স্টাফ রিপোর্টারঃ
ডেনমার্কের রাজকুমারী প্রিন্সেস ম্যারি এলিজাবেথ ডোনাল্ডসন’র আগমন উপলক্ষে নিরাপত্তার চাঁদরে সজ্জিত হয় সাতক্ষীরা।
বুধবার (২৭ এপ্রিল) সকাল সাড়ে ১০ টার দিকে বিমানবাহিনীর হেলিকপ্টার যোগে ডেনিস রাজকুমারী ম্যারি এলিজাবেথ ডোনাল্ডসন কক্সবাজার থেকে সরাসরি সাতক্ষীরা জেলার শ্যামনগর উপজেলায় আগমন করেন।
তার অবতরনের জন্য শ্যামনগরের মুন্সিগঞ্জ ইউনিয়নের টেকনিক্যাল কলেজ মাঠে তিনটি হেলিপ্যাড স্থাপন করা হয়।
রাজকুমারী হেলিকপ্টার থেকে নেমে গাড়িতে চড়ে সংস্কার হওয়া নতুন ইটের রাস্তা দিয়ে প্রায় ৩ কিলোমিটার দূরে সুন্দরবন লাগোয়া গ্রাম কুলতলীতে আগমন করেন।
সেখানে তিনি কয়েক মিনিট পায়ে হাটাহাটি করেন এবং কৃষি ও বনজীবি পরিবারের সাথে কথাবার্তা বলেন।
তিনি কুলতলি গ্রামের পুষ্পা রানী মন্ডল ও শিলা রানী মন্ডলের বাড়িতে পৌছে তিনি তাদের সাথে কথাবার্তা বলেন।
তার আগমনকে ঘিরে নতুন সাজে সজ্জিত হয় সুন্দরবনের উপকূলীয় অজপাড়া গ্রাম মুন্সিগঞ্জের কুলতলী।
রাজকুমারীর আগমনকে ঘিরে
দীর্ঘদিনের জরাজীর্ণ রাস্তাগুলি সংস্কার করে ইট বসানো হয়েছে। আশপাশের বাড়িঘরগুলি নতুন সাজে সেজেছে।
মুন্সিগঞ্জের কুলতলী গ্রামটি
রয়েল বেঙ্গল টাইগারের জন্য আতংকিত। নিকটস্থ চুনা নদী পার হয়ে প্রায়ই এখানে চলে আসে সুন্দরবনের রয়েল বেঙ্গল টাইগার।
পশ্চিম সুন্দরবনের সাতক্ষীরা রেঞ্জ এলাকা ও নিকটস্থ জনপদে আইনশৃংখলা বাহিনীর সদস্যরা নিশ্ছিদ্র নিরাপত্তা নিশ্চিত করে।
২৬ ও ২৭ এপ্রিল দুইদিন সুন্দরবনে কোন ধরনের পেশাজীবি জেলে, বাওয়ালি, মৌয়ালী অথবা দর্শনার্থী পর্যটকদের এলাকায় প্রবেশের উপর নিষেধাজ্ঞা জারি করা হয়।
ইউএনডিপির অর্থায়নে একটি খননকৃত খাল ও এর পানিসেচ এবং খালের ধারের ফসলি ক্ষেত পরিদর্শন করেন, একইসাথে তিনি দাতিনাখালিতে নদীভাঙন এবং নতুন বাঁধ নির্মান কাজও পরিদর্শন করেন। রাজকুমারী ম্যারি জলবায়ু পরিবর্তনজনিত ক্ষয়ক্ষতির মুখে এ অঞ্চলের মানুষের জীবনযাত্রা সম্পর্কে অবহিত হন।
খাবার পানির জন্য নারীদের দীর্ঘ লাইন এবং বহুদূর পায়ে হেটে পানি সংগ্রহের বিষয়টিও তার নজরে আনা হয়।
এসময় নতুন পোশাক পরে কুলতলী গ্রামের গ্রামীন নারীরা তাকে স্বাগত জানান।
রাজকুমারী ম্যারির সফরসূচীর মধ্যে আরো ছিলো ঘূর্নিঝড় আশ্রয়কেন্দ্র পরিদর্শন, জেলে বাওয়ালিদের জীবনযাত্রা দর্শন।
মুন্সিগঞ্জের নৌ পল্টন থেকে স্পীডবোটে চুনা নদীর বুকচিরে কলাগাছিয়া ফরেস্ট টহল ক্যাম্প এলাকায় দর্শন।
সেখানে তিনি দর্শন করেন বাঘের পায়ের চিহ্ন, বাঘের কবর এমনকি মিষ্টি পানির পুকুরে বাঘের পানি খাওয়া।
সুন্দরবনের অনিন্দ্যসুন্দর দৃশ্য অবলোকন করে তিনি ফিরে আসেন মুন্সিগঞ্জের বরসা রিসোর্টে। সেখানে তিনি মধ্যাহ্নভোজে সুন্দরবনের সুস্বাদু মাছ ভেটকি, ভাঙান, পারশে, গলদা চিংড়ী, বাগদা চিংড়ী, ট্যাংরা মাছ সহ কয়েক পদের মাংস দিয়প মধ্যাহ্নভোজ সেরে তিনি ঢাকা ও ডেনমার্ক থেকে আসা মিডিয়াকর্মীদের সাথে মতবিনিময় করেন এবং জলবায়ু পরিবর্তনজনিত ক্ষয়ক্ষতির বিষয়ে তার অভিজ্ঞতার বর্ননা দেন।
সাতক্ষীরা জেলা প্রশাসন ও পুলিশ প্রশাসন কঠর নিরাপত্তা বলয়ের মধ্যদিয়ে বিকালে রাজকুমারী ম্যারি হেলিকপ্টারে ফিরে যান ঢাকার উদ্দেশ্যে।