
খন্দকার জলিল, স্টাফ রিপোর্টার
পটুয়াখালীর গলাচিপা সদর ইউনিয়নের পক্ষিয়া গ্রামে সোসাল ডেভেলপমেন্ট ফাউন্ডেশন (এসডিএফ) নামের একটি এনজিওর মাঠ কর্মীর বিরুদ্ধে এক নারী সদস্যকে শারীরিকভাবে নির্যাতনের অভিযোগ উঠেছে। ভুক্তভোগী বিচার না পেয়ে অবশেষে পটুয়াখালী নারী ও শিশু নির্যাতন দমন ট্রাইব্যুনালে মামলা দায়ের করেছেন।
অভিযোগ সূত্রে জানা যায়, প্রায় পাঁচ বছর আগে এসডিএফ “জেলে পরিবার উন্নয়ন প্রকল্প” নামে ১২০ সদস্যবিশিষ্ট একটি সমিতি গঠন করে। সমিতির সভাপতি মো. রুহুল আমিন প্যাদা এবং সদস্যদের কাছ থেকে নিয়মিত কিস্তি সংগ্রহের দায়িত্বে ছিলেন এনজিওটির মাঠ কর্মী এমদাদ হোসেন।
ভুক্তভোগী মোসা. তাহমিনা বেগম (৪৫) স্বামী মো. রত্তন গাজী জানান—গত ১৭ আগস্ট সকাল ১০টার দিকে সমিতির নিয়মিত সভায় উপস্থিত হয়ে মাঠ কর্মী এমদাদ সদস্যদের উদ্দেশে অশ্রাব্য ভাষায় গালিগালাজ ও পাশ বই ছুড়ে মারেন। এ সময় প্রতিবাদ করলে এমদাদ প্রকাশ্যে তাহমিনাকে চড়-থাপ্পড় মারেন। ঘটনার পর উপস্থিত সদস্যরা প্রতিবাদ জানালে অভিযুক্ত স্থান ত্যাগ করেন।
পরবর্তীতে সদস্যরা বিষয়টি এসডিএফ গলাচিপা অফিসে লিখিতভাবে অভিযোগ করলে অফিস ম্যানেজার এম. এ. সায়েম বিচার দেওয়ার আশ্বাস দেন। কিন্তু দীর্ঘদিন পেরিয়ে গেলেও কোনো ব্যবস্থা নেওয়া হয়নি বলে অভিযোগ করেন তারা।
তাহমিনা আরও জানান, ঘটনার পর স্বামী রত্তন গাজী ক্ষুব্ধ হয়ে তাকে মারধর ও তালাকের হুমকি দেন, ফলে সংসার ভাঙনের মুখে পড়েছেন তিনি।শেষ পর্যন্ত ন্যায়বিচারের আশায় গলাচিপা উপজেলা প্রেসক্লাবে এসে ঘটনার বিচার দাবি করেন।
অভিযুক্ত মাঠ কর্মী এমদাদ হোসেন অভিযোগ অস্বীকার করে কোনো মন্তব্য করতে রাজি হননি। তবে অফিস ম্যানেজার এম. এ. সায়েম বলেন, “আমি বিষয়টি জানি, দ্রুত মীমাংসার চেষ্টা করছি।”
ভুক্তভোগী তাহমিনা বেগম বলেন, “আমি বিচার চাই। যদি বিচার না পাই, তাহলে নারী নির্যাতন আইনে মামলা করব।” পরবর্তীতে তিনি পটুয়াখালী নারী ও শিশু নির্যাতন দমন ট্রাইব্যুনালে ১৪ অক্টোবর একটি মামলা দায়ের করেন।
তবে অভিযোগ রয়েছে—মামলার পরও আসামি এমদাদ হোসেন নির্ভয়ে গলাচিপা অফিসে কাজ করছেন এবং শহরে ঘুরে বেড়াচ্ছেন। স্থানীয়রা প্রশ্ন তুলেছেন, মামলা হওয়ার পরও আসামী না হওয়া কি বিচার ব্যবস্থার প্রতি অবহেলা নয়? ভুক্তভোগী তাহমিনা বেগম বলেন, “আমি এখন কোথায় গেলে বিচার পাব?”