খন্দকার জলিল, স্টাফ রিপোর্টার
পটুয়াখালীর গলাচিপার পানপট্টি ইউনিয়নে এক মর্মান্তিক ঘটনার পর ঝুলন্ত মরদেহ উদ্ধার করেছে পুলিশ। নিহতের নাম মো. আল-আমিন (৪৫) তিনি মো. মিজান গাজীর ছেলে, বাগেরহাট জেলার রামপাল থানার কালেখারবেড় গ্রামের বাসিন্দা। বিয়ের সূত্রে পানপট্টিতে বসবাস স্থানীয় সূত্রে জানা যায়, কয়েক বছর আগে আল-আমিন পানপট্টি এলাকার শাহ আলম মিয়ার ছেলে লিকচনের গরুর ফার্মে কাজ করতেন। প্রায় দুই বছর আগে ফার্মটি বন্ধ হয়ে গেলে তিনি নিজ গ্রামে চলে যান। তবে ফার্মে কাজ করার সময় তার পরিচয় হয় বাঁশতলা গ্রামের মৃত আব্দুল জলিল বিশ্বাসের মেয়ে নাজমা বেগম (৪২) এর সাথে। পরবর্তীতে দুই মাস আগে নাজমাকে বিবাহ করে তিনি শ্বশুরবাড়িতেই বসবাস শুরু করেন। বিয়ের পর নাজমা স্বামীকে একটি অটোরিকশা কিনে দেন। সেই অটোরিকশা চালিয়েই আল-আমিন সংসার চালাতেন। স্থানীয়রা জানান, নাজমার আগেও একটি বিয়ে হয়েছিল, সেখান থেকে তার এক ছেলে ও এক মেয়ে রয়েছে। তবে প্রথম বিয়ে টেকেনি বলেই দ্বিতীয় বিয়ে করেন নাজমা। স্ত্রীকে ছুরিকাঘাত গতকাল সোমবার (৮ সেপ্টেম্বর) সন্ধ্যা সাড়ে ৭টার দিকে আল-আমিন স্ত্রী নাজমাকে নিয়ে বাইরে ঘুরতে বের হন। পথিমধ্যে কাজী বাড়ির সামনের জনশূন্য রাস্তায় আল-আমিন হঠাৎ ধারালো ছুরি দিয়ে নাজমার পেটে আঘাত করেন। গুরুতর জখম অবস্থায় নাজমার অন্ত্র বের হয়ে আসে। তার চিৎকার শুনে স্থানীয়রা ছুটে এসে উদ্ধার করে প্রথমে স্থানীয়ভাবে চিকিৎসা দেয়ার পর তাকে ঢাকায় পাঠানো হয়। বর্তমানে তিনি সেখানে মৃত্যুর সাথে পাঞ্জা লড়ছেন। পালানোর সময় দুর্ঘটনা স্ত্রীকে আঘাত করার পর আল-আমিন তার অটোরিকশা নিয়ে পালানোর চেষ্টা করেন। তবে পানপট্টির তুলারাম গ্রামে বিদ্যুতের খুঁটির সাথে ধাক্কা খেয়ে দুর্ঘটনার শিকার হন। এ সময় তিনি ব্যবহৃত মোবাইল ফোন ফেলে রেখে সেখান থেকে পালিয়ে যান। এরপর থেকে তার কোনো খোঁজ পাওয়া যাচ্ছিল না। লাশ উদ্ধার আজ মঙ্গলবার (৯ সেপ্টেম্বর) ভোর ৬টার দিকে পটুয়াখালীর মিজানুর মৃধার মাছের ঘেরের উত্তর পাশে গাছে গামছা দিয়ে ঝুলন্ত অবস্থায় আল-আমিনের মরদেহ দেখতে পান স্থানীয়রা। খবর পেয়ে গলাচিপা থানা পুলিশ ঘটনাস্থলে পৌঁছে লাশ উদ্ধার করে থানায় নিয়ে যায়। পুলিশের বক্তব্য গলাচিপা থানার অফিসার ইনচার্জ মো. আশাদুর রহমান জানান, “ঘটনা জানার পরপরই পুলিশ ঘটনাস্থলে পাঠানো হয়েছে। লাশ উদ্ধার করে ময়নাতদন্তের জন্য মর্গে প্রেরন করা হয়েছে। আল-আমীনের মোবাইল ফোন জব্দ করা হয়েছে। তবে এখন পর্যন্ত কোনো লিখিত অভিযোগ পাওয়া যায়নি। অভিযোগ পেলে অথবা ময়নাতদন্তের রিপোর্ট হাতে এলে মৃত্যুর আসল রহস্য উদঘাটন সম্ভব হবে।” এলাকায় চাঞ্চল্য এ ঘটনার পর পানপট্টি এলাকায় ব্যাপক চাঞ্চল্যের সৃষ্টি হয়েছে। স্থানীয়দের মতে, আল-আমিন স্ত্রীকে আঘাত করার পর ভয় ও লজ্জায় আত্মহত্যা করে থাকতে পারেন। আবার কেউ কেউ মনে করছেন—এ ঘটনা দুটোই পরিকল্পিতও হতে পারে, যার পেছনে অন্য কোনো রহস্য লুকিয়ে আছে।