সোর্স রুবেল মিয়ার ঢিলের আঘাতে প্রাণ গেলো মাদক ব্যবসায়ী শাহ আলমের,এমনটাই দাবি করলেন মৃত শাহ আলমের স্ত্রী হাসিনা বেগম।শাহ আলমের স্ত্রী হাসিনা বেগম ও এলাকাবাসীর তথ্য অনুযায়ী বিভিন্ন সময় শাহ আলমকে পুলিশের কাছে ধরিয়ে দেয়ার ভয় দেখাতো সোর্স রুবেল মিয়া।এছাড়া সোর্স রুবেল মিয়া(৩৫)শাহ আলম এর কাছে টাকা পয়সাও দাবি করত,না দিলে মিথ্যা মামলায় ফাঁসিয়ে দিবে বলে ও হুমকি দিতো।
গত ৩রা সেপ্টেম্বর রাত সাড়ে ৭টার দিকে কাশিমপুর নামা বাজার পালপাড়া মসজিদ সংলগ্ন তুরাগ নদীর পাড়ে বসে ছিল শাহ আলম।ঠিক সেই সময় সোর্স রুবেল মিয়া বলে ওঠলো শাহ আলম আজকে তুকে ধরিয়ে দিবো,পুলিশ আসছে,এগুলো বলেই ধাওয়া শুরু করলো শাহ আলমকে।
এই সময় সোর্স রুবেল মিয়া ও তার সহযোগীদের ধাওয়া খেয়ে তুরাগ নদীতে ঝাপিয়ে পড়ে শাহ আলম। সাঁতারিয়ে নদী পার হওয়ার চেষ্টা করতে থাকে।এই সময় রাস্তা থেকে ইট উঠিয়ে শাহ আলমের মাথায় মারতে শুরু করে সোর্স রুবেল আর সেই ঢিলের আঘাতে শাহ আলম নদীর পানির স্রোতের টানে ডুবে যায়।খবর পেয়ে পুলিশ উপস্থিতি হয়।
পুলিশ এসে দেখেন সোর্স রুবেলকে জনগণ গাছের সাথে বেঁধে মারধর করছেন।পুলিশ জনগনের হাত থেকে রক্ষা করে রুবেলকে গ্রেফতার করেন।
তাৎক্ষণিক ভাবে ডুবুরি দল কে খবর দেয় পুলিশ।ডুবুরীর দল এসে কয়েক ঘন্টা নদীর গভীর তলদেশে অনেক খোঁজা-খুঁজি করার পর ব্যর্থ হয়ে উঠে আসে।
নিঁখোজের দুইদিন পর ৫ই সেপ্টেম্বর সোমবার সকাল ৭ টায় আশুলিয়া থানার আওতাধীন তুরাগ নদীতে শাহ আলমের মরদেহ ভেসে উঠেছে।মরদেহ উদ্ধার করেন কাশিমপুর থানা পুলিশ।
মৃত শাহ আলমের স্ত্রী হাসিনা বেগম এজাহার দায়ের করেন কাশিম পুর থানায়।ঘটনাটি গাজীপুর মহানগরীর কাশিপুর থানাধীন পালপাড়া এলাকার।
এ ঘটনায় পালপাড়া এলাকায় ব্যাপক চাঞ্চল্যের সৃষ্টি হয়।লাশ উদ্ধার করে ময়নাতদন্তের জন্য শহীদ তাজউদ্দিন আহমেদ মেডিকেল কলেজ হাসপাতালে প্রেরন করেছেন কাশিমপুর থানা পুলিশ।
স্বামীর মৃত্যুতে তিন সন্তানকে নিয়ে মানবেতর জীবন যাপন করছেন হাসিনা বেগম(৪০)।
স্থানীয় লোকজন বলেন,সোর্স রুবেল মিয়া,লোকনাথ সহ আরো কয়েকজন শাহ আলমকে ধাওয়া দিয়ে নদীর দিকে নিয়ে যাচ্ছিল।কাউকে যাওয়ার সুযোগ দেয়নি সোর্স রুবেল মিয়া ও তার সহযোগীরা।
নিহত শাহ আলম গাইবান্ধার সুন্দরগঞ্জ থানাধীন মুনমুত কুঠিপাড়া এলাকার মৃত নুকু মন্ডলের সন্তান। তিনি গাজীপুর মহানগরীর কাশিমপুরে নামা বাজার এলাকায় সামাদ হাজির বাড়ীতে ভাড়া থাকতেন বলে জানা যায়।এক ছেলে ও দুই কন্যার জনক ছিলেন শাহ আলম।
শাহ আলমের স্ত্রী হাসিনা বেগম বলেন,আমার স্বামী একজন ক্ষুদ্র ব্যবসায়ী এবং আমি মেসে রান্না করে জীবন চালাই।হত্যাকারীরা আমার স্বামীকে প্রায়ই পুলিশের ভয় দেখাতো।৩রা সেপ্টেম্বর সারাদিন শাহ আলম বাসায় ছিলেন।বিকালে মালামাল কেনার জন্য ১২ হাজার টাকা নিয়ে বাড়ির পাশের দোকানে যায়। সেখানে আগে থেকে উৎপেতে থাকা সোর্স রুবেল মিয়া,লোকনাথ ও লাল মিয়ারা আমার স্বামীকে ধাওয়া দেয়।
এমনকি আমাকেও প্রাণনাসের ভয় দেখিয়ে
হত্যাকারীরা বলে,তোমার স্বামী পুলিশের ধাওয়া খেয়ে নদী পার হয়ে গেছে।পরে নদীর এপার ওপার আশে-পাশে অনেক খুঁজা/খুঁজি করে না পেয়ে,তাদের কে,আবার জিজ্ঞেস করে জানতে পারি রুবেল মিয়াদের ইটের আঘাতে আমার স্বামী নদীতে ডুবে গেছে।দুইদিন পর ৫ই সেপ্টেম্বর রোজ সোমবার আশুলিয়ার তুরাগ নদী হতে আমার স্বামীর লাশ উদ্ধার হয়।
উদ্ধারের পর আমার স্বামীর শরীরের বিভিন্ন স্থানে আঘাতের চিহ্ন দেখতে পাই।পরবর্তীতে জানতে পারি আমার স্বামীকে পরিকল্পিত ভাবে হত্যা করে নদীর পানিতে ফেলে দেওয়া হয়েছে।স্বামীকে হারিয়ে আমি খুবই নিঃস্ব,মানবেতর জীবন যাপন করছি।আমি স্বামী হত্যার সুষ্ঠু বিচার চাই।
এবিষয়ে তদন্তকারী কর্মকর্তা উপ-পরিদর্শক(এসআই) আবু হানিফ বলেন,১নং আসামীকে গ্রেফতার করে থানা হাজতে প্রেরণ করা হয়েছে।আদালত আসামীকে দুই দিনের রিমান্ড দিয়েছে।হত্যার মূল কারণ জানতে চাইলে তিনি বলেন,মামলা শেষ না হওয়া পর্যন্ত আমি আপনাকে সব তথ্য দিতে পারবো না।
কাশিমপুর থানার অফিসার ইনচার্জ রাফিউল করিম বলেন,এ বিষয়ে তদন্ত চলছে।মামলাটি তদন্ত ও প্রক্রিয়াধীন রয়েছে।
আগামী পর্বে বিস্তারিত জানতে
মাতৃজগত টিভির পর্দায় চোখ রাখুন