
শফিকুল রহমান
বাংলাদেশ জাতীয়তাবাদী দল (বিএনপি)-এর উপদেষ্টা কমিটির সদস্য ও বিশিষ্ট জনস্বাস্থ্য ও পুষ্টি বিশেষজ্ঞ ড. জিয়াউদ্দিন হায়দার আজ কক্সবাজারে ব্র্যাক কর্তৃক বাস্তবায়িত এবং বিশ্বব্যাংকের আর্থিক সহায়তায় পরিচালিত ‘PLEASE’ (Plastic Waste Recycling for Livelihood, Environment and Sustainability Enhancement) প্রকল্প পরিদর্শন করেন।
তাঁর সঙ্গে ছিলেন বিএনপির বৈদেশিক সম্পর্ক বিষয়ক কমিটির বিশেষ সহকারী ও গবেষক ড. সাইমুম পারভেজ।
—
প্লাস্টিক বর্জ্য ব্যবস্থাপনায় উদ্ভাবনী মডেল
PLEASE প্রকল্পটি বাংলাদেশের অন্যতম পরিবেশবান্ধব ও উদ্ভাবনী উদ্যোগ, যার লক্ষ্য — প্লাস্টিক বর্জ্যকে টেকসই অর্থনৈতিক কর্মকাণ্ডে রূপান্তর করা। প্রকল্পটি সচেতনতা সৃষ্টির মাধ্যমে নাগরিকদের বর্জ্য পৃথকীকরণে উৎসাহিত করছে, নিরাপদ নিষ্পত্তি নিশ্চিত করছে এবং পুনর্ব্যবহৃত প্লাস্টিক দিয়ে জলবায়ু সহনশীল মানসম্পন্ন আসবাবপত্র তৈরি করছে।
এই উদ্যোগটি কেবল পরিবেশ সুরক্ষাই নয়, বরং সামাজিক সচেতনতা বৃদ্ধি, কর্মসংস্থান সৃষ্টি ও স্থানীয় অর্থনীতিকে সক্রিয় করার এক অনন্য উদাহরণ।
—
ড. হায়দারের বক্তব্য: “বর্জ্য ব্যবস্থাপনাকে জাতীয় অগ্রাধিকারে আনতে হবে”
পরিদর্শন শেষে ড. জিয়াউদ্দিন হায়দার বলেন,
> “বিএনপি তার ৩১ দফা রাষ্ট্র মেরামতের এজেন্ডা-তে পরিবেশ ও জলবায়ু পরিবর্তন মোকাবেলাকে বিশেষ অগ্রাধিকার দিয়েছে। এর অংশ হিসেবে দেশব্যাপী বর্জ্য সংগ্রহ, পৃথকীকরণ, নিরাপদ নিষ্পত্তি ও পুনর্ব্যবহারের একটি সমন্বিত জাতীয় ব্যবস্থা প্রতিষ্ঠা করা হবে।”
তিনি আরও বলেন,
> “বর্তমান বাংলাদেশে বর্জ্য ব্যবস্থাপনা প্রায় অদৃশ্য। রাস্তা, নদী ও খালের পাশে বর্জ্য ফেলার ফলে পরিবেশ দূষণ, রোগবালাই ও অর্থনৈতিক ক্ষতি হচ্ছে। তারেক রহমানের নেতৃত্বে বিএনপি এই অচলাবস্থা ভাঙবে। আমরা এমন একটি বাংলাদেশ গড়তে চাই, যেখানে প্রতিটি নাগরিকের অংশগ্রহণে বর্জ্য সম্পদে পরিণত হবে।”
—
PLEASE প্রকল্পের অভিজ্ঞতা দেশের মডেল হতে পারে
ড. হায়দার উল্লেখ করেন, কক্সবাজারের এই প্রকল্পের অভিজ্ঞতা থেকে শেখার অনেক কিছু রয়েছে।
> “যদি এই মডেল প্রমাণিতভাবে কার্যকর ও অর্থনৈতিকভাবে টেকসই হয়, তবে এটি দেশব্যাপী সম্প্রসারণের উদ্যোগ নেওয়া যেতে পারে। কক্সবাজারের এই অভিজ্ঞতা বাংলাদেশের টেকসই বর্জ্য ব্যবস্থাপনায় এক অনন্য দৃষ্টান্ত হয়ে উঠতে পারে।”
—
নারী ও তরুণদের অংশগ্রহণে ‘টেকসই উন্নয়নের রূপ’
পরিদর্শনকালে ড. হায়দার প্রকল্পে কর্মরত নারী ও তরুণ কর্মীদের সঙ্গে কথা বলেন এবং তাঁদের প্রশংসা করেন।
> “এই প্রকল্পের মাধ্যমে নারী ও তরুণেরা বিকল্প আয়ের সুযোগ পাচ্ছেন। একদিকে পরিবেশ রক্ষা হচ্ছে, অন্যদিকে কর্মসংস্থান তৈরি হচ্ছে—এটাই টেকসই উন্নয়নের প্রকৃত রূপ,” তিনি বলেন।
—
‘Green Bangladesh’ গঠনের অঙ্গীকার
ড. হায়দার ঘোষণা দেন,
> “বিএনপি সরকার গঠন করলে প্রতিটি পৌরসভা, উপজেলা ও ইউনিয়ন পর্যায়ে বর্জ্য ব্যবস্থাপনা কেন্দ্র স্থাপন করা হবে। সেখানে স্থানীয় সরকার, বেসরকারি খাত ও জনগণ একসঙ্গে কাজ করবে। এভাবেই আমরা গড়ে তুলব একটি ‘Green Bangladesh’, যেখানে পরিবেশ, স্বাস্থ্য ও অর্থনীতি একে অপরের পরিপূরক হবে।”
—
রাষ্ট্র মেরামতের এজেন্ডা: একটি জাতীয় পুনর্জাগরণের রূপরেখা
তিনি আরও বলেন,
> “তারেক রহমানের নেতৃত্বে বিএনপির রাষ্ট্র মেরামতের এজেন্ডা কেবল রাজনৈতিক সংস্কার নয়—এটি একটি জাতীয় পুনর্জাগরণের রূপরেখা। যেখানে স্বাস্থ্য, শিক্ষা, খাদ্য, পরিবেশ, কর্মসংস্থান এবং ডিজিটাল রূপান্তর একে অপরের সঙ্গে সম্পর্কিত থাকবে। সেই লক্ষ্যেই আমরা মাঠে নেমেছি—শিখছি, পর্যবেক্ষণ করছি এবং সফল মডেলগুলো ভবিষ্যতের রাষ্ট্র পরিকল্পনায় অন্তর্ভুক্ত করছি।”
—
উপসংহার
ড. জিয়াউদ্দিন হায়দার আশা প্রকাশ করেন,
> “পরিবেশ ও বর্জ্য ব্যবস্থাপনা ক্ষেত্রে বাংলাদেশ একদিন দক্ষিণ এশিয়ার অন্যতম উদাহরণ হয়ে উঠবে—যদি রাজনৈতিক সদিচ্ছা, প্রযুক্তি, স্থানীয় উদ্ভাবন ও জনগণের অংশগ্রহণ একসাথে কাজ করে। স্বাস্থ্যসম্মত ও টেকসই বাংলাদেশ গড়াই এখন আমাদের জাতীয় অঙ্গীকার।”