খন্দকার জলিল, স্টাফ রিপোর্টার
পটুয়াখালীর গলাচিপায় এক হাফেজিয়া মাদ্রাসার অল্পবয়সী ছাত্রী জান্নাতুলের রহস্যজনক মৃত্যুর ঘটনায় মাদ্রাসা শিক্ষক মাসুদুর রহমানকে গ্রেফতার করেছে গলাচিপা থানা পুলিশ। দীর্ঘ তদন্ত ও ময়না তদন্তের প্রতিবেদনে অনিয়মের আলামত মিললে অবশেষে তাকে গ্রেফতার করা হয়।
জানা যায়, উপজেলার গোলখালী ইউনিয়নের মো. সোহরাব প্যাদার ছেলে মাসুদুর রহমান (২৪) স্থানীয়ভাবে “নূরে মদিনা হাফেজিয়া মহিলা মাদ্রাসা” নামে একটি ছোট টিনসেট ভবনে মাদ্রাসা পরিচালনা করতেন। সেখানে তিনি ও তার স্ত্রী মোসা. জান্নাতুল ফেরদৌস মেয়েদের ধর্মীয় শিক্ষা দিতেন এবং ছাত্রীরা ওই বাসাতেই অবস্থান করত।
গত বছরের ২১ জুলাই রাঙ্গাবালী উপজেলার চালিতাবুনিয়া ইউনিয়নের আলী আকবরের কন্যা জান্নাতুল (৮) ওই মাদ্রাসায় ভর্তি হয়। কিন্তু চলতি বছরের ২১ জুন রাতে হঠাৎ তার মৃত্যু ঘটে। পরদিন সকালে জান্নাতুলের পিতার কাছে ফোন করে জানানো হয়, তার মেয়ে অসুস্থ। পরে গলাচিপা উপজেলা স্বাস্থ্য কমপ্লেক্সে নিয়ে গেলে কর্তব্যরত চিকিৎসক জান্নাতুলকে মৃত ঘোষণা করেন।
প্রথমদিকে মাদ্রাসা কর্তৃপক্ষ দাবি করে, শিশুটির মৃত্যু স্বাভাবিক বা বিষাক্ত সাপের কামড়ে হয়ে থাকতে পারে। তবে জান্নাতুলের পরিবার বিষয়টিকে সন্দেহজনক মনে করে আইনি ব্যবস্থা নেয়। তারা পটুয়াখালী নারী ও শিশু নির্যাতন দমন ট্রাইব্যুনালে মামলা দায়ের করেন।
দীর্ঘ তদন্ত শেষে ময়না তদন্তের রিপোর্টে অসংগতির বিষয় উঠে আসে। এর ভিত্তিতে গত ২৩ অক্টোবর গলাচিপা থানা পুলিশ গোলখালী ইউনিয়নের নিজ বাড়ি থেকে শিক্ষক মাসুদুর রহমানকে গ্রেফতার করে আদালতে সোপর্দ করে।
এ বিষয়ে জানতে চাইলে গলাচিপা থানার অফিসার ইনচার্জ মো. আশাদুর রহমান বলেন, “ময়না তদন্ত প্রতিবেদনে কিছু গুরুত্বপূর্ণ তথ্য পাওয়ার পর মাসুদকে গ্রেফতার করা হয়েছে। মামলার প্রকৃত রহস্য উদঘাটনের জন্য তাকে রিমান্ডে এনে জিজ্ঞাসাবাদ করা হবে।”
এই ঘটনায় পুরো গলাচিপা জুড়ে চাঞ্চল্যের সৃষ্টি হয়েছে। স্থানীয়রা দ্রুত তদন্ত সম্পন্ন করে শিশুটির মৃত্যুর সঠিক কারণ উদঘাটন ও দোষীদের দৃষ্টান্তমূলক শাস্তির দাবি জানিয়েছেন