কে এম নাছির উদ্দিন সিনিয়র ক্রাইম রিপোর্টারঃ
সিরাজগঞ্জের শাহজাদপুর উপজেলার কৈজুরি ইউনিয়নের চর কৈজুরি গ্রামে অবস্থিত কৈজুরি স্কুল এন্ড কলেজের অধ্যক্ষ এ্যাডভোকেট আব্দুল খালেককে মারপিট করে গুরুতর আহত করার প্রতিবাদ রবিবার সকাল ১১টার দিকে শিক্ষার্থীরা মানববন্ধন, বিক্ষোভ মিছিল,প্রতিবাদ সমাবেশ ও সড়ক অবরোধ কর্মসূচি পালন করে। কৈজুরি স্কুল এন্ড কলেজের শিক্ষক-শিক্ষার্থীবৃন্দ এ কর্মসূচির আয়োজন করে। কৈজুরি স্কুল এন্ড কলেজের সামনে শাহজাদপুর-কৈজুরি সড়কে আধাঘন্টা ব্যাপী মানববন্ধন অনুষ্ঠিত হয়। এ মানববন্ধন চলাকালে কৈজুরি স্কুল এন্ড কলেজের ম্যানিজিং কমিটির সভাপতি ও শাহজাদপুর উপজেলা আওয়ামীলীগের সহ সভাপতি সাইফুল ইসলামের সভাপতিত্বে এক প্রতিবাদ সমাবেশ অনুষ্ঠিত হয়। এ প্রতিবাদ সমাবেশে বক্তব্য রাখেন, কৈজুরি স্কুল এন্ড কলেজের সহকারী প্রধান শিক্ষক আব্দুল মতিন,সহকারী শিক্ষক অসীত ঘোষ,জয়নাল আবেদীন,আব্দুল কুদ্দুস,আব্দুল গফুর,শহিদুল ইসলাম,আব্বাস আলী,শিক্ষার্থী সাকিব হাসান,খাদিজা খাতুন,জাহাঙ্গীর হোসেন,সুমন কবির প্রমুখ। বক্তারা বলেন, কৈজুরি স্কুল এন্ড কলেজের অধ্যক্ষ আব্দুল খালেকের উপর সন্ত্রাসী হামলার ঘটনা অত্যন্ত দুঃখজনক ও মর্মান্তিক। আমরা এর তীব্র নিন্দা ও প্রতিবাদ জানাই। সেই সাথে এ ঘটনার সাথে জড়িতদের অবিলম্বে গ্রেপ্তার করে দৃষ্টান্তমূলক শাস্তির জোর দাবী করছি। সভাপতির বক্তব্যে কৈজুরি স্কুল এন্ড কলেজের ম্যানিজিং কমিটির সভাপতি সাইফুল ইসলাম বলেন,এ হামলার জন্য কৈজুরি ইউনিয়নের চেয়ারম্যান বীর মুক্তিযোদ্ধা মোয়াজ্জেম হোসেন খোকন মাস্টার দায়ী। তিনি নির্বাচিত হওয়ার পর কৈজুরি ইউনিয়নের প্রতিটি অঞ্চলে সন্ত্রাসের রাজত্ব কায়েম করেছেন। গত ৫ মাসে তার নের্তৃত্বে নিরিহ মানুষের উপর হামলা, মারপিট, চাঁদাবাজীসহ নানা অপকর্ম চলছে। তাদের হাত থেকে শিক্ষক থেকে শুরু করে কেউ রেহাই পাচ্ছে না। তাই অবিলম্বে কৈজুরি ইউনিয়নের চেয়ারম্যান বীর মুক্তিযোদ্ধা মোয়াজ্জেম হোসেন খোকন মাস্টারকে গ্রেপ্তার করে দৃষ্টান্তমূলক শাস্তি দাবী করছি। সমাবেশ শেষে শিক্ষার্থীরা এ হামলার প্রতিবাদে মিক্ষোভ মিছিল ও শাহজাদপুর-কৈজুরি সড়ক অবরোধ করে বিভিন্ন স্লোগান দেয়। এ সময় সড়কের দু‘পাশে শত শত যানবহণ আটকা পরে তীব্র যানজটের সৃষ্টি হয়। পরে শিক্ষক ও ম্যানেজিং কমিটির সদস্যদের অনুরোধে তারা অবরোধ তুলে নেয়।
উল্লেখ্য,গত শুক্রবার দুপুরে কৈজুরি স্কুল এন্ড কলেজের অধ্যক্ষ এ্যাডভোকেট আব্দুল খালেক ও তার চাচাতো ভাই নুরুজ্জামান মোটরসাইকেল যোগে কৈজুরি বাজার থেকে বাড়ি ফেরার সময় গোপালপুর মোড়ে সন্ত্রাসীরা হামলা চালিয়ে তাদের বেধরক মারপিট করে গুরুতর আহত করে। এ ঘটনায় অধ্যক্ষ খালেকের ছেলে মোঃ সাজ্জাদ হাসান লিংকন বাদী হয়ে ১৭ জনকে আসামী করে শাহজাদপুর থানায় একটি মামলা দায়ের করে।
এ বিষয়ে কৈজুরি ইউনিয়নের চেয়ারম্যান চেয়ারম্যান বীর মুক্তিযোদ্ধা মোয়াজ্জেম হোসেন খোকন মাস্টার সকল অভিযোগ অস্বীকার করে বলেন,হামলাকারীরা আমার দলের কেউ না। এছাড়া আমি বা আমার কোন লোক কোন প্রকার চাঁদাবাজি,হামলা ও মারপিটের সাথে জড়িত না। সাইফুল ইসলাম গত নির্বাচনে আমার সাথে প্রতিদ্বন্দ্বিতা করে হেরে গিয়ে প্রতিহিংসা বসত আমার বিরুদ্ধে মিথ্যা অভিযোগ করছে। তিনি আরও বলেন,অধ্যক্ষ আব্দুল খালেক ও তার চাচাতো ভাই নুরুজ্জামানের উপর হামলার ঘটনা অত্যন্ত দুঃখজনক। আমি এর নিন্দা ও সুষ্ঠ্যু বিচার দাবী করছি।
এ বিষয়ে শাহজাদপুর থানার ইন্সপেক্টর (অপারেশন) আব্দুল মজিদ বলেন, এ্যাডভোকেট আব্দুল খালেকের উপর হামলার ঘটনায় তার ছেলে সাজ্জাদ হাসান লিংকন বাদী হয়ে ১৭ জনের নাম উল্লেখসহ অজ্ঞাত আরও ২০/২৫ জনকে আসামী করে একটি মামলা দায়ের করেছেন। এ ঘটনার সাথে জড়িত সন্দেহে একজনকে গ্রেপ্তার করা হয়েছে। বাকিদের গ্রেপ্তারের চেষ্টা চলছে।