স্টাফ রিপোর্টারঃ
গাজীপুরের শ্রীপুর পৌর এলাকার গড়গড়িয়া মাস্টার বাড়ি কেওয়া চালা নামক স্থানে একটি ভাড়া বাসার বারান্দায় ঝুলন্ত অবস্থায় মদিনা খাতুন (৩৫) নামের এক পোশাক শ্রমিকের লাশ উদ্ধার করেছে থানা পুলিশ। নিহতের স্বজনদের দাবি মদিনা খাতুনের স্বামী তাকে হত্যা করেছে।
সোমবার (১৩ জুন) বেলা এগারোটার দিকে স্থানীয় শাহজাহান মিয়ার বাড়ির বারান্দা থেকে এ লাশ উদ্ধার করা হয়। এ ঘটনার পর থেকেই নিহতের স্বামী পলাতক রয়েছে। বন্ধ রয়েছে তার মুঠোফোন।
নিহত মদিনা আক্তার ময়মনসিংহ জেলার ঈশ্বরগঞ্জ উপজেলার চরআলগী গ্রামের মাসুদ রানার স্ত্রী ও একই গ্রামের মোঃ মোখলেছুর রহমানের মেয়ে। মদিনার স্বামী মাসুদ রানা একই গ্রামের আছর আলীর ছেলে। শ্রীপুরের গড়গড়িয়া মাস্টারবাড়ি এলাকার মোঃ শাহজাহানের বাড়িতে ভাড়া থেকে মদিনা আক্তার ডেনিমেক নামের একটি পোশাক কারখানায় চাকরি করতেন। একই এলাকায় স্থানীয় আমান কটন কারখানায় চাকরি করেন তার স্বামী। সোমবার ভোরে ভাড়া বাড়ির পাশের কক্ষের লোকজন বারান্দায় মদিনা আক্তারের মরদেহ ওড়নায় ঝুলন্ত অবস্থায় দেখতে পান।
নিহতের ছোট ভাই মো. মোফাজ্জল হোসেন বলেন, তিনি গাজীপুর সদর উপজেলার মেম্বারবাড়ী এলাকায় থাকেন। সোমবার সকালে বোনের মরদেহ ঘরের বারান্দায় ঝুলে থাকার খবর পান। দ্রুত সেখানে গিয়ে দেখতে পান বারান্দার চালের কাছের ধর্ণার সঙ্গে ওড়নায় ফাঁস লাগানো অবস্থায় তার বোনের মরদেহ ঝুলছে। এদিকে বোনের স্বামীকেও খুঁজে পাওয়া যাচ্ছে না। তার ব্যবহৃত মুঠোফোন বন্ধ।
মোফাজ্জল জানান, ওই ভাড়া বাড়িতে স্বামী-স্ত্রী, দুই মেয়ে ও এক ছেলে সহ তার বোন গত তিন বছর ধরে থাকছেন। প্রায় ১৮ বছর আগে মাসুদ রানার সঙ্গে তার বোনের বিয়ে হয়। মোফাজ্জল তার বোনের সন্তানদের বরাত দিয়ে জানান, স্বামী মাসুদ রানা বেশ কিছুদিন ধরে চাকরি করতে অপারগতা প্রকাশ করছিলেন। ব্যাটারি চালিত অটোরিকশা কেনার জন্য স্ত্রীর কাছে টাকা চেয়ে ছিলেন । চাকরি ছেড়ে দেওয়ার কথা বলায় স্বামী-স্ত্রীর মধ্যে বেশ কয়েকদিন ধরে মনোমালিন্য চলছিল। রোববার রাতে স্ত্রীর সঙ্গে ঝগড়া করেন মাসুদ রানা। এরপর সোমবার ভোরে লোকজন থাকার ঘরের বারান্দায় ঝুলন্ত মরদেহ দেখতে পান। তিনি দাবি করেন, পারিবারিক কলহের জেরে তার বোনকে হত্যা করে পালিয়ে গেছে স্বামী। এ ঘটনায় তারা আইনগত পদক্ষেপ নিবেন।
শ্রীপুর থানার ভারপ্রাপ্ত কর্মকর্তা (ওসি) মনিরুজ্জামান মনির বলেন, কয়েকদিন ধরে টাকাপয়সা নিয়ে স্বামী মাসুদ রানার সাথে কলহ চলছিল মদিনা খাতুনের। সোমবার সকালে তার ঝুলন্ত লাশ দেখে পুলিশকে খবর দেয় স্থানীয়রা। পরে লাশ উদ্ধার করে ময়নাতদন্তের জন্য গাজীপুরের শহিদ তাজউদ্দীন আহমদ মেডিক্যাল কলেজ হাসপাতালে পাঠানো হয়েছে। এটি হত্যা নাকি আত্মহত্যা, তা এখনই বলা যাচ্ছে না। তদন্তের পর জানতে পারবো। এ ঘটনার পরবর্তী আইনগত পদক্ষেপ চলমান বলেও জানান তিনি।