সোহাগ সন্দ্বীপিঃ চট্টগ্রামের সন্দ্বীপ উপজেলায় ছাত্রলীগের এক নেতা ও যুবলীগের এক কর্মীকে ইয়াবা সেবনের অভিযোগে বেদম মারধর করে এক জন প্রতিনিধি পুলিশে তুলে দিয়েছেন বলে অভিযোগ পাওয়া গেছে।রোববার রাত নয়টার দিকে উপজেলার মগধরা ইউনিয়নের ৮ নম্বর ওয়ার্ডে এ ঘটনা ঘটে।
মারধরে আহত ছাত্রলীগ নেতাকে গ্রেপ্তারের পর চিকিৎসার জন্য সন্দ্বীপ উপজেলা স্বাস্থ্য কমপ্লেক্সে ভর্তি করা হয়েছে।তাঁর নাম সজীব হাসান ওরফে সাগর।তিনি দক্ষিণ সন্দ্বীপ কলেজ ছাত্রলীগের সভাপতি।একই ঘটনায় গ্রেপ্তার করা হয়েছে তাঁর বন্ধু সারিকাইত ইউনিয়ন যুবলীগের কর্মী মেহেদী হাসানকে।
সন্দ্বীপ থানার ভারপ্রাপ্ত কর্মকর্তা শহিদুল ইসলাম বলেন,ওই দুজন মিলে ইয়াবা সেবন করছিলেন।এ সময় তাঁরা হাতেনাতে ৪০টি ইয়াবাসহ ধরা পড়েন। তাঁদের বিরুদ্ধে মাদকদ্রব্য নিয়ন্ত্রণ আইনে একটি মামলা করা হয়েছে।সোমবার গ্রেপ্তার দুই নেতাকে আদালতের মাধ্যমে কারাগারে পাঠানো হয়েছে। মামলার এজাহারে ওই ছাত্রলীগ নেতাকে মারধরের বিষয়টির উল্লেখ নেই।
কিন্তু ছাত্রলীগ নেতার ভাইয়ের দাবি,একটি মৎস্য প্রকল্পে আধিপত্য বিস্তারে বাধা দেওয়ায় সজীব হাসানকে পরিকল্পিতভাবে ফাঁসিয়েছেন মগধরা ইউনিয়ন পরিষদের ৭ নম্বর ওয়ার্ডের সদস্য এবং সন্দ্বীপ উপজেলা যুবলীগের স্বাস্থ্য ও পরিবেশবিষয়ক সম্পাদক মোহাম্মদ রাকিব জাহাঙ্গীর।ওই ইউপি সদস্য ৩০-৪০ জন লোক নিয়ে এসে তাঁর ভাইকে পিটিয়েছেন।
সজীব হাসানের ভাই ঈশান বলেন,মগাধরা ইউনিয়নের ৮ নম্বর ওয়ার্ডে সজীব ও তাঁর বন্ধু মেহেদী হাসানের মাছের একটি প্রকল্প আছে।সেখানে ইউপি সদস্য রাকিব জাহাঙ্গীরের অনুসারী মোশারফ হোসেন দীর্ঘদিন ধরে আধিপত্য বিস্তারের চেষ্টা করছেন।
রোববার সন্ধ্যায় মোশারফ সেখানে আধিপত্য বিস্তারের চেষ্টা করলে সজীব ও মেহেদী বাধা দেন।এরপর রাত নয়টার দিকে মেহেদী মৎস্য প্রকল্পে ভেসে ওঠা কিছু মরা মাছ পুকুর থেকে তোলার কাজ করছিলেন।আর সজীব পুকুরপাড়ে বসে মুঠোফোনে ফেসবুক ব্যবহার করছিলেন।এ সময় ইউপি সদস্য জাহাঙ্গীর ৩০ থেকে ৪০ জন লোক নিয়ে এসে তাঁর ওপর হামলা চালান। জাহাঙ্গীর নিজেই সজীবকে বেধড়ক পেটান।
এ বিষয়ে বক্তব্য জানতে ইউপি সদস্য ও যুবলীগ নেতা মোহাম্মদ রাকিব জাহাঙ্গীরের মুঠোফোনে একাধিকবার কল দিলেও তিনি সাড়া দেননি।
সন্দ্বীপ উপজেলা ছাত্রলীগের সাধারণ সম্পাদক সামীউদ্দৌলা বলেন,ঘটনা যেটুকু জেনেছি,তাতে মনে হয়েছে,এটি একটি চক্রান্ত।ছাত্রলীগ নেতা সজীবকে পরিকল্পিতভাবে ফাঁসানো হয়েছে।পুলিশ যদি অভিযান করে কোনো ইয়াবা সেবনকারীকে গ্রেপ্তার করে,তাহলে তাকে মারধর করবে কেন?পূর্বপরিকল্পিতভাবে সজীবের ওপর হামলা চালিয়েছেন স্থানীয় কিছু ব্যক্তি। পরে মাদক দিয়ে পুলিশের হাতে তুলে দিয়েছেন।এ ঘটনার তীব্র নিন্দা জানাই।
সন্দ্বীপ উপজেলা ছাত্রলীগের সভাপতি মাহফুজুর রহমান সুমন বলেন,এটি একটি পরিকল্পিত ষড়যন্ত্র।পূর্বে থেকে তাদের মধ্যে ঝামেলা চলে আসছিলো।এইভাবে একজন ছাত্রলীগ সভাপতিকে পিটিয়ে ইয়াবা গুঁজে দিয়ে পুলিশে তুলে দেওয়ায় তিব্র নিন্দা জানাই।
এদিকে দক্ষিণ সন্দ্বীপ কলেজের ছাত্রলীগ সভাপতি সজীব হাসান সাগরকে ফাঁসানোর কয়েকটি ভিডিও সোশাল মিডিয়ায় ভাইরাল হয়েছে।ভিডিওতে দেখা যাচ্ছে যারা ইয়াবা গুঁজে ফাঁসিয়েছে তাঁরাই মেহেদী হাসানকে চলে যেতে বলছিলো।কিন্তু বন্ধুকে রেখে না যাওয়ায় তাকেও ফাঁসিয়ে দিয়েছে বলে ভিডিওতে বুঝা যায়।
ছাত্রলীগের অন্যান্য সদস্যদের দাবি সঠিক তদন্ত করে বিচারের আওতায় আনতে হবে যুবলীগ নেতা রাকিব জাহাঙ্গীরকে।যুবলীগের নেতা,জন প্রতিনিধি হয়ে সে কিভাবে ছাত্রলীগের সভাপতি এবং যুবলীগের কর্মীদের সাথে এমন কাজ করলো।