খন্দকার জলিল, স্টাফ রিপোর্টার
পটুয়াখালীর গলাচিপা উপজেলার চিকনিকান্দি ইউনিয়নের পূর্ব মাঝগ্রামের মো. কালা মিয়া প্যাদার পুত্র ও ইউনিয়ন যুবদলের কর্মী মো. মেহেদী হাসান মুকুলকে চাঁদা দাবির অভিযোগে পুলিশ গ্রেপ্তার করেছে। মঙ্গলবার (২১ অক্টোবর) চিকনিকান্দি বাজার থেকে তাকে আটক করে গলাচিপা থানা পুলিশ।
এর প্রতিবাদে বুধবার বিকেল ৪টা ৩০ মিনিটে চিকনিকান্দি বাজারে মুকুলের পরিবারের পক্ষ থেকে এক সংবাদ সম্মেলনের আয়োজন করা হয়। সেখানে মুকুলের ছেলে মো. হাসিব লিখিত বক্তব্য পাঠ করেন।
লিখিত বক্তব্যে হাসিব বলেন, “আমার বাবা বিএনপির একজন ত্যাগী ও নিবেদিত কর্মী। তিনি বিগত সরকার আমলে রাজনৈতিক নির্যাতনের শিকার হয়েছেন, একাধিকবার জেল খেটেছেন এবং তার বিরুদ্ধে আওয়ামী সরকার ২১টি মিথ্যা মামলা দিয়েছে। দীর্ঘ ১৭ বছর আমরা পলাতক জীবনের মতো কাটিয়েছি। মাত্র এক বছর হলো আমরা বাড়িতে ফিরে স্বাভাবিকভাবে বসবাস করছি। অথচ কোনো অপরাধ না করেও আমার বাবাকে আবার মিথ্যা মামলায় জড়ানো হয়েছে।”
তিনি আরও বলেন, “রাজনৈতিক প্রতিহিংসা ও স্থানীয় দলাদলির কারণে অপর পক্ষ আমার বাবাকে ষড়যন্ত্রমূলক ভাবে ফাঁসিয়েছে। দলের ভেতর অনেকের বিরুদ্ধে গুরুতর অভিযোগ থাকলেও তাদের বিরুদ্ধে কোনো ব্যবস্থা নেওয়া হয়নি। অথচ উপজেলা বা জেলা কমিটিকে না জানিয়ে কেন্দ্রীয় কমিটি আমার বাবাকে বহিষ্কার করেছে—এটা কোনো নিয়মের মধ্যে পড়ে না। আমরা দাবি জানাই, মিথ্যা মামলা প্রত্যাহার করে আমার বাবাকে নিঃশর্ত মুক্তি দেওয়া হোক।”
সংবাদ সম্মেলনে মুকুলের সহধর্মিণী শিখা সুলতানা বলেন, “আমার স্বামী বিএনপি করার কারণে অতীত সরকার তাকে অনেক হয়রানী, নির্যাতন, নিপিড়ন করেছে, তাকে কুপিয়ে তার একটি আঙুল পর্যন্ত কেটে দিয়েছে।
বিগত সরকারের আমলে আমার স্বামীসহ আমাদের দীর্ঘদিন পালিয়ে থাকতে হয়েছে। ১৭টি বছর কখনও একসঙ্গে বসবাস করতে পারিনি। এখন আবার মিথ্যা মামলায় তাকে ফাঁসানো হয়েছে। আমি একজন স্ত্রী হিসেবে আমার স্বামীর নিঃশর্ত মুক্তি কামনা করছি।”
স্থানীয় সূত্রে জানা যায়, একই গ্রামের দুলাল দেবনাথের ছেলে দিলিপ দেবনাথ মুকুলের বিরুদ্ধে চাঁদা দাবির অভিযোগ ২১ অক্টোবর গলাচিপা থানায় একটি লিখিত অভিযোগ দায়ের করে। অভিযোগে উল্লেখ করেন মেহেদী হাসান মুকুল তার কাছে দুই লক্ষ টাকা চাঁদা দাবি করে। উক্ত টাকা না দেওয়ায় দিলিপ দেবনাথকে মুকুল মারধর ও হত্যার হুমকি দেয়। পরবর্তীতে দিলিপ দেবনাথ গলাচিপা থানায় মুকুলসহ কয়েক জনের বিরুদ্ধে একটি মামলা দায়ের করেন।পরিবারের দাবি—এই ঘটনাটি স্থানীয় রাজনৈতিক প্রতিহিংসার অংশ, মুকুলকে পরিকল্পিতভাবে ফাঁসানো হয়েছে।
সংবাদ সম্মেলনে মুকুলের বড় ভাই সান্টু প্যাদাসহ পরিবারের অন্যান্য সদস্য ও স্থানীয় নেতাকর্মীরাও উপস্থিত ছিলেন।
চিকনিকান্দি এলাকায় মুকুলের গ্রেপ্তার ও তার পরিবারের এমন অভিযোগে স্থানীয় রাজনৈতিক অঙ্গনে ব্যাপক আলোচনা সৃষ্টি হয়েছে।