সর্বকালের সর্বশ্রেষ্ঠ বাঙ্গালী জাতির জনক বঙ্গবন্ধু শেখ মুজিবুর রহমানের ৪৭’তম শাহাদাৎ বার্ষিকী ও জাতীয় শোক দিবস উপলক্ষে, গাজীপুরের শ্রীপুর মাওনা পিয়ার আলী বিশ্ববিদ্যালয় কলেজ শাখা ছাত্রলীগের সভাপতি পদপ্রার্থী, অসহায় নির্যাতিত ছাত্র ছাত্রীদের আদর্শ। মোঃ আল-ইমরান শেখ এর উদ্দোগে, সর্বকালের সর্বশ্রেষ্ঠ বাঙ্গালী জাতির জনক বঙ্গবন্ধু শেখ মুজিবুর রহমান’কে উৎসর্গ করে উক্ত পিয়ার আলী বিশ্ববিদ্যালয় কলেজে বৃক্ষরোপণ কর্মসূচি অনুষ্ঠিত হয়। এসময় উপস্থিত ছিলেন, উক্ত কলেজের সুনামদক্ষ প্রিন্সিপাল এ কে এম আবুল খায়ের, ভাইস প্রিন্সিপাল আক্কাস- ছাত্রলীগ নেতা। রিফাত মন্ডল, হৃদয়, রাব্বি রাফিউল- সহ উক্ত কলেজের ছাত্র ছাত্রীবৃন।
এসময় উক্ত কলেজ শাখা ছাত্রলীগের সভাপতি পদপ্রার্থী মোঃ আল-ইমরান শেখ, বঙ্গবন্ধু শেখ মুজিবুর রহমান, বঙ্গমাতা শেখ ফজিলাতুন্নেছা মুজিব, শিশু শেখ রাসেল সহ সকল শহীদদের প্রতি বিনম্র শ্রদ্ধাঞ্জলি জানিয়ে, তিনি বলেন।
পূর্ব পাকিস্তান মুসলিম ছাত্র লীগ পাকিস্তান স্বাধীনতার পর বাংলাদেশের স্বাধীনতা পূর্বে গঠিত একটি ঐতিহাসিক ছাত্র সংগঠন। ১৯৫৩ সালে এটির নাম পরিবর্তিত হয়ে বাংলাদেশ ছাত্রলীগে রূপান্তর হয়। নির্বাচনী রাজনীতিতে মুসলিম লীগের রাজনৈতিক কর্মকাণ্ড এবং প্রচারণা সমর্থন করার জন্য পাকিস্তানের স্বাধীনতার পরে পূর্ব পাকিস্তান মুসলিম ছাত্রলীগ প্রতিষ্ঠা করা হয়। শেখ মুজিবুর রহমান এর নেতৃত্ব ছিলেন। বঙ্গবন্ধু শেখ মুজিবুর রহমানের নেতৃত্বে ১৯৪৮ সালের ৪ জানুয়ারি ঢাকা বিশ্ববিদ্যালয়ের ফজলুল হক হলের সভাকক্ষে এক সাধারণ আলোচনা সভা অনুষ্ঠিত হয়। সভায় ছাত্র সংগঠন গড়ে তোলার পক্ষে সবাই মত দেয়। ওই সভা থেকে ‘পূর্ব পাকিস্তান মুসলিম ছাত্রলীগ গঠন করা হয়। কলকাতা ইসলামিয়া কলেজ ও দেশের বিভিন্ন জায়গা থেকে বহু ছাত্র ঢাকা বিশ্ববিদ্যালয়ে ভর্তি হয়েছিলেন। তারা শাহ আজিজুর রহমানের নেতৃত্বের ছাত্রলীগের সঙ্গে জড়িত ছিলেন না। বঙ্গবন্ধু নিজে ছাত্রলীগ কর্মীদের সঙ্গে আলাপ-আলোচনা করে একটি ছাত্র সংগঠন প্রতিষ্ঠার প্রয়োজনীয়তা সম্পর্কে একমতে পৌঁছেছিলেন।
