ক্যাপ্টেন হিরাম কক্স যদি আজ পৃথিবীর বুকে বেচে থাকতো। তাহলে সত্যিই আজ আত্মহত্যা করতো কারণ তার সপ্নের পর্যটন নগরী কক্সবাজার এখন পতিতা, ছিনতাইকারী এবং মাদককারবারিদের অভায়ারণ্যে পরিণত। সমুদ্র শহর কক্সবাজারের অনেক রূপ। লিংকরোড অথবা বাস টার্মিনালে চোখে পড়বে দূরপাল্লায় যাওয়ার জন্য অপেক্ষমান যাত্রীদের।
লাল দিঘি পাড়ে হকারের হাঁক-ডাক আর হোটেল জোনের গলি গুলোর প্রাণচঞ্চল চিত্র। সুগন্ধ্যা-
কলাতলীতে পর্যটকে মুখর। কর্মব্যস্ত কক্সবাজার। তবে বেশিরভাগ স্থান দিনের আলোই স্বাভাবিক মনে হলেও রাতের চিত্র একেবারে ভিন্ন। রাতে চলতি পথে সড়কে লাল-নীলসহ হরেক রঙের বর্ণিল আলোকসজ্জার মোহনীয় দৃশ্য নতুন অবয়বে উপস্থাপন করে পর্যটন শহরকে।
লিংকরোড, বাসটার্মিনাল , কলাতলী মোড়, সুগন্ধ্যা, জিয়া গেস্ট মোড়, সাংস্কৃতিক কেন্দ্র মোড়, গোল চত্বর, হলিডে মোড়সহ কক্সবাজারের প্রায় সব পথেই এখন রঙিন আলোর ছড়াছড়ি। কিন্তু রাতের নীরবতায় সমুদ্র শহরে সবাই ঘুমায় না। কেউ যখন দিনের কর্মব্যস্ততা শেষে বিছানায় গাঁ এলিয়ে দেয় অন্য কেউ তখন ব্যস্ত হয়ে পড়ে নিজের ভিন্ন জগতে।
এদের কারোটা বৈধ আবার কারোটা অবৈধ। রাতের পর্যটন শহরে বৈধ কাজ যারা করেন তাদের বেশিরভাগই শহরের বিভিন্ন এলাকার শ্রমিক বা মজুর। কেউ আবার জীবিকার দায়ে বের হন রিকশা-সিএনজি বা অন্য কোনো বাহনকে সম্বল করে। রাতে অবৈধ কাজেরই দৌরাত্ম্য বেশি। সন্ধ্যার পর থেকেই চলে এ দলের প্রস্তুতি। সংখ্যায় কম হলেও অন্ধকার বাড়ার সাথে সাথে এদের তৎপরতা বাড়ে।
এ দলে রয়েছে পতিতা, ছিনতাইকারী এবং মাদকারবারীরা। স্থান ও সময় ভেদে এদের রূপ পরিবর্তন হয়। বদলে যায় অপরাধের ধরন ও কৌশল। সমুদ্র শহরে কয়েক ধরনের পতিতা রয়েছে। এদের মধ্যে জায়গা ও স্থান ভেদে রয়েছে পরিবর্তন ছিনতাইকারীদের হিসাবও অনেকটা একই রকম। সমাজে অবস্থানগত দিক থেকে কক্সবাজারে দুই ধরনের পতিতা রয়েছে। একদল অবস্থান নেয় বিভিন্ন বাসা-বাড়ি বা আবাসিক হোটেলে। আরেক দল ভ্রাম্যমাণ অর্থাৎ পথে-ঘাটে।
যারা ভ্রাম্যমাণ তারা শুধুমাত্র পতিতাবৃত্তির ওপর নির্ভরশীল। সমাজের ভেতরে এদের তেমন আনাগোনা নেই। এরা থাকে রাস্তার পাশে বা কোনো নিন্মমানের জায়গায়। সাধারণত শহরের বিভিন্ন রাস্তা, অলিগলি, সমুদ্রের বালিয়াড়িসহ নানা জায়গায় দাঁড়িয়ে খদ্দের সংগ্রহ করে। খদ্দের সংগ্রহ করার পর একটু অন্ধকারে গিয়ে অনেকটা জনসম্মুখেই বা অন্যান্য খদ্দেরদের সামনেই তারা খদ্দেরের মনোরঞ্জন করে।
এসব বিষয়ে জানতে চাইলে, পর্যটন সেলের নির্বাহী ম্যাজিস্ট্রেট মাসুম বিল্লাহ বলেন। বিষয়টি আমাদের নজরে এসেছে এবং যে-সব পতিতারা সন্ধ্যার পর বালিয়াড়িতে থাকে। তাদের ইতিমধ্যে আমরা বেশ কয়েকবার মৌখিক ভাবে সরে যাওয়ার জন্য বলেছি।
এদের অনেকেরই আগমন বিভিন্ন পতিতালয় থেকে। কেউ কেউ আবার আসে শহরের বিভিন্ন স্হান থেকে ও গ্রামের মেয়েরা যাদের চেহারা বা শরীর স্বাস্থ্য পুরোপুরি বা অনেকটাই নষ্ট হয়ে গিয়েছে অন্য কোনো কাজ করতে সক্ষম নয় তারা এসে ভিড় জমায় শহরের বিভিন্ন জায়গায়। এ ধরনের পতিতার বেশি আনাগোনা লক্ষ্য করা যায় রাত ১০-১১টা বাজতেই লিংকরোড, বাসটার্মিনাল , সৈকতের সুগন্ধ্যা পয়েন্ট, সাংস্কৃতিক কেন্দ্র মোড়, কলাতলী মোড়, হলিডে মোড়, লালদিঘি ও আদালত চত্বর। পতিতা ও ছিনতাইকারীর বিষয়ে জানতে চাইলে, কক্সবাজার সদর মডেল থানার অফিসার্স ইনচার্জ মনিরুল গিয়াস বলেন। পর্যটন নগরীতে কেযে পতিতা আর কেযে ছিনতাইকারী তা চিহ্নিত করা বেশ জটিল ব্যাপার, ছিনতাইকারী সনাক্ত করতে পারলেই আমরা তাদের প্রতিনিয়তো আইনের আওতায় নিয়ে আসি এবং আমাদের এই অভিযান অব্যাহত থাকবে।