মোঃ শাকিল রেজা সিনিয়র স্টাফ রিপোর্টারঃ
ঝিনাইদহের মহেশপুর উপজেলার বাঁশবাড়িয়া ইউনিয়নের ভৈরবা বাজারে অনুষ্ঠিত হয়েছে শতবর্ষী গ্রামীণ লোকজ ঐতিহ্যের অন্যতম বিনোদনমূলক আয়োজন বিষধর সাপ নিয়ে ‘ঝাঁপান খেলা’। বৃহস্পতিবার সকাল থেকে দিনব্যাপী এই খেলা ঘিরে পুরো ভৈরবা বাজার পরিণত হয় উৎসবমুখর জনসমুদ্রে।
নারী-পুরুষ, শিশু-বৃদ্ধ সবাই ঐতিহ্যের এই ব্যতিক্রমী খেলাটি উপভোগ করতে ভিড় জমায়। এ খেলার আয়োজনে সার্বিক তত্ত্বাবধানে ছিলেন ভৈরবা ইউনিয়ন বিএনপির সাধারণ সম্পাদক ও মরহুম চেয়ারম্যান আলহাজ্ব আব্দুল লতিফ চেয়ারম্যানের পুত্র মোহাম্মদ জাহাঙ্গীর আলম। তারা বলেন, “গ্রামীণ ঐতিহ্য ও সংস্কৃতিকে টিকিয়ে রাখা এবং স্থানীয় জনগণের বিনোদনের জন্যই এই ঝাঁপান খেলার আয়োজন করা হয়েছে।” দিনব্যাপী এ আয়োজনে অংশ নেন দেশের বিভিন্ন জেলা থেকে আগত পাঁচজন খ্যাতনামা সাপুড়ে—ঝিনাইদহের লিটন ও সোহেল আহমেদ, মাগুরার সাগর হোসেন, চুয়াডাঙ্গার একমাত্র নারী সাপুড়ে বৃষ্টি এবং শৈলকূপার সবুজ সাপুড়ে। ওস্তাদ লিটনের নেতৃত্বে তারা বিষধর সাপ ধরা, নিয়ন্ত্রণ ও নানা রোমাঞ্চকর প্রদর্শনীতে দর্শকদের মুগ্ধ করেন। সাহস ও দক্ষতার সমন্বয়ে তাদের উপস্থাপনা দর্শকদের মাঝে তৈরি করে রোমাঞ্চ ও উচ্ছ্বাস। দিন শেষে শ্রেষ্ঠ সাপুড়ে নির্বাচিত হন ঝিনাইদহের লিটন সাপুড়ে, যাকে পুরস্কার ও সম্মাননা প্রদান করেন আয়োজক কমিটি । অনুষ্ঠানে প্রধান অতিথি হিসেবে উপস্থিত ছিলেন বাঁশবাড়িয়া ইউনিয়ন পরিষদের চেয়ারম্যান নাজমুল হুদা জিন্টু, যিনি বলেন, “বর্তমান প্রজন্মকে মোবাইল গেমসসহ অপ্রয়োজনীয় কাজে আসক্তি থেকে দূরে রাখতে এ ধরনের ঐতিহ্যবাহী আয়োজন অত্যন্ত গুরুত্বপূর্ণ।” ওস্তাদ লিটন সাপুড়ে বলেন, “আমরা এই ঝাঁপান খেলার মাধ্যমে হারিয়ে যাওয়া গ্রামীণ ঐতিহ্যকে আবারও মানুষের মাঝে ফিরিয়ে আনার চেষ্টা করছি।” দিনব্যাপী এই ঝাঁপান খেলা শুধু বিনোদনই নয়, বরং এটি ছিল এক প্রাণবন্ত গ্রামীণ সংস্কৃতি উৎসব, যা ভৈরবা বাজারে এনে দিয়েছে আনন্দ-উচ্ছ্বাসের এক অনন্য আবহ এবং ঐতিহ্যের পুনর্জাগরণে নতুন প্রাণ সঞ্চার করেছে।