মোঃ শাকিল রেজা খুলনা বিভাগীয় ব্যুরো প্রধানঃ
ঝিনাইদহ-৪ (কালীগঞ্জ) আসনে বাংলাদেশ জামায়াতে ইসলামীর মনোনীত সংসদ সদস্য প্রার্থী মাওলানা আবু তালেবের নির্বাচনী প্রচারণা ব্যাহত করতে একের পর এক নাশকতামূলক কর্মকাণ্ডের অভিযোগ উঠেছে। অজ্ঞাত দুর্বৃত্তরা রাতের অন্ধকারে তাঁর নির্বাচনী বিলবোর্ড কেটে ফেলার পাশাপাশি বিপুলসংখ্যক পোস্টার ছিঁড়ে ফেলেছে। এসব ঘটনার পর এলাকায় রাজনৈতিক উত্তেজনা ছড়িয়ে পড়েছে এবং সাধারণ ভোটারদের মধ্যেও উদ্বেগ দেখা দিয়েছে। ঘটনাটