বৃহস্পতিবার, ০৫ ডিসেম্বর ২০২৪, ০৬:২৬ অপরাহ্ন

”স্বপ্নের শহর বরিশালের উন্নয়ন থমকে দাঁড়িয়েছে”

রিপোর্টারের নাম
  • আপডেট টাইম : সোমবার, ৩০ সেপ্টেম্বর, ২০২৪
  • ২৩ বার পঠিত

নিজস্ব প্রতিবেদকঃ প্রাচ্যের ভেনিস বলা হয় বরিশালকে। অনেক ইতিহাস মন্ডিত ও শিল্প-সংস্কৃতি এবং বিপ্লবের জেলা বরিশাল। এই বরিশালে জন্মেছেন অনেক জ্ঞ্যানী ও গুণীজন, যারা দেশ তথা আন্তর্জাতিকভাবে কাজ করে গেছেন। গত কয়েক বছর যাবত সেই স্বপ্নের শহরের উন্নয়ন থমকে দাঁড়িয়েছে। আবাসন শিল্প তথা স্থাপত্য শিল্প প্রায় বন্ধের পথে। যতটুকু চলছে তা প্রয়োজনের তুলনায় খুবই কম।কারণ বিভিন্ন জেলা থেকে কাজের জন্য প্রচুর লোক বরিশাল আসছে। সেই তুলনায় নেই তাদের পর্যাপ্ত আবাসন।

 

শুধুমাত্র আবাসন নয়, রাস্তাঘাট,পানি নিষ্কাশন, পার্ক, মাঠ, হাট-বাজার সকল ক্ষেত্রের কাঠমোগত উন্নয়নে স্থবিরতা চলছে। স্থাপত্য শিল্পের সাথে ঝাড়ু থেকে শুরু করে লোহা, গুনা, টাইলস, রং, কাঠ, বাঁশ- কত ব্যবসা জড়িত। সেই সকল ব্যবসায়ও নেমেছে ধস। কত শ্রমিকের কাজ নেই, যা ছিল এই শহরের অর্থনৈতিক চাকা। বিশেষ করে আবাসন শিল্প ত্বরান্বিত করার জন্য বরিশাল সিটি কর্পোরেশনের অনুমতি প্রয়োজন। এই অনুমতি পেতে কয়েক বছর আগেও প্রয়োজন ছিল মাত্র ৭ থেকে ১৫ দিন। যা পরবর্তীতে রূপ নেয় জটিলতায়। মাসের পর মাস চলে গেলেও পাচ্ছে না অনুমোদন।

 

বরিশালবাসীর জন্য বিভিন্ন সময় চাপানো হয় এক এক নিয়ম। সমস্ত বাংলাদেশের পৌরসভা, ইউনিয়ন পরিষদ, ঢাকা সিটি কর্পোরেশন বাদে অন্যান্য সকল সিটি কর্পোরেশন গুলোতে “ইমারত নির্মাণ বিধিমালা -১৯৯৬” এর আইন এ প্লানের অনুমোদন হয়। ঢাকা সিটি কর্পোরেশন এ “ঢাকা ইমারত নির্মাণ বিধিমালা-২০০৮” এর নিয়ম এখন পর্যন্ত চলমান। কিন্তু কয়েক বছর আগে বরিশালের মানুষের উপরেও “ঢাকা ইমারত নির্মাণ বিধিমালা ২০০৮” চাপিয়ে দেয়া হয়েছিল। এর জন্য ভূমি ছাড়পত্র নেয়ার পদ্ধতিও চালু হয়েছিল। অনুমোদনের আগেই নিতে হত ভূমি ছাড়পত্র। সময় লাগিয়ে দিত ২-৩ মাস এবং বরিশাল সিটি কর্পোরেশনে নিয়োগ দেয়া হয়েছিল অপরিণত কর্মকর্তাদের, যারা বৈষম্যযুক্ত ভাবে প্লান অনুমোদনের দায়িত্ব পালন করেছে। বরিশালবাসির সম্পূর্ণ প্লানের অনুমোদন পেতে সময় লেগে যেত ছয় মাস থেকে এক বছর।

 

২০২৩ সালে মেয়র পরিবর্তন হওয়ায় আবার ১৯৯৬ এর ইমারত নির্মাণ বিধিমালায় ফেরত গিয়েছে, কিন্তু ভূমি ছাড়পত্রের নিয়ম বাতিল করেনি। গত এক বছরে কয়েক হাজার প্ল্যান জমা পড়লেও ২০০টির বেশি অনুমোদন দেয়া হয়নি। একটি বিভাগীয় শহর / সিটি কর্পোরেশন এ এক বছরে ২০০ টি প্লান খুবই সামান্য।

 

বরিশাল সিটি কর্পোরেশন প্রতিবছর হারাচ্ছে শত কোটি টাকা রাজস্ব।সেই রাজস্ব বরিশালের রাস্তাঘাট, বাজার উন্নয়নে বিশেষ ভূমিকা পালন করতে পারত। কারণ একটি প্ল্যানের অনুমোদনের সাথে জড়িত ট্যাক্স,পানির ট্যাক্স, হোল্ডিং ট্যাক্স আরো কিছু টেক্স।কোন এক অজানা কারণে সেই প্লানের অনুমোদনে বাড়িয়েছে জটিলতা, হয়রানির শিকার হচ্ছে বরিশালবাসি। অনুৎসাহিত হচ্ছে আবাসন শিল্প।

 

গত ৫ই আগস্ট বৈষম্য বিরোধী ছাত্র আন্দোলনের জন্য সরকার পতনের পরে শোনা গিয়েছিল, যে প্ল্যানগুলো নিয়মের মধ্যে আছে তা খুব তাড়াতাড়ি ছেড়ে দেয়া হবে। যাতে নাগরিক সুবিধা বৃদ্ধি পায়। কিন্তু ৪৫ দিন অতিবাহিত হয়ে যাওয়ার পরেও প্লানের অনুমোদনের কোনো সুরাহা হয়নি। আসলে বরিশালের আবাসন শিল্পের ভবিষ্যৎ কোথায়? কিভাবে হবে বৈষম্য মুক্ত?

নিউজটি শেয়ার করুন

Leave a Reply

Your email address will not be published.

এ জাতীয় আরো খবর..
এই পত্রিকার সকল সংবাদ, ছবি ও ভিডিও স্বত্ত্ব সংরক্ষিত © ২০২১ দৈনিক মাতৃজগত    
কারিগরি সহযোগিতায়ঃ Bangla Webs
banglawebs999991