
মোঃমঈন উদ্দিন উজ্জ্বল , চুনারুঘাট থেকে হবিগঞ্জ-৪ (মাধবপুর–চুনারুঘাট) আসনে আসন্ন জাতীয় নির্বাচনকে সামনে রেখে বিএনপির আয়োজিত গণমিছিল ও নির্বাচনী সভা বুধবার বিকেলে চুনারুঘাটের মধ্যবাজারে অনুষ্ঠিত হয়। দুপুর থেকেই উপজেলার বিভিন্ন এলাকা থেকে নেতাকর্মী ও সাধারণ মানুষের ঢল নামায় বাজার এলাকা রূপ নেয় জনসমুদ্রে।
চুনারুঘাট উপজেলা বিএনপির উদ্যোগে আয়োজিত এ গণমিছিলে অংশ নেন উপজেলার ১০ ইউনিয়ন ও পৌরসভার বিভিন্ন এলাকা থেকে আসা হাজারও নেতাকর্মী ও সমর্থক। ধানের শীষের ব্যানার–ফেস্টুনে, স্লোগানে মুখরিত হয়ে ওঠে পুরো উপজেলা সদর। নারী–পুরুষ, তরুণ, কৃষক, শ্রমজীবী মানুষ, এমনকি চা–বাগানের শ্রমিকরাও অংশ নেন সমাবেশে।
সমাবেশে প্রধান অতিথি হিসেবে বক্তব্য দেন বিএনপির মনোনীত প্রার্থী ও হবিগঞ্জ জেলা বিএনপির সাবেক সভাপতি সৈয়দ মো. ফয়সল। তিনি বলেন,
“এখন সময় এসেছে রাষ্ট্র কাঠামো মেরামতের ৩১ দফা প্রতিষ্ঠা করার। জনগণের অধিকার ফিরিয়ে আনা, সুশাসন প্রতিষ্ঠা ও মুক্ত গণতন্ত্র পুনরুদ্ধারের জন্য এই নির্বাচন অত্যন্ত গুরুত্বপূর্ণ।”
নিজের দীর্ঘ রাজনৈতিক যাত্রার প্রসঙ্গ টেনে ফয়সল বলেন,
“আমি হবিগঞ্জ-৪ আসনে চারবার বিএনপির মনোনীত প্রার্থী হিসেবে নির্বাচনে অংশ নিয়েছি। বিজয়ী হতে না পারলেও মানুষের ভালোবাসা হারাইনি। চুনারুঘাটের উন্নয়নে আমি সবসময় কাজ করেছি, আগামীতেও করব।”
তিনি আরও বলেন,
“বড় আশা নিয়ে আবার আপনাদের দ্বারে এসেছি। এবার আপনারা আমাকে নিরাশ করবেন না। এ নির্বাচন হবে পরিবর্তনের নির্বাচন—দেশকে এগিয়ে নেওয়ার নির্বাচন। বিএনপি ক্ষমতায় গেলে চুনারুঘাটের সার্বিক উন্নয়ন নিশ্চিত করা হবে।”
যুবসমাজের প্রসঙ্গে তিনি বলেন,
“যুবশক্তিকে কাজে লাগানো হবে, নতুন কর্মসংস্থানের সুযোগ সৃষ্টি করা হবে। বেকারত্ব দূর করতে বিশেষ পরিকল্পনা নেওয়া হবে।”
চা–বাগান এলাকার শ্রমিকদের কথা উল্লেখ করে তিনি বলেন,
“চুনারুঘাট–মাধবপুরে রয়েছে ২৩টি চা–বাগান। এই বাগানের শ্রমিকেরা দেশের অর্থনীতিতে গুরুত্বপূর্ণ অবদান রাখছেন। তাদের পানি, বাসস্থান, স্বাস্থ্য ও শিক্ষা–সংক্রান্ত সমস্যাগুলো অগ্রাধিকার ভিত্তিতে সমাধান করা হবে।”
ধর্মীয় সম্প্রীতির বিষয়ে তিনি বলেন,
“এই দেশে সনাতন ধর্মাবলম্বীসহ সব সম্প্রদায়ের মানুষ স্বাধীনভাবে, নিরাপদে বসবাস করবেন। বিএনপি সব ধর্মের মানুষের পাশে আছে এবং সবসময় থাকবে।”
আসন্ন নির্বাচনের গুরুত্ব তুলে ধরে ফয়সল বলেন,
“এবারের নির্বাচন অত্যন্ত গুরুত্বপূর্ণ। সবাই ভোটকেন্দ্রে যাবেন এবং ধানের শীষে ভোট দিয়ে আমাকে আপনাদের সেবা করার সুযোগ দেবেন।”
গণমিছিলকে কেন্দ্র করে পুরো এলাকায় উৎসবমুখর পরিবেশের সৃষ্টি হয়। ট্রাক, পিকআপ, মোটরসাইকেল, রিকশা, অটোরিকশায় করে মিছিল নিয়ে আসেন নেতাকর্মীরা। তরুণদের উদ্দীপনা, নারীদের অংশগ্রহণ, প্রবীণদের উৎসাহ—সব মিলিয়ে এক প্রাণবন্ত পরিবেশ তৈরি হয় চুনারুঘাট জুড়ে।
গণমিছিল শেষে অনুষ্ঠিত হয় নির্বাচনী সভা। পুরো বাজার এলাকা মানুষের ভিড়ে ঠাসা হয়ে যায়। নেতাকর্মীদের স্লোগান, করতালি আর উচ্ছ্বাসে মুখরিত হয়ে ওঠে উপজেলা শহর।
বিএনপি নেতারা আশা প্রকাশ করেন, এই গণমিছিল হবিগঞ্জ-৪ আসনে আগামী জাতীয় নির্বাচনে বিএনপির পক্ষে নতুন গতি ও আস্থা সৃষ্টি করবে।