ব্যুরো রাজশাহী:
রাজশাহীতে রেজাউর রহমান শুভ নামে এক ব্যক্তির বিরুদ্ধে স্ত্রীকে ভয়াবহ নির্যাতন, পরকীয়া সম্পর্ক এবং পরিকল্পিত ষড়যন্ত্রের অভিযোগ এনেছেন তার স্ত্রী ।
সোমবার (২৬ মে) রাত ৮ টায় বিভাগীয় প্রেসক্লাব রাজশাহীর হলরুমে সংবাদ সম্মেলনের মাধ্যমে অপকর্মের নানা তথ্য ভুক্তভোগী স্ত্রী জান্নাতুল ফেরদৌস চৈতি।
লিখিত বক্তব্যে চৈতি বলেন, প্রায় ১৬ বছর আগে ইসলামী শরীয়াহ মোতাবেক শুভর সঙ্গে বিবাহ বন্ধনে আবদ্ধ হন তিনি। তাদের সংসারে এক কন্যা সন্তানের জন্ম হয়। কিন্তু বিবাহের পর থেকেই শুভ যৌতুকের জন্য চৈতির বাবার কাছে চাপ প্রয়োগ করতে থাকেন। ইতোমধ্যে ৮ লক্ষ টাকা গ্রহণ করার পরও শুভ আরও টাকার জন্য চাপ সৃষ্টি করে এবং টাকার অভাবে চৈতিকে শারীরিক ও মানসিকভাবে নির্যাতন করে।
চৈতি বলেন, শুভ একাধিক নারীর সঙ্গে পরকীয়া সম্পর্কে জড়িয়ে পড়েন। তার মধ্যে মাহাবুব খাতুন নীলা নামের এক নারীর সঙ্গে গভীর প্রেমের সম্পর্ক গড়ে উঠে। এই সম্পর্কের জের ধরেই তারা পরিকল্পিতভাবে নিরীহ শিক্ষক মজনু আহমেদ সাগরকে অস্ত্র ও মাদকের মিথ্যা মামলায় ফাঁসিয়ে দেন। এই ষড়যন্ত্রে রাজশাহীর র্যাব কর্মকর্তা মোস্তাফিজও জড়িত বলে দাবি করেন তিনি।
এছাড়াও চৈতি জানান, তিনি তার স্বামীর ওয়ারড্রব থেকে একটি আগ্নেয়াস্ত্র ও বুলেট উদ্ধার করেন। ঘটনা জানতে পারার পর শুভ তাকে মারধর করেন এবং প্রাণনাশের হুমকি দেন। এমনকি চৈতির পিতাকে গুলি করে হত্যার হুমকি দেন বলেও অভিযোগ করেন তিনি।
চৈতি বলেন, “আমি আমার পরিবার ও সন্তানের নিরাপত্তাহীনতায় ভুগছি। আমি একজন অসহায় পিতার মেয়ে। আমি প্রধান উপদেষ্টার হস্তক্ষেপ চাই। র্যাব, পুলিশ, আরএমপি কমিশনার, মানবাধিকার সংস্থার কাছে আমি ন্যায়বিচার প্রার্থনা করছি।”
সংবাদ সম্মেলনে তিনি এই বিষয়টি তদন্তপূর্বক দোষীদের দৃষ্টান্তমূলক শাস্তির দাবি জানান।
জানা যায়, গত ২৪ মে জান্নাতুল ফেরদৌস চৈতির বাবা মো শহীদ বাদী হয়ে যৌতুকের কারণে মারধর এবং নারী ও শিশু নির্যাতন আইনে রেজাউর রহমান শুভর বিরুদ্ধে রাজপাড়া থানায় মামলা দায়ের করেন। পরবর্তীতে রাজপাড়া থানা পুলিশ শুভকে গ্রেফতার করে।
উল্লেখ্য, মাহবুবা খাতুন নীলা তার পরকীয়া প্রেমিকের যোগসাজসে মজনু আহমেদ সাগরকে মাদক ও অস্ত্র দিয়ে ফাঁসিয়ে জেলে পাঠানোর পর। নারী নির্যাতন, চেক মামলা, হয়রানিসহ একাধিক মামলা দায়ের করে।
এ বিষয়ে মজনু আহমেদ সাগরের সাথে মুঠোফোনে যোগাযোগ করা হলে তিনি বলেন, আমার সাথে দীর্ঘদিন ধরে অন্যায় হয়ে আসছে। প্রথমে আমাকে মাদক ও অস্ত্র দিয়ে ফাঁসানো হয়। এরপর একাধিক মিথ্যা মামলা দেওয়া হয় । সর্বশেষ বোয়ালিয়া থানায় একটি মামলা দায়ের করে। আমি এই বিষয়ে নিয়ে স্বরাষ্ট্র উপদেষ্টা, জেলা প্রশাসক, বিভাগীয় কমিশনার, আরএমপি কমিশনার, র্যাব অফিসে অভিযোগ দায়ের করেছি। এখনও তদন্ত আসেনি , তদন্ত হলে সত্য বেরিয়ে আসবে।
এব্যাপারে পরকিয়া প্রেমিকা নীলার নাম্বারে একাধিকবার ফোন করেও তাকে পাওয়া যায় নি।তবে অস্ত্র ও মাদক দিয়ে ফাঁসানোর ব্যাপার নিয়ে র্যাব সদস্য মুস্তাফিজুর এর সরকারি নাম্বারে ফোন দিলে কথা হয় অন্য একজনের সাথে। তিনি জানান, বর্তমানে মোস্তাফিজুর এখানে এখন নেই, তার বদলি হয়ে গেছে।