কে এম নাছির উদ্দীন সিনিয়র ক্রাইম রিপোর্টার:
সিরাজগঞ্জের শাহজাদপুরে প্রশাসনের নিষেধাজ্ঞার পরেও রবীন্দ্র কাছারি বাড়ির সামনে বহুতল ভবনের নির্মাণ কাজ চলমান রাখায় কবিগুরু রবীন্দ্রনাথ ঠাকুরের কাছারি বাড়িটির সৌন্দর্য নষ্ট হওয়ার উপক্রম হয়ে পরেছে। নিয়মনীতির তোয়াক্কা না করে রবীন্দ্র কাছারি বাড়ির নিকটে নির্মিত বহুতল ভবন ভেঙে ফেলার জোর দাবি জানিয়েছে। রবীন্দ্র প্রেমিরা ও দর্শনার্থীরা সহ সুশীল সমাজ।
প্রশাসনের নির্দেশের পর সাময়িক বন্ধ রাখলেও আবার কাজ সম্পন্ন করার পায়তারা করছে বলে বিভিন্ন সুত্র থেকে জানাগেছে। জানাগেছে, রবীন্দ্র কাছারি বাড়ির সন্মুখের এ ভবনটির ২য় তলা থেকে ৫ম তলা পর্যন্ত নির্মাণ কাজ দীর্ঘদিন বন্ধ থাকার পর সুতা ব্যাবসায়ী নেতা হাজী রমজান ও মনোয়ার হোসেন এবং হাজী সিরাজুল ইসলাম এর নেতৃত্বে হঠাৎ পুনরায় কাজ শুরু করায় দেখা দেয় দ্বিধাদন্দ্ব।
হতাশ হয় রবীন্দ্র প্রেমিরা ও দর্শনার্থীরা, শুধু তাই নয়, কাছারি বাড়ির কাষ্টোডিয়ান এই বহুতল ভবন নির্মাণের বিরুদ্ধে ব্যাবস্থা গ্রহণের পক্রিয়া করায় এই প্রভাবশালী মহল রবীন্দ্র কাছারি বাড়ির কাষ্টোডিয়ান আবু সাঈদ ইনাম তানভিরকে এখান থেকে বদলী করার পায়তারা করছে বলে শোনা যাচ্ছে।
প্রশাসনের পক্ষ থেকে বার বার নিষেধ করার পরেও নির্মাণ কাজ চলমান রাখে এরা। এতে কবিগুরুর স্মৃতি বিজরিত এ কাছারি বাড়ির সৌন্দর্য বর্ধন নষ্ট হওয়ার উপক্রম হয়ে পরে। ইতিমধ্যে উপজেলা নির্বাহী কর্মকর্তা মোঃ কামরুজ্জামান ভবনে উপস্থিত হয়ে কাজ বন্ধ রাখার নির্দেশ দিয়েছে।
বর্তমানে বন্ধ থাকলেও পুনরায় বাকি কাজ সম্পন্ন করার পায়তারা করছে বলে বিভিন্ন সুত্র থেকে জানাগেছে। প্রাচীন ঐতিহ্য ও কবিগুরু রবীন্দ্রনাথ ঠাকুরের স্মৃতি বিজরিত কাছারি বাড়ির সৌন্দর্য রক্ষায় সামনের এ ভবনটি দ্রুত অপসারণ করে এখানে দর্শনার্থীদের জন্য গাড়ী পার্কিংয়ের ব্যাবস্থা করার দাবি জানিয়েছে সচেতন মহল।
সেইসাথে রাতের আধারে কাজ সম্পন্ন করার নির্দেশদাতাদের দ্রুত আইনের আওতায় আনার জোর দাবি জানিয়েছে সচেতন মহল। এবিষয়ে রবীন্দ্র কাছারি বাড়ির কাষ্টোডিয়ান মোঃ আবু সাঈদ ইনাম তানভির বলেন, এ ভবনটির নির্মান কাজ চলমান থাকায় এটি অপসারণের ব্যাবস্থা গ্রহণের জন্য ঊর্ধ্বতন কর্তৃপক্ষকে অবগত করা হয়েছে।
এব্যাপারে, উপজেলা নির্বাহী কর্মকর্তা মোঃ কামরুজ্জামান বলেন, ভবনের নির্মাণ কাজ চলমান থাকার খবর পেয়ে উক্ত ভবনে গিয়ে নির্মাণ কাজ বন্ধের নির্দেশ দিয়েছি। এর পরেও যদি কাজ চলমান রাখে, সেক্ষেত্রে আইনানুগ ব্যবস্থা গ্রহণ করা হবে।
উল্লেখ্য, রবীন্দ্রনাথ ঠাকুরের স্মৃতি বিজরিত রবীন্দ্র কাছারি বাড়িটি পত্নতত্ব অধিদপ্তরের আওতায় রয়েছে।
কাছারি বাড়িটির সৌন্দর্য যেন নষ্ট না হয় সেজন্য কাছারি বাড়ির আশপাশে বহুতল ভবন নির্মাণে বিধিনিষেধ রয়েছে।
এ বিষয়ে, সুতা মার্কেটের সভাপতি হাজী সিরাজুল ইসলামের কাছে মুঠোফোনে জানতে চাওয়া হলে তিনি বলেন, ভাঙ্গার ব্যাপারে আদালতের কোন নির্দেশনা নেই আবার গড়ার ব্যাপারেও কোন নিষেধাজ্ঞা নেই। ইউএনও কামরুজ্জামান ভবনে গিয়েছিলেন কিন্তু উনি নিষেধাজ্ঞার কোন লিখিত নোটিশ দেননি। ওনার কাছে লিখিত নোটিশ চাইলেও উনি দেননি।
সরকার যদি এটা অধিগ্রহণ করে তাহলে আমাদের কোন আপত্তি নেই। প্রয়োজন হলে আমরা কাগজপত্র নিয়ে আদালতে যাবো।
এসব বিধিনিষেধের তোয়াক্কা না করে ভবনটিতে পুনরায় নির্মাণ কাজ চালুর
পায়তারা করছে ভবন মালিকেরা। এটাকে কেন্দ্র করে শাহজাদপুরে রবীন্দ্র প্রেমিদের ও
দর্শনার্থীদের মধ্যে ক্ষোভের সৃষ্টি হয়েছে। এ ভবনটি অপসারণের দাবি জানিয়েছে রবীন্দ্র প্রেমিরা ও দর্শনার্থীরা। কেউ কেউ দাবি তুলছেন ভবনটি ভেঙে দর্শনার্থীদের গাড়ী পার্কিংয়ের ব্যাবস্থা করা হোক।