গাজীপুরের শ্রীপুরে বহুতল ভবনে ওপর থেকে নির্মাণসামগ্রী পড়ে এক শিশু ফাতেমা খাতুন (৮) মারা গেছে। আজ বৃহস্পতিবার বেলা সাড়ে ১১টার দিকে উপজেলার মাওনা ইউনিয়ন মাওনা উত্তরপাড়া গ্রামের স্থানীয় স্বপন খানের বহুতল ভবনের নিচে এ ঘটনা ঘটে।
শিশু ফাতেমা খাতুন ময়মনসিংহের সদর কোতোয়ালি থানার চরভবানীপুর গ্রামের মো. আমিনুল ইসলামের মেয়ে। সে স্থানীয় একটি মহিলা মাদ্রাসার শিক্ষার্থী ছিল।
জানা গেছে, উপজেলার মাওনা ইউনিয়ন মাওনা উত্তরপাড়া গ্রামের স্থানীয় মো. রফিকুল ইসলাম স্বপন খানের বাড়ির ছয়তলা ভবনের নির্মাণকাজ চলছে। সেখানে কোনো ধরনের নিরাপত্তা বেষ্টনী ছাড়াই ভবন নির্মাণের কাজ চলছিল। সেই বহুতল ভবনের নিচে খেলাধুলা করছিল শিশু ফাতেমা।
শিশুটির বাবা আমিনুল ইসলাম বলেন, ‘আমার মেয়ে আরও দু’জনকে শিশুকে নিয়ে বহুতল ভবনের নিচে খেলাধুলা করছিল। এ সময় বহুতল ভবনের ছাদ থেকে ইটের বস্তা ভর্তি নির্মাণসামগ্রী ফেলে দেন শ্রমিকেরা। বস্তাটি আমার মেয়ের মাথায় পড়ে এবং মাথা ফেটে যায়। প্রচুর রক্তক্ষরণ শুরু হলে আশপাশের লোকজন আমার মেয়েকে উদ্ধার করে স্থানীয় একটি ক্লিনিকে নিয়ে যায়। সেখানকার কর্তব্যরত চিকিৎসক জানান আমার মেয়েকে হাসপাতালে নিয়ে যাওয়ার আগেই মারা গেছে।’
ভবন নির্মাণের দায়িত্বে থাকা ঠিকাদার মো. হানিফ মিয়া বলেন, ‘আমি ভবন নির্মাণের কাজ করছি। কিন্তু আজ আমি ঘটনাস্থলে উপস্থিত ছিলাম না। ভবনের ওপর থেকে মাঝেমধ্যেই ভাঙা ইটের সুরকি ফেলানো হয়। তবে আজ ফেলানোর সময় শ্রমিকেরা দেখেননি যে নিচে শিশুরা খেলাধুলা করছিল।’
নিরাপত্তা বেষ্টনী ছাড়া বহুতল ভবনের কাজ কেন করছে?-এমন প্রশ্নের জবাবে ঠিকাদার বলেন, ‘সীমানাপ্রাচীরের ভেতরে তো কাজ করছি। তাই নিরাপত্তা বেষ্টনী দেওয়া হয়নি।’
এ বিষয়ে ভবনের মালিক বলেন, ‘ঘটনার পরপরই আমি শিশুটিকে উদ্ধার করে হাসপাতালে নিয়ে যাই। হাসপাতালে নিয়ে যাওয়ার আগে শিশুটির মৃত্যু হয়েছে বলে জানিয়েছেন চিকিৎসক।’
আপনি তো ভবনের কাজে কোনো ধরনের নিরাপত্তা বেষ্টনী দেননি?-এমন প্রশ্নের জবাবে ভবনের মালিক বলেন, ‘এটা তো ঠিকাদারি প্রতিষ্ঠানের দায়িত্ব।’
শ্রীপুর থানার ভারপ্রাপ্ত কর্মকর্তা (ওসি) মোহাম্মদ মনিরুজ্জামান বলেন, ‘ঘটনার পরপরই ঘটনাস্থলে পুলিশ পাঠানো হয়েছে। এ বিষয়ে পরবর্তী আইনি পদক্ষেপ প্রক্রিয়াধীন।’