বুধবার, ১৫ জানুয়ারী ২০২৫, ১০:৩৯ অপরাহ্ন

শাহজাদপুরে বিস্তির্ণ মাঠে সরিষার হলুদ ফুলে দুলছে কৃষকের স্বপ্ন

রিপোর্টারের নাম
  • আপডেট টাইম : শনিবার, ২৮ ডিসেম্বর, ২০২৪
  • ১৯ বার পঠিত

 

কে এম নাছির উদ্দীন সিনিয়র ক্রাইম রিপোর্টার:
সিরাজগঞ্জের শাহজাদপুর উপজেলার বিস্তির্ণ মাঠে সরিষার হলুদ ফুলে দুলছে কৃষকের স্বপ্ন। পৌষের হিমেল বাতাসে দোল খাচ্ছে হলুদ সরিষার ফুল। প্রকৃতি সেজেছে হলুদ সমারোহে, মৌমাছি, প্রজাপতির অবিরাম খেলায় গ্রামীণ জনপদকে আরো মনমুগ্ধ করেছে। শীতের এই শিশির ভেজা সকালে সরিষার সবুজ গাছের হলুদ ফুলগুলো সোনা ঝরা রোদে যেন ঝিকিমিকি করছে। মাঠ জুড়ে সরিষা ফুলে হলুদ রঙের অপরূপ দৃশ্য।
আমন ও বোরো মৌসুমের মাঝামাঝি সময়ে জমি ফেলে না রেখে দুই ফসলি জমিকে তিন বা চার ফসলি করে তুলতে ও সরিষার বাজার মূল্য ভালো থাকায় সরিষা চাষাবাদে ব্যাপক আগ্রহ বেড়ে গেছে এ উপজেলার সরিষা চাষিদের। চাষের সময় ও খরচ দুটোই কম হওয়ায় কৃষকের কাছে বেশ জনপ্রিয় সরিষা চাষ। গত কয়েক বছরে নতুন নতুন জাত উদ্ভাবনের ফলে এ শস্যটির ফলনও আগের চেয়ে বেড়েছে। এ কারণে উপজেলার বিভিন্ন স্থানে দিনে দিনে বাড়ছে সরিষার চাষ।প্রচলিত দেশি সরিষার চেয়ে বারি, টরি ও বিনার উদ্ভাবিত সরিষার জাতগুলোর ফলন বেশি। প্রতি বিঘায় ৫/৬ মন সরিষা হয়ে থাকে। এ কারণে চাষিরাও আগ্রহী হচ্ছেন সরিষা চাষে। অনেকেই আমন ধান সংগ্রহের পর জমি ফেলে না রেখে সরিষা চাষ করছেন। ভোজ্যতেলের আমদানির্ভরতা কমাতে সরিষাকে বিকল্প হিসেবে দেখছে সরকার। এজন্য ফসলটি উৎপাদন বাড়াতে নেয়া হয়েছে বড় প্রকল্প। ফসলের শ্রেণীবিন্যাসে পরিবর্তন এনে গতিশীল করা হচ্ছে সরিষার চাষ। এ বছর উপজেলার ১৩ টি ইউনিয়ন ও ১ টি পৌরসভায় চাষকৃত সোনালি-৭৫ জাতের ১ হাজার ৯৫০ হেক্টর, বারি-৯ জাতের ১৩৫ হেক্টর, বারি-১৪ জাতের ৮ হাজার ৭২৫ হেক্টর, বারি-১৭ জাতের ১ হাজার ৬৬০, বারি-১৮ জাতের ১১৫ হেক্টর, বিনা-৯ জাতের ২০ হেক্টর, বিনা-১১ জাতের ১০ হেক্টর, টরি-৭ জাতের ২ হাজার ৬৪০, রাই-৫ জাতের ৭৩৫ হেক্টর, বিএডিসি-১ জাতের ১০ হেক্টর। মোট চাষকৃত ১৬ হাজার হেক্টর জমিতে সরিষার চাষ হচ্ছে। স্থানীয় কৃষক মো. রওশন আলী খান জানান- অনেক বছর ধরেই সরিষা চাষাবাদ করে আসছি। এ বছরও সাড়ে ৫ বিঘা জমিতে সরিষা চাষাবাদ করছি। এবারে আবহাওয়া অনুক‚লে থাকায় ও সরিষাতে পোকামাকড়ের তেমন আক্রমণ না থাকায় ভালো ফলন পাওয়া যাবে বলে আশা করেন তিনি। উপজেলা উপ-সহকারি কৃষি কর্মকর্তা হোসনেয়ারা বিলকিস জানান- গত বছরের তুলনায় এ বছর আমার বøকে আগাম সরিষা আবাদ বেশি হয়েছে। এসব জমিতে সরিষার ফুল ফুটেছে আরো ২ সপ্তাহ আগেই। ফলন বৃদ্ধি ও রোগবালাই দমনে কৃষকদের নিয়মিত পরামর্শ দেওয়া হচ্ছে। শাহজাদপুর উপজেলা কৃষি কর্মকর্তা কৃষিবিদ জেরিন আহমেদ বলেন- বোরো ধান রোপণের আগে সরিষা একটি বাড়তি অর্থকরি ফসল। চাষের সময় ও খরচ দুটোই কম হওয়ায় কৃষকের কাছে বেশ জনপ্রিয় সরিষা চাষ। আমাদের দেশে ভোজ্যতেলের বড় একটি অংশ আমদানি করা হয়। এই আমদানি নির্ভরতা কমিয়ে আনতে ও সরিষা চাষে উদ্ভুদ্ধ করতে কৃষকদের বিনামূল্যে ১০ হাজার ২০০ জন কৃষককে ১ কেজি করে সরিষা বীজ, ১০ কেজি ডিএপি সার ও ১০ কেজি এম ও পি সার বিতরণ করা হয়েছে। সরিষার ভালো ফলনের জন্য কৃষকদেরকে প্রতিনিয়ত সবধরনের পরামর্শ প্রদান করা হচ্ছে। আশা করি, কৃষি অফিসের পক্ষ থেকে এই ধারাবাহিকতা অব্যাহত থাকবে।

নিউজটি শেয়ার করুন

Leave a Reply

Your email address will not be published.

এ জাতীয় আরো খবর..
এই পত্রিকার সকল সংবাদ, ছবি ও ভিডিও স্বত্ত্ব সংরক্ষিত © ২০২১ দৈনিক মাতৃজগত    
কারিগরি সহযোগিতায়ঃ Bangla Webs
banglawebs999991