বঙ্গবন্ধু এ সংগঠনটি করতে ছাত্রনেতা আজিজ মোহাম্মদ, মোহাম্মদ তোয়াহা, অলি আহাদ, আব্দুল হামিদ চৌধুরী, দবিরুল ইসলাম, নইমউদ্দিন, মোল্লা জালালউদ্দিন, আব্দুর রহমান চৌধুরী, আব্দুল মতিন খান চৌধুরী, সৈয়দ নজরুল ইসলাম এর সাথে পরামর্শ করেন। এরাসহ অনেক ছাত্র নেতা তখন একটি ছাত্র প্রতিষ্ঠান করার ব্যাপারে ঐক্যবদ্ধ হন। প্রতিষ্ঠার পরে বঙ্গবন্ধু এই সংগঠনটির অফিস করা হয় ১৫০ নম্বর মোগলটুলী। ‘মুসলিম লীগ নেতারা চেষ্টা করেছিলেন এই অফিসটা দখল করতে, কিন্তু শওকত মিয়ার জন্য পারেননি।’ ‘ছাত্রলীগ প্রতিষ্ঠান গঠন করার পর ছাত্রদের মধ্যে সাড়া পড়ে। এক মাসের ভিতর বঙ্গবন্ধু প্রায় সব জেলায় কমিটি করতে সক্ষম হন। তখনকার পূর্ব পাকিস্তান সরকার প্রকাশ্যে শাহ আজিজুর রহমানের ‘নিখিল পূর্ব পাকিস্তান মুসলিম ছাত্রলীগ’কে সাহায্য করত।
পিয়ার আলী বিশ্ববিদ্যালয় কলেজ শাখা ছাত্রলীগের সভাপতি পদপ্রার্থী মোঃ আল-ইমরান শেখ, আরও বলেন। বঙ্গবন্ধুর নেতৃত্বে প্রতিষ্ঠিত ‘পূর্ব পাকিস্তান মুসলিম ছাত্রলীগ’র বিরুদ্ধে গোয়েন্দাগিরি করতো। ১৯৪৭ সালের ১৪ আগস্ট পাকিস্তান সৃষ্টি হওয়ার পর ‘নিখিল বঙ্গ মুসলিম ছাত্রলীগ’ নাম বদলিয়ে ‘নিখিল পূর্ব পাকিস্তান মুসলিম ছাত্রলীগ’ করা হয়েছিল। শাহ আজিজুর রহমান এই সংগঠনের জেনারেল সেক্রেটারি হিসেবে বহাল ছিলেন। শুরুর দিকে আহবায়ক কমিটি গঠিত হয়। আহ্বায়ক ছিলেন নাঈমউদ্দিন আহমেদ। ছাত্রলীগ সাংগঠনিকভাবে কার্যক্রম শুরু করলে এর সভাপতি মনোনিত হন দবিরুল ইসলাম। অলি আহাদ এর সদস্য হতে আপত্তি করেছিলেন। কারণ হিসেবে আহাদ বলেছিলেন ‘তিনি আর সাম্প্রদায়িক প্রতিষ্ঠান করবেন না।’ পূর্ব পাকিস্তান ছাত্রলীগ নাম দিলে তিনি থাকতে পারেন। শেখ মুজিবুর রহমান তখন অলি আহাদকে বুঝাতে চেষ্টা করেছিলেন। বঙ্গবন্ধু তখনকার রাজনৈতিক পরিস্থিতি ও দেশের আবহাওয়া চিন্তা করার প্রয়োজনীয়তা তুলে ধরেছিলেন অলি আহাদকে। তিনি বলতে চেয়েছেন নামে কিছুই আসে যায় না। আদর্শ যদি ঠিক থাকে, তবে নাম পরিবর্তন করতে বেশি সময় লাগবে না। যদিও নইমউদ্দিন ছিল কনভেনর, কিন্তু বঙ্গবন্ধুকেই সবকিছু তখন করতে হতো। প্রতিষ্ঠার শুরু থেকে ভাষার অধিকার, শিক্ষার অধিকার, বাঙালীর স্বায়ত্তশাসন প্রতিষ্ঠা, বৈষম্যের ও দুঃশাসনের বিরুদ্ধে গণঅভ্যুত্থান, সর্বোপরি স্বাধীনতা ও স্বাধিকার আন্দোলনে গুরুত্বপূর্ণ ভূমিকা রাখে এ মুসলিম ছাত্রলীগ। ১৯৪৭ সালে ভারত-পাকিস্তান আলাদা হওয়ার পর পূর্ব বাংলার রাজনৈতিক অবস্থায় কিছুটা সরগরম ছিলো। কিন্তু তখন ছাত্রসমাজ রাজনীতিতে অনেকটা নিষ্ক্রিয় ৷ ভাষা আন্দোনের মাধ্যমে সংগঠনটি তার প্রাণ ফিরে পায় এবং সক্রিয় রাজনৈতিক শক্তিতে পরিনত হয়। সর্বকালের সর্বশ্রেষ্ঠ বাঙ্গালী জাতির জনক বঙ্গবন্ধু শেখ মুজিবুর রহমান’কে উৎসর্গ করে উক্ত পিয়ার আলী বিশ্ববিদ্যালয় কলেজে বৃক্ষরোপণ কর্মসূচি গ্রহণকরি।