খন্দকার জলিল, জেলা ব্যুরো প্রধান, পটুয়াখালী পটুয়াখালীর গলাচিপা উপজেলায় তিন দফা দাবির প্রেক্ষিতে সরকারি প্রাথমিক বিদ্যালয়ের শিক্ষকরা অনির্দিষ্টকালের কর্মবিরতি ঘোষণা করেছেন। রবিবার (৯ নভেম্বর) সকাল থেকে উপজেলার বিভিন্ন প্রাথমিক বিদ্যালয়ের শিক্ষকরা শ্রেণিকক্ষে পাঠদান বন্ধ রেখে দাবি আদায়ের আন্দোলনে যোগ দেন। সারাদেশব্যাপী প্রাথমিক সহকারী শিক্ষকদের চলমান আন্দোলনের অংশ হিসেবে গলাচিপার শিক্ষকরা একাত্মতা ঘোষণা করে এ কর্মসূচি পালন করছেন। আন্দোলনরত শিক্ষকরা জানান, বহু বছর ধরে তারা সরকার ও সংশ্লিষ্ট কর্তৃপক্ষের কাছে তাদের ন্যায্য দাবি জানিয়ে আসছেন, কিন্তু কোনো কার্যকর পদক্ষেপ নেওয়া হয়নি। ফলে বাধ্য হয়ে তারা কর্মবিরতিতে যেতে বাধ্য হয়েছেন। শিক্ষকরা জানান, তাদের তিন দফা দাবির মধ্যে রয়েছে—সহকারী শিক্ষকদের বেতন স্কেল পুনর্বিন্যাস করে পদোন্নতি প্রাপ্ত প্রধান শিক্ষকদের সমপর্যায়ে উন্নীত করা, পদোন্নতির সুযোগ বৃদ্ধি করা এবং শিক্ষকদের মর্যাদা ও আর্থিক সুবিধা নিশ্চিত করা।তারা বলেন, “আমরা আমাদের প্রাপ্য সম্মান ও ন্যায্য অধিকার চাই। এসব দাবি বাস্তবায়ন না হওয়া পর্যন্ত আন্দোলন চলবে।” এদিকে কর্মবিরতির কারণে উপজেলার বেশিরভাগ বিদ্যালয়ে পাঠদান কার্যক্রম স্থবির হয়ে পড়েছে। অনেক বিদ্যালয়ে তালা ঝুলছে, শিক্ষার্থীরা ফিরে যাচ্ছে বাড়িতে। এতে অভিভাবক মহলে দেখা দিয়েছে উদ্বেগ ও ক্ষোভ। তারা দ্রুত সমস্যার সমাধান করে শিক্ষাকার্যক্রম স্বাভাবিক করার জন্য সরকারের প্রতি আহ্বান জানিয়েছেন। অভিভাবক রফিকুল ইসলাম বলেন, “আমাদের সন্তানদের ভবিষ্যৎ যেন ঝুঁকিতে না পড়ে, এজন্য সরকার ও শিক্ষক সমাজের মধ্যে আলোচনার মাধ্যমে দ্রুত সমাধান প্রয়োজন।” উপজেলার শিক্ষা অফিস সূত্রে জানা গেছে, শিক্ষকদের দাবি সরকারের উচ্চ পর্যায়ে আলোচনার পর্যায়ে রয়েছে। তবে কবে নাগাদ এ সমস্যা সমাধান হবে, তা এখনও নিশ্চিত নয়। স্থানীয় শিক্ষাবিদরা মনে করেন, শিক্ষকদের দাবি যুক্তিসঙ্গত হলেও দীর্ঘমেয়াদি কর্মবিরতি শিক্ষার্থীদের শিক্ষাজীবনে নেতিবাচক প্রভাব ফেলবে। তাই উভয় পক্ষের সমঝোতার মাধ্যমে দ্রুত সমাধান বের করা জরুরি। চলমান এই কর্মবিরতি অব্যাহত থাকলে গলাচিপার প্রাথমিক শিক্ষাব্যবস্থায় বড় ধরনের স্থবিরতা দেখা দিতে পারে বলে আশঙ্কা প্রকাশ করেছেন সচেতন মহল।