স্টাফ রিপোর্টারঃ
সাতক্ষীরা জেলা বাস মিনিবাস মাইক্রো শ্রমিক ইউনিয়নের দুটি বিবাদমান গ্রুপের সংঘর্ষে হতাহতের ঘটনা ঘটেছে।
উচ্চ আদালতের নির্দেশনায় স্থগিত হয়ে যাওয়া নিবার্চনকে কেন্দ্র করে শহরের বাস টার্মিনাল উত্তপ্ত হয়ে ওঠে। এরই জেরে দুপক্ষে মারামারির ঘটনা ঘটেছে।
রোববার (০৩ এপ্রিল) বেলা ১১ টার দিকে এই ঘটনায় একদল শ্রমিক সাতক্ষীরার দৈনিক কালের চিত্র অফিসে ইটপাটকেল ছুড়ে ভাংচুর করে। তারা পত্রিকাটির সম্পাদক বীর মুক্তিযোদ্ধা অধ্যক্ষ আবু আহমেদকে সন্ত্রাসী স্টাইলে খুঁজতে থাকে।
এ বিষয়ে শ্রমিক নেতা শেখ রবিউল ইসলাম জানান, আজ সকালে জাহিদ গ্রুপের শ্রমিক আকতার, টিপু, শাহজাহান ও মিলন একসাথে রবি মহব্বত গ্রুপের মাসুম ও রতনকে বাস টার্মিনাল থেকে মারধর করে বের করে দেয়।
এরই জেরে রবি মহব্বত গ্রুপের শ্রমিক সদস্যরা পাল্টা তাদের ওপর হামলা করে। এ সময় আরও দুই তিনজন শ্রমিক আহত হন। শ্রমিকদের মধ্যে উত্তেজনার সৃষ্টি হলে বাস টার্মিনালে শ্রমিকদের মধ্যে ধাওয়া পাল্টা ধাওয়ার ঘটনা ঘটে। তারা যানবাহন চলাচল বন্ধ করে দেয়। রাস্তায় বাঁশ দিয়ে ব্যারিকেড সৃষ্টি করে। খবর পেয়ে পুলিশ সেখানে অবস্থান নেয়।
পুলিশের সামনেই শ্রমিকরা বীর মুক্তিযোদ্ধা ও জেলা আওয়ামী লীগের সহ সভাপতি অধ্যক্ষ আবু আহমেদ সম্পাদিত পত্রিকা দৈনিক কালের চিত্র অফিসে ইটপাটকেল ছুড়ে হামলা করে। তারা পত্রিকাটির ভবনের দরজা জানালা ভাংচুর করে এবং আবু আহমেদকে সন্ত্রাসী স্টাইলে খুঁজতে থাকে।
অধ্যক্ষ আবু আহমেদ সে সময় জেলা শহরের বাইরে একটি কর্মসূচিতে উপস্থিত ছিলেন।
ঘন্টাব্যাপী ধাওয়া পাল্টা ধাওয়া শেষে পরিস্থিতি নিয়ন্ত্রনে আসে। তবে পুলিশ এসময় উশৃংখল শ্রমিকদের কোন বাধা সৃষ্টি করা থেকে বিরত থাকে।
উল্লেখ্য যে, সাতক্ষীরা বাস মিনিবাস ও মাইক্রো শ্রমিক ইউনিয়নের নির্বাচন অনুষ্ঠিত হওয়ার কথা ছিল শনিবার ০২ এপ্রিল। কিন্তু এই নির্বাচনে নির্বাচন কমিশনের পক্ষপাতিত্ব অশ্রমিকদের ভোটার তৈরী করা এবং প্রকৃত শ্রমিকদের বাদ রেখে ভোটার তালিকা তৈরী করার অভিযোগে উচ্চ আদালতে একটি রীট পিটিশন দাখিল করা হলে আদালত ৩ মাসের জন্য এই নির্বাচন স্থগিত ঘোষনা করেন।
এই খবর প্রচার হবার পর গত শুক্রবার রাতে দৈনিক কালের চিত্র অফিসে একদল শ্রমিক ইটপাটকেল ছুড়ে হামলা চালায়।
দৈনিক কালের চিত্র পত্রিকার সম্পাদক অধ্যক্ষ আবু আহমেদ জেলা বাস মিনিবাস মালিক সমিতির সভাপতি।
রোববার (০৩ এপ্রিল) একইভাবে এই পত্রিকায় এবং শ্রমিকদের মধ্যে সংঘর্ষ ছড়িয়ে পড়ে। শ্রমিকদের একাংশ নির্বাচনের পক্ষে, আরেক অংশ আদালতের নির্দেশে নির্বাচন স্থগিতের পক্ষে। এ নিয়েই বিরোধের সূত্রপাত।
এ বিষয়ে অধ্যক্ষ আবু আহমেদ জানান, শ্রমিকদের মধ্যে এই সংঘর্ষের বিষয়ে তার কিছুই জানা নেই। তিনি এসময় শহরের বাইরে একটি কর্মসূচীতে থাকাকালে ঘটনা সম্পর্কে অবহিত হন। তবে এসময় তিনি পুলিশ যথাযথ ভূমিকা নেয়নি বলে অভিযোগ করেন।
সাতক্ষীরা সদর থানার ওসি গোলাম কবির জানান, শ্রমিকদের দুটি গ্রুপ তাদের নির্বাচন নিয়ে মুখোমুখি অবস্থানে রয়েছে। সকালের ঘটনাবলীর সময় পুলিশ উপস্থিত থেকে পরিস্থিতি নিয়ন্ত্রনে আনার চেষ্টা করে। এতে দুইপক্ষে কয়েকজন আহত হয়েছেন বলে তিনি জানতে পেরেছেন। ওসি আরও জানান, কোন পক্ষই এ বিষয়ে এখনও মামলা দেয়নি। পরিস্থিতি শান্ত রয়েছে।