আজহারুল ইসলাম সাদী, স্টাফ রিপোর্টারঃ
সাতক্ষীরায় পৃথক ঘটনায় বৌ’মা কর্তৃক শ্বাশুড়ি ও জামাই কর্তৃক শ্বশুর কে হত্যার অভিযোগ উঠেছে।
জানা গেছে সাতক্ষীরার দেবহাটায় উপজেলায় বউমার ধাক্কায় শ্বাশুড়ি নিহত হওয়ার অভিযোগ উঠেছে। বুধবার বিকেলে দেবহাটার দেবীশহর গ্রামে এ ঘটনা ঘটার পর গভীর রাতে চিকিৎসাধিন অবস্থায় তার মৃত্যু হয়।
নিহত শ্বাশুড়ি মর্জিনা খাতুন (৬৪) দেবীশহর গ্রামের আব্দুর রহমানের স্ত্রী।
বউমা মিতা পারভীন (২৫)। তিনি হাসান কারিগরের স্ত্রী ও মর্জিনা খাতুনের ছোট বউমা।
স্থানীয় সূত্রে জানা যায় বৌ শ্বাশুড়ির পারিবারিক কলহ ছিল চরমে আকারে এর এক পর্যায়ে
বুধবার বিকেলে রান্না করা নিয়ে দুজনের ঝগড়া শুরু হয়। ক্ষুব্ধ হয়ে শ্বাশুড়ি মর্জিনা খাতুন বউমা মিতা পারভীনকে দুটো চড় মারেন। ক্ষিপ্ত হয়ে বউমা এসময় শ্বাশুড়িকে দেওয়ালে ধাক্কা মারেন। ফলে শ্বাশুড়ির মাথা ফেটে গুরুতর আহত হন। আহত অবস্থায় মর্জিনা খাতুনকে প্রথমে সখিপুর স্বাস্থ্য কমপ্লেক্সে ও পরে সাতক্ষীরা মেডিকেল কলেজ হাসপাতালে ভর্তি করেন। বুধবার মধ্যরাতে মর্জিনা খাতুন সাতক্ষীরা মেডিকেল কলেজ হাসপাতালে চিকিৎসাধিন অবস্থায় মারা যান।
মর্জিনার স্বামী আব্দুর রহমান জানান, মরদেহ বাড়িতে এনে রাখা হয়েছে। বাদ যোহর জানাজার নামাজ হবে।
দেবহাটা থানার ভারপ্রাপ্ত কর্মকর্তা ওসি শেখ ওবায়দুল্লাহ জানান, খবর পেয়ে ঘটনাস্থলে পুলিশ পাঠানো হয়েছে। অভিযোগ দিলে আইনগত ব্যবস্থা নেওয়া হবে।
অপরদিকে স্ত্রী কর্তৃক স্বামীকে তালাক দেওয়ার ঘটনায় জামাই কর্তৃক শ্বশুর কে কুপিয়ে হত্যার অভিযোগ উঠেছে।
জানা গেছে দেবহাটার আজগার আলীর ছোট মেয়ে শিল্পী খাতুনের সঙ্গে কালিগঞ্জ উপজেলার তারালী ইউনিয়নের বরেয়া গ্রামের মুজিবর রহমানের ছেলে আপন খালাত ভাই সালাহউদ্দিনের দু’ বছর আগে বিয়ে হয়। সালাহউদ্দিন বেকার হওয়ায় বিয়ের পর থেকে যৌতুকের দাবিতে স্ত্রী শিল্পীকে প্রায়ই নির্যাতন করতো। এ নিয়ে কয়েকবার শালিস হয়েছে। এরপরও নির্যাতন বন্ধ না হওয়ায় গত ১০ দিন আগে শিল্পীকে বাড়িতে নিয়ে এসে তালাকনামা পাঠিয়ে দেওয়া হয়। এতে ক্ষুব্ধ হয়ে সালাহউদ্দিন
শ্বশুর বাড়ির পাশে ঘোরাঘুরি করতো। কখনো তাকে গাছের উপর উঠে বসে থাকতে দেখা গেছে। মঙ্গলবার ২১ জুন রাত ১০টায় ভাত খেয়ে নিজের ঘরের বারান্দায় মশারী টানিয়ে ঘুমিয়ে পড়েন শ্বশুর আজগার আলী, দিবাগত রাত একটার দিকে আগে থেকে ওত পেতে থাকা সালাহউদ্দিন ঘুমন্ত অবস্থায় মশারির উপর দিয়ে আজগার আলীকে রাম দা দিয়ে এলোপাতাড়ি কুপিয়ে জখম করে চলে যায়।
স্থানীয়রা ছুঁটে এসে আজগার আলীকে রাত সোয়া দুইটার দিকে সাতক্ষীরা মেডিকেল কলেজ হাসপাতালে নিয়ে যান। সেখান ভর্তি না নেওয়ায় বুধবার ভোর সোয়া চারটার দিকে তাকে খুলনা ২৫০ শয্যা হাসপাতালে নিয়ে যাওয়া হয়। জরুরী বিভাগ চিকিৎসা চলাকালিন ভোর ৫টার দিকে আজগার আলী মারা যান। নিহত আজগার আলীর স্ত্রী মনোয়ারা খাতুন জানান, পূর্ব পরিকল্পিতভাবে শ্বশুরকে হত্যার পর সালাহউদ্দিন ভারতে পালিয়ে যাওয়ার লক্ষ্য নিয়ে আগে থেকে ভিসা প্রস্তুত করে রাখছে। যে কোন সময় সে ভোমরা দিয়ে ভারতে পালাতে পারে বলে তিনি আশঙ্কা করছেন।
দেবহাটা থানার ভারপ্রাপ্ত কর্মকর্তা ওসি শেখ ওবায়দুল্লাহ জানান, খবর পেয়ে ঘটনাস্থলে পুলিশ পাঠোনা হয়েছে। ঘটনার সঙ্গে জড়িতদের গ্রেপ্তারের চেষ্টা চলছে।