
কলকাতা: সোমবার, ২৭শে অক্টোবর,
বিহারী সম্প্রদায়ের অন্যতম প্রধান উৎসব ছট পুজো পালিত হলো কলকাতার বিভিন্ন ঘাটে।
প্রশাসনের কড়া পুলিশি পাহারায় এবং কঠোর নজরদারির মধ্যে দিয়ে ভক্তরা নিষ্ঠা ও ভক্তিভরে এই পুজো সম্পন্ন করেন।
প্রশাসনের কড়া নজরদারি ও ব্যবস্থাপনায় উৎসব
বিহারী সম্প্রদায়ের এই বড় উৎসবকে কেন্দ্র করে সকাল থেকেই শহরের বিভিন্ন গুরুত্বপূর্ণ রাস্তায় ব্যারিকেড করে দেয় প্রশাসন। পুণ্যার্থীদের ভিড় সামাল দিতে এবং শৃঙ্খলা বজায় রাখতে ঘাটে ঘাটে কড়া পুলিশি পাহারা ছিল চোখে পড়ার মতো। সন্ধ্যা নামার সাথে সাথে পুলিশের তৎপরতা আরও বাড়ে। ঘাটের চারপাশে পুলিশি নজরদারির পাশাপাশি দূর থেকে নৌকায় করে পুলিশ অফিসারদের মাইকিং করতে দেখা যায়। বারবার সকলকে নিরাপত্তা বজায় রাখা, শিশুদের জলের ধারে না আনা এবং পুজো শেষে অন্যদের সুযোগ করে দেওয়ার জন্য সতর্ক করা হয়।
সমাজসেবী ও প্রশাসনের সহায়তা
পূজা উপলক্ষে বিভিন্ন ঘাটে সমাজসেবীরা মঞ্চ তৈরি করে আগত দর্শনার্থীদের হাতে পুজোর উপকরণ, জল, দুধ, লস্যি সহ বিভিন্ন সামগ্রী তুলে দেন। সবার জন্য ছট পুজোর শুভেচ্ছা বার্তাও দেওয়া হয়। উৎসবে উপস্থিত সমাজসেবী রাহুল সিনহাও ছট পুজো যাত্রীদের শুভেচ্ছা জানান এবং এই উৎসবের গুরুত্ব তুলে ধরেন।
ঘাট পরিদর্শনে আসা পুণ্যার্থীরা মুখ্যমন্ত্রী মমতা বন্দ্যোপাধ্যায়ের প্রতি কৃতজ্ঞতা জানান। তাঁদের বক্তব্য, মুখ্যমন্ত্রীর উদ্যোগেই তাঁদের ছট পুজো আরও আলোকিত হয়ে উঠেছে। পাশাপাশি, সুষ্ঠু আয়োজনের জন্য প্রশাসন ও পৌরসভাকে ধন্যবাদ জানান তারা।
ঐতিহ্য ও ভক্তিভরে পুজো
আজ ও কাল দুই দিন ধরে ছট উৎসব পালিত হচ্ছে। বাঙালির দুর্গাপূজার মতো বিহারী সম্প্রদায়ের কাছে এই উৎসব বড় মিলনক্ষেত্র। বহু আত্মীয়-স্বজনকে এই উপলক্ষে কলকাতায় আসতে দেখা গেছে।
ছট পুজোতে বহু মানুষ মানত করে থাকেন। এদিন ঘাটে পুজো দিতে আসা অনেক দর্শনার্থীকে সারা রাস্তায় গণ্ডি কাটতে কাটতে ঘাটে পৌঁছাতে দেখা যায়। বাঙালির দুর্গাপূজা ও কালীপূজার মতোই এই উৎসবে বিহারী সম্প্রদায় বিভিন্ন বাদ্যি-বাজনা সহকারে ঘাটে পুজো দিতে আসেন। হাজার হাজার পুণ্যার্থী বিভিন্ন ঘাটে ভিড় করে স্নান শেষে সূর্যদেবতাকে প্রণাম ও কলাকাঁদি স্নান করিয়ে অর্ঘ্য প্রদান করেন। ভক্তি ও নিষ্ঠায় ঘাটে ঘাটে নেমে আসে জনসমুদ্র। দুপুর গড়িয়ে বিকেল হতেই ভিড় বাড়তে থাকে এবং সন্ধ্যা নামার সঙ্গে সঙ্গে ঘাটে ঘাটে এক জনসমুদ্রে পরিণত হয়।
— নিজস্ব প্রতিনিধি, নয়ন রায়। (তথ্য সংগ্রহে: সমরেশ রায় ও শম্পা দাস, কলকাতা, পশ্চিমবঙ্গ)