সুরাইয়া আক্তার সেলিনা স্টাফ রিপোর্টারঃ আজ ১৯ অক্টোবর ২০২৩, বৃহস্পতিবার, সকাল ১১ টায় জাতীয় প্রেসক্লাবের সামনে বিশ্বখাদ্য দিবস উপলক্ষে বাংলাদেশ কৃষক ফেডারেশন এবং ঋণ ও উন্নয়ন বিষয়ক এশীয় গণআন্দোলনের উদ্যোগে খাদ্য, ক্ষুধা, জলবায়ু পরিবর্তন ও পানির প্রশ্নকে গুরুত্ব দিয়ে জাতীয় প্রেসক্লাবের সামনে মানববন্ধন, সমাবেশ ও সানকী মিছিল অনুষ্ঠিত হয়।
বাংলাদেশ কৃষক ফেডারেশনের সভাপতি কমরেড বদরুল আলমের সভাপতিত্বে সমাবেশে বক্তব্য রাখেন বাংলাদেশ কৃষক ফেডারেশনের সাধারণ সম্পাদক জায়েদ ইকবাল খান, বাংলাদেশ জাতীয় শ্রমিক ফেডারেশনে সভাপতি শামিমা আক্তার, আদর্শ নারী ও শিশু কল্যাণ ফাউন্ডেশনের সভাপতি সুরাইয়া আক্তার সেলিনা, মাদারল্যান্ড গার্মেন্টস ওয়ার্কার্স ফেডারেশনের সভাপতি সালেহা ইসলাম সান্তনা, সাধারণ সম্পাদক আল-আমিন হাওলাদার, সাম্যবাদী দলের শ্রমজীবী আন্দোলনের সভাপতি হারুনার রশিদ, বাংলাদেশ শ্রমিক ফেডারেশনের সাধারণ সম্পাদক এএএম ফয়েজ হোসেন, জাগো বাংলাদেশ গার্মেন্টস শ্রমিক ফেডারেশনের সভাপতি বাহারান সুলতান বাহার, নব্বইর গণআন্দোলন এবং আওমালীগের নেতা রাজু আহমেদ,ওয়ার্কার্স পার্টির কেন্দ্রীয় সদস্য আবুল হোসেন,সাম্যবাদী দলের কেন্দ্রীয় সদস্য সুলতান আহমদ বিশ্বাস, লেবার রিসোর্স সেন্টারের সাধারণ সম্পাদক শিবলি আনোয়ার সুমন।
ঋণ ও উন্নয়ন বিষয়ক এশীয়া গণআন্দোলনের সমন্বয়ক লিডি নেকপিল হোয়াটসআ্যপের মাধ্যমে সংহতি জানিয়ে বলেন, খাদ্য ও জ্বালানি মূল্যবৃদ্ধি এবং জলবায়ু পরিবর্তনের অভিঘাতের কারনে পুরো বিশ্ব বড় ধরনের খাদ্য সংকট মোকাবেলা করছে। বহুমূখী সংকট রপ্তানীমূখী শিল্প ও কোরপোরেট নিয়ন্ত্রিত কৃষিখাদ্য ব্যবস্থার মাধ্যমে সৃষ্ট বিশ্বের ক্ষুধা আরো তীব্রভাবে বৃদ্ধি পাচ্ছে। অভ্যন্তরীণ খাদ্য চাহিদাকে প্রাধান্য এবং সকলের জন্য পর্যাপ্ত ও পুষ্টিকর খাদ্যের নিশ্চয়তা প্রদান করে এমন টিকসই খাদ্যব্যবস্থা তিনি দাবী করেন।
সমাবেশের সভাপতি কবমরেড বদরুল আলম তাঁর বক্তব্যে বলেন, ক্ষুধামুক্তির যে লক্ষ্য নিয়ে ১৯৮১ সালে বিশ্বখাদ্য দিবস শুরু হয়েছিল বিশ্ব আজো সেই লক্ষ্যে পোঁছিতে পারে নি। বিশ্বের খুধার্ত মানুষের সংখ্যা ক্রমাগত বেড়েই চলেছে। বর্তমানে বিশ্বে ১০০ কোটির বেশি মানুষ প্রতিদিন না খেয়ে থাকে। অপুষ্টিতে ভুগছে বিশ্বের অর্ধেকের বেশী মানুষ। এ অপুষ্টির শিকার মানুষের অধিকাংশের অবস্থান এশীয়া অঞ্চলে। বিশ্ব হতে খুধা ঝেটিয়ে বিদায় দিতে হলে কোরপোরেট কৃষির উপর নির্ভর না করে কৃষক কেন্দ্রীক পরিবেশ- প্রতিবেশ বান্ধব চাষাবাদ ও খাদ্য সার্বভৌমত্ব প্রতিষ্ঠা করতে হবে। জলবায়ু পরিবর্তন ও কোরোনা সংকটকালে বাংলাদেশের কৃষকদের বিপুল পরিমাণ ফসল উৎপাদনের কৃতিত্বকে স্মরণ করে তিনি বলনে, এটা দু:খজনক যে ঐ কৃষকরাই আজ দুবেলা পেট পুরে খেতে পায় না। তিনি ষাটোর্ধ কৃষকের জন্য এককালীন ভাতা, মাসিক পেনশন ও রেশনিং চালু করার জন্য সরকারের কাছে দাবী করেন।
(২)
জলবায়ু সংকটের জন্য দেশের দক্ষিণ ও উত্তর অঞ্চলের ফসল উৎপাদন হ্রাস পাওয়াসহ নানারকম দুর্যোগের মুখোমুখি হচ্ছে প্রতিনিয়ত বাংলাদেশ। সমুদ্র পৃষ্ঠের উচ্চতা বৃদ্ধি, ফসলি জমিতে লবনাক্ততা বৃদ্ধি, ঋতুচক্রের শৃখংলা ভঙ্গ, অতিমাত্রায় শৈত ও অতিমাত্রায় তাপ প্রবাহ, হিমালয়ে জমাট বরফ গলে উজানে হটাৎ বণ্যা এসবই বাংলাদেশের জন্য গভীর শংকার বিষয়। জলবায়ুর পরিবর্তনের কারনে ক্ষতির দায় বিশ্বের ধনিদেশগুলোর যারা তাদের ভোগবিলাসের কারনে অতিরিক্ত কার্বোন উদগিরন করে বিশ্বের তাপমাত্রা বাড়িয়ে জলবায়ুর পরিবর্তন ঘটাচ্ছে। জলবায়ু পরিবর্তন ও পরিবেশ দূষণের কারণে দুনিয়ায় বিশুদ্ধ পানিরও বিরাট সংকট দেখা দিয়েছে। পানিই প্রাণ, পানিই খাদ্য জানা সত্বেও প্রতিদিন শিল্পবর্জ পানিকে দূষিত করে জনজীবন সংকটাপন্ন করে তুলছে।
বাংলাদেশ বিশ্বের ভুক্তভোগী সম্মূখসারীর দেশগুলোর অন্যতম প্রধান দেশ হিসেবে তার এ যাবৎকাল যত ক্ষয়ক্ষতি হয়েছে তার কাপফারা ধনিদেশগুলো দিতে বাধ্য। এটা তাদের ঐতিহাসিক ও প্রতিবেশগত দায় বলে কমরেড আলম অভিমত ব্যক্ত করেন।
মানববন্ধনে অন্যান্য বক্তারা ক্ষুধামুক্তির লড়াইকে অব্যাহত রাখার আহ্বান জানিয়ে বলেন, কোটি কোটি মানুষ প্রতিদিন ক্ষুধার্ত থাকবে এটা মানবাধিকারের সাথে যায় না। ক্ষুধা ও দারিদ্র্য মুক্তির জন্য সহস্রাব্দ ও স্থায়ীত্বশীল উন্নয়ন লক্ষ্যের যে প্রত্যয় আছে তা শুধু প্রত্যয়ই বলেই থেকে যাচ্ছে। এক্ষেত্রে অগ্রগতি মোটেই হিসেবযোগ্য নয়।
বক্তব্যে আরো বলেন, মৌলিক খাদ্য যেহেতু কৃষকরা উৎপাদন করে তাই কৃষকদের সর্বোচ্চ গুরুত্ব দিয়ে খাদ্য সংক্রান্ত রাষ্ট্রের সকল পলিসি নির্ধারণ করা উচিত। কৃষকদের সুদবিহীন ঋণ, বীজ, বিদ্যুৎ, সার, সেচের ব্যবস্থা করতে হবে। নেতৃবৃন্দ সকলের খাদ্যের অধিকার নিশ্চিত করা।
নারী ও শিশু কল্যাণ ফাউন্ডেশন এর সভাপতি সুরাইয়া আক্তার সেলিনা বলেন পুষ্টিহীনতায় মা ও শিশু ভুগছে, অকালে প্রাণ দিতে হচ্ছে। সে আরও বলেন ভেজাল ছাড়া আমরা কোন খাদ্য পাইনা তাই মাননীয় প্রধানমন্ত্রীর কাছে দাবি তুলে ধরেন।
খাদ্য মানুষের মৌলিক অধিকার।
বেঁচে থাকার জন্য খাদ্যের বিকল্প কিছু নেই ১। খাদ্য উৎপাদন বা বাজার জাত করার ক্ষেত্রে বিষ মুক্ত হতে হবে ২। ভেজাল মেশানো পন্য বিক্রি বন্ধ করতে হবে ৩। যারা খাদ্যের নামে ভেজাল তৈরী বা বাজার জাত করে, তাদেরকে কঠিন শাস্তির ব্যবস্থা করতে হবে ৪। খাদ্যের মুল্য নিয়ে জনগণ বিপদে, তাই দাম সহনীয় পর্যায়ে রাখতে হবে ৫। অসাধু ব্যাবসায়ীদের হাত থেকে জনগণকে রক্ষা করতে হবে ৬। অধিক মুনাফা তাদের কাছে শেষ কথা মানুষের জীবন নয়,তাই সেই দিকে খেয়াল রাখতে হবে ৭। খাদ্য আইন ২০১৩ বাস্তবায়ন করতে হবে ইত্যাদি
এক পর্যায় আমরা জনগণ খাদ্য নিয়ে বিপদে, তাই (খাদ্য ভেজাল মুক্ত বাংলাদেশ চাই)