রবিবার, ১৬ মার্চ ২০২৫, ০৩:৫৬ অপরাহ্ন
ঘোষনা
সহস্রাধিক রোজাদারকে নিয়ে ইফতার করলেন সাবেক যুবদল নেতা হাবিবুর রহমান রাব্বি মহানগর উত্তর বিএনপি’র পক্ষ থেকে পল্লবী ৩,নং ওয়ার্ডে ইফতার বিতরণ। সংস্কারের নামে নির্বাচন পেছানোর সুযোগ নেই- আমিনুল হক বাংলাদেশ সেন্ট্রাল প্রেসক্লাব ও মাতৃজগত পরিবারের পক্ষ থেকে ইফতার সামগ্রী বিতরণ গোদাগাড়ীতে ৫ কেজি হেরোইন জব্দ, দুই নারী গ্রেপ্তার মহানগর উত্তর বিএনপি’র পক্ষ থেকে ক্যান্টনমেন্ট থানার ইফতার বিতরণ ঘুসের ৩৭ লাখ টাকাসহ গভীর রাতে গাইবান্ধার নির্বাহী এলজিইডির প্রকৌশলী আটক শিবগঞ্জে  বাক প্রতিবন্ধীকে  ধর্ষণের অভিযোগে আটক ৩ সন্ত্রাস নৈরাজ্যের প্রতিবাদ ও মাগুরায় শিশু আছিয়ার ধর্ষণকারীর বিচারের দাবিতে রাজধানীর মোহাম্মদপুরে শ্রমিকদলের বিক্ষোভ ঠাকুরগাঁওয়ে ২ ইটভাটায় জরিমানা এবং ৭ দিনের মধ্যে ভেঙ্গে ফেলার নির্দেশ

স্মৃতি বিজড়িত মুক্তিযুদ্ধের জমিদার বাড়ি সংরক্ষণের দাবি।

রিপোর্টারের নাম
  • আপডেট টাইম : মঙ্গলবার, ১৫ নভেম্বর, ২০২২
  • ১৮৪ বার পঠিত

জহিরুল হক জহির স্টাফ রিপোর্টার:-

বাকেরগঞ্জ,বরিশাল

মুক্তিযুদ্ধের স্মৃতি বিজড়িত বরিশাল জেলার বাকেরগঞ্জ উপজেলার রঙ্গশ্রী ইউনিয়নের শ্যামপুর গ্রামের কুমুদ বন্ধু রায় চৌধুরী নাটু বাবুর জমিদার বাড়ি। ১৯৭১ সালের ৭ মার্চ বঙ্গবন্ধু শেখ মুজিবুর রহমানের ঐতিহাসিক ভাষণের পর এই বাড়িটি ও জমিদার পরিবারের প্রতিষ্ঠিত শ্যামপুর মাধ্যমিক বিদ্যালয়ে গড়ে তোলা হয় মুক্তিযোদ্ধাদের ক্যাম্প। ২৫শে মার্চ যুদ্ধ শুরুর পর বরিশাল অঞ্চলের মুক্তিযোদ্ধাদের অভয়াশ্রমে পরিণত হয়েছিল জমিদার বাড়িটি। এখানে বসেই মুক্তিযুদ্ধের পরিকল্পনা করা হতো।

 

১৬শ শতকের দিকে এ জমিদার বাড়িটি প্রতিষ্ঠা করেন প্রসন্ন কুমার রায় চৌধুরী। ১৯ শতকের গোড়ার দিক পর্যন্ত জমিদারির ধারাবাহিকতা বজায় রাখেন তাদের পঞ্চম বংশধর কুমুদ বন্ধু রায় চৌধুরী (নাটু বাবু)।

 

১৯৭১ সালের ৭ মার্চ বঙ্গবন্ধুর ঐতিহাসিক ভাষণের পর একজন জমিদার পরিবারের সন্তান হয়েও তিনি (নাটু বাবু) নিজ গ্রাম শ্যামপুরে মুক্তিযুদ্ধের জন্য সংগঠিত করতে থাকেন মুক্তিযোদ্ধাদের। জমিদার পরিবারের প্রতিষ্ঠিত শ্যামপুর মাধ্যমিক বিদ্যালয়ে গড়ে তোলেন মুক্তিযোদ্ধাদের ক্যাম্প।

 

জমিদার হওয়ায় মুক্তিযোদ্ধাদের আর্থিক সহায়তা থেকে শুরু করে সকল প্রকার সহায়তা করেছেন জমিদারি কোষাগার থেকে। মুক্তিযুদ্ধের অসামান্য অবদান রাখা নাটু বাবু বেশিদিন বাঁচতে পারেননি। স্বাধীনতার মাত্র দুই বছরের মধ্যে ১৯৭৩ সালে তাকে হত্যা করে স্থানীয় রাজাকার হাশেম আলী ও তার সহযোগীরা। যুদ্ধকালীন ১৫ নভেম্বর স্থানীয় রাজাকারদের সাথে নিয়ে ওই বাড়িটিতে আক্রমণ চালায় পাকবাহিনী। সেইদিন সম্মুখ যুদ্ধে তিনজন মুক্তিযোদ্ধা শহীদ হন। আর মুক্তিবাহিনীর আক্রমণে ২১ জন পাক সেনা নিহত হয়। ওই যুদ্ধে ৩৫ জন নিরীহ গ্রামবাসীকে নির্বিচারে হত্যা করেছিল নরপিচাশ পাকবাহিনীর সদস্যরা।

 

নাটু বাবুর স্ত্রী ছায়া রায় চৌধুরী জানান, ১৯৭৩ সালে তার স্বামীকে হত্যার পর তিনি বঙ্গবন্ধুর সাথে দেখা করেছেন। ওইসময় বঙ্গবন্ধু শেখ মুজিবুর রহমান নাটু বাবুর হত্যার বিচারে আশ্বাস দিয়েছিলেন। পাশাপাশি তার সাথে থাকা পাঁচ মাস বয়সের শিশু পুত্র বিপ্লবকে বঙ্গবন্ধু কোলে তুলে নিয়ে নাটু বাবুর চার সন্তানের ভরন পোষণের দায়িত্ব নিয়েছিলেন। জাতির পিতার এমন সহায়তার আশ্বাস পেলেও তা বেশিদিন টিকে থাকেনি। ১৯৭৫ এর ১৫ আগস্ট জাতির পিতা বঙ্গবন্ধু শেখ মুজিবুর রহমানকে স্ব-পরিবারে হত্যার পর আবারও অন্ধকার নেমে আসে জমিদার পরিবারে।

 

ছায়া রায় চৌধুরী আরও বলেন, বঙ্গবন্ধুর হত্যার পর মাথা চাড়া দিয়ে ওঠে স্বাধীনতা বিরোধীরা। এরপর থেকে নানাভাবে হয়রানি শুরু করে নাটু বাবুর পরিবারকে। যার ধারাবাহিকতা এখনও চলমান রয়েছে। সেই পরিবারটি স্বাধীন বাংলাদেশে স্বাধীনতা বিরোধীদের হাতে আজও নিগৃত। জমিদার পরিবারের প্রতিষ্ঠিত শ্যামপুর মাধ্যমিক বিদ্যালয়ের নামকরণ পরিবর্তন নিয়ে দেখা দেয় নানান রকম প্রতিবন্ধকতা। প্রধান মন্ত্রী শেখ হাসিনার সুদৃষ্টিতে ২০২২ সালের ৮ সেপ্টেম্বর (বৃহস্পতিবার) বিদ্যালয়টির নাম ফলক উন্মোচন হয়। বিদ্যালয়টি প্রতিষ্ঠার নব্বই বছর পরে শহিদ কুমুদ বন্ধু রায় চৌধুরী নাটু বাবু মাধ্যমিক বিদ্যালয় হিসেবে নামকরন করা হয়েছে। একটি মুক্তিযুদ্ধ স্মৃতিসৌধ নির্মান করা হয়েছে।

 

তবে স্বাধীনতার পরবর্তী আদৌ সংরক্ষিত হয়নি মহান মুক্তিযুদ্ধের স্মৃতি বিজড়িত তাদের এই জমিদার বাড়িটি। বরং কালের সাক্ষী হয়ে থাকা তাদের (জমিদার পরিবারের) বাড়িটি দখল করার জন্য মরিয়া হয়ে উঠেছে স্থানীয় স্বাধীনতা বিরোধী ও তাদের সহযোগীরা এমন অভিযোগ রয়েছে। অযত্নে-অবহেলায় নিশ্চিহ্ন হচ্ছে জমিদারবাড়ি। ৬ দশমিক ৬৯ একর জমির ওপর গড়ে তোলা বাড়িটির মূল দোতলা ভবনটি সংস্কারের অভাবে জরাজীর্ণ হয়ে পড়েছে। বাড়িতে ঢোকার মূল ফটকেরও একই অবস্থা। মূল দোতলা ভবনটিতে বাস করছেন কুমুদ বন্ধু রায় চৌধুরীর স্ত্রী ছায়া রায় চৌধুরী। বাড়ির ভেতরে বড় একটি দিঘি, একটি পুকুর ও বাগান আছে। এই পরিবারের জমির ওপর মাধ্যমিক উচ্চবিদ্যালয়, প্রাথমিক বিদ্যালয়, শ্যামপুর বাজার, মসজিদ, ঘূর্ণিঝড় আশ্রয়কেন্দ্র, বীর মুক্তিযোদ্ধা মার্কেট, বধ্যভূমি স্মৃতিসৌধসহ নানা স্থাপনা গড়ে উঠেছে।

 

সরকারকে মুক্তিযুদ্ধের স্মৃতি বিজড়িত এই বাড়িটি সংরক্ষণ করার দাবি জানান, কুমুদ বন্ধু রায় চৌধুরী নাটু বাবুর পরিবার সহ বাকেরগঞ্জ বাসি।

 

 

 

 

নিউজটি শেয়ার করুন

Leave a Reply

Your email address will not be published. Required fields are marked *

এ জাতীয় আরো খবর..
এই পত্রিকার সকল সংবাদ, ছবি ও ভিডিও স্বত্ত্ব সংরক্ষিত © ২০২১ দৈনিক মাতৃজগত    
Developed By Bangla Webs
banglawebs999991