরিবহনের চাকা আটকে গিয়ে রাস্তা বন্ধ হয়ে যায়। ট্রাক, বাস, পিকআপ, ব্যাটারিচালিত অটোরিকশা, ভ্যানগাড়ি,মোটরসাইকেলসহ শত শত যানবাহনের লম্বা সারিতে যানজটের সৃষ্টি হয়। এ ছাড়া প্রতিনিয়ত মানুষকে দুর্ভোগ পোহাতে হচ্ছে। সামান্য বৃষ্টিতেই রাস্তাগুলো ডুবে কাদার সৃষ্টি হয় ।
ভাঙাচোরা এবং অপ্রশস্ত মহাসড়কের কারণে প্রতিনিয়ত দীর্ঘ সময়ে যানজটের কবলে পড়তে হয়। প্রচন্ড ধুলাবালির দ্বারা আক্রান্ত হয় ফুসফুস আর মাত্রাধিক ঝাঁকুনির ফলে কর্মস্পৃহা হারিয়ে ফেলে যাত্রীরা, বাস,ট্রাকসহ বিভিন্ন যানবাহনের মালিকগণ ঘনঘন গাড়ী নষ্ট হওয়া, চাকা ফেটে যাওয়ার কারণে আর্থিক ভাবে ক্ষতিগ্রস্ত হচ্ছেন।
রৌমারী মোটর শ্রমিক ইউনিয়নের সভাপতি আ:মতিন বলেন, রাস্তাটি দীর্ঘ সময় যাবৎ সংস্কার কাজের ধীর গতির কারণে ভোগান্তিতে পড়েছে জনসাধারণ। সরকারের কাছে আকুল আবেদন,দ্রুত সময়ের মধ্যে রাস্তাটি সংস্কার করে যাতায়াতের যেন উপযোগী করা হয়।
স্থানীয় ভুক্তভোগী নাজমুল আলম খোকন বলেন, এই রাস্তার খারাপ হওয়ার কারণে আমাদের যাতায়াতের সমস্যা হচ্ছে । একদিকে অসনীয় যানজটে সৃষ্টি হচ্ছে আর প্রতিনিয়ত হচ্ছে সড়ক দুর্ঘটনা। গত ১০ অক্টোবর রৌমারী থেকে রাজিবপুর যাওয়ার পথে অটোগাড়ী উল্টে আমার ডান হাত ভেঙ্গে গেছে।
রৌমারী উপজেলা বাস মালিক সমিতির সভাপতি সেলিম মিয়া অভিযোগ করে বলেন, ২০১৮সালে সাড়ে ৩১কিলোমিটার সড়ক সংস্কার ও সম্প্রসারণের জন্য সরকার ৩৩২কোটি ১০লাখ টাকা বরাদ্দ দিলেও জনগণ এখনো এর কোনো সুফল পাচ্ছে না।
এবিষয়ে জানতে চাইলে সওজ বিভাগের, কুড়িগ্রাম জেলার নির্বাহী প্রকৌশলী মোঃ নজরুল ইসলাম সাংবাদিকদের বলেন, মাত্রাধিক বর্ষণের কারণে রাস্তার কাজ করার সমস্যা বলে ঠিকাদার প্রতিষ্ঠান সাময়িক ভাবে স্থগিত করে রেখেছেন। তবে আমি আশা করছি, খুব দ্রুত সময়ের মধ্যে রাস্তার সংস্করণের কাজ শুরু করা হবে।
রৌমারী উপজেলা নির্বাহী কর্মকর্তা পূবন আখতার বলেন, ‘ঠিকাদারি প্রতিষ্ঠানের উদাসীনতার কারণে রাস্তার কাজ বন্ধ রয়েছে। বিষয়টি নিয়ে কুড়িগ্রাম জেলা মাসিক সমন্বয় সভায় আমি ডিসি মহোদয়কে অনুরোধ করছি, যাতে দ্রুত সময়ের মধ্যে রাস্তাটি সংস্কার করা হয়।
কাজের ধীরগতি সম্পর্কে ঠিকাদারি প্রতিষ্ঠান মীরহাবিবুর কন্সট্রাকশনের
সাথে যোগাযোগ করা হলে মোবাইল নম্বর বন্ধ পাওয়া যায়।