শেখ মোঃ হুমায়ুন কবির, সিনিয়র ক্রাইম রিপোর্টার: গাজীপুরের শ্রীপুর, মাওনা চৌরাস্তার মাওনা বাজার রোর্ডে অবস্থিত, লাইফ কেয়ার নামক হাসপাতালে বিশেষজ্ঞ চিকিৎসক ছাড়া অদক্ষ নার্স দিয়ে সিজারিয়ান অপারেশনে প্রসূতি মায়ের মৃত্যুর ঘটনায় হাসপাতাল পরিদর্শন শেষে হাসপাতালের সকল কার্যক্রম বন্ধের নির্দেশ দেন গাজীপুর সিভিল সার্জন, ডাক্তার মাহমুদা আক্তার।
(০২’ই এপ্রিল ২০২৪) মঙ্গলবার দুপুরে উপজেলার মাওনা চৌরাস্তার মাওনা বাজার রোর্ডে অবস্থিত, লাইফ কেয়ার হাসপাতাল পরিদর্শন শেষে উপস্থিত সাংবাদিকদের এসব তথ্য জানান, গাজীপুর সিভিল সার্জন ডাক্তার মাহমুদা আক্তার। নিহত প্রসূতি ইয়াসমিন আক্তার (৩০) উপজেলার মাওনা ইউনিয়নের ইন্দ্রপুর গ্রামের আসাদুল্লাহ স্ত্রী।
সিভিল সার্জন ডাঃ মাহমুদা আক্তার বলেন, হাসপাতালে প্রসূতির মৃত্যুর ঘটনায় হাসপাতালে এসেছি সব কিছু জানতে। রোগীর ফাইল দেখে যা জানতে পারলাম রোগীর কোন অটিনোট নেই। কোনো ধরনের নিয়মকানুন অনুসরণ করা হয়নি। হাসপাতালে এসে আমি একজন নার্সের সঙ্গে কথা বললাম। সে আসলে নার্স না। সে কোনো ধরনের পড়াশোনা করে নাই। ব্লাট সংগ্রহ করে। তার কোন ট্রেনিং নাই। তাকে অদক্ষ বলবো নাকি কি বলবো, এটা তো অদক্ষতার মধ্যেও পড়ে না। সে আমার জগতের কেউ না। এখন আমি এই হাসপাতালের সমস্ত কার্যক্রম বন্ধ করে যাব। এসময় আমি হাসপাতালের পুরোটা ঘুরে দেখলাম। হাসপাতালে তিনজন ভর্তি রোগী রয়েছে। তাদের অপারেশন হয়েছে। আগামীকাল ওঁরা চলে যাবে। প্রতিটি রোগীর ফাইলে একই সমস্যম ওটিনোট লিখা নেই। আজকে থেকে এই হাসপাতালের কার্যক্রম বন্ধ। এরপর হাসপাতাল কর্তৃপক্ষ যদি সকল কাগজপত্র সঠিক করে আমাদের কাছে জমা দেন, পরবর্তীতে যাচাই-বাছাই করে কার্যক্রম চালুর নির্দেশ দেয়া হবে।
গাজীপুর সিভিল সার্জন ডাক্তার মাহমুদা আক্তার, সাংবাদিকদের এক প্রশ্নের জবাবে তিনি বলেন, আজকে থেকেই সমস্ত কার্যক্রম বন্ধ। শুধু তিনজন ভর্তি রোগীর চিকিৎসা চালাতে পারবেন। নতুন করে কোনো রোগী ভর্তি বা চিকিৎসা দিতে পারবেন না। তিনজন রোগী আগামীকাল ছুটির পর সিলগালা করে দেয়া হবে। আরেকটি বিষয় আশ্চর্য হয়েছি এই হাসপাতালে নার্স না হয়েও অনেকেই ইউনিফর্ম পড়ে রয়েছে। এটি হতে দেয়া যাবে না। এক্ষেত্রে কঠিন পদক্ষেপ নেয়া হবে।
উল্লেখ্য গত (৩১’শে মার্চ ২০২৪) সোমবার রাতে উপজেলার মাওনা চৌরাস্তার মাওনা বাজার রোর্ডে অবস্থিত, লাইফ কেয়ার হাসপাতালে ভুল চিকিৎসার প্রসূতি মায়ের মৃত্যু হয়। প্রসূতি মায়ের মৃত্যুর পরপরই চিকিৎসক, নার্স ও হাসপাতাল কর্তৃপক্ষ পালিয়ে যায়। এরপর রোগীর স্বজনরা হাসপাতালে ভাংচুর চালায়। পরবর্তীতে উপজেলা প্রশাসন ও আইনশৃঙ্খলা বাহিনীর সদস্যরা এসে পরিস্থিতি নিয়ন্ত্রণে আনেন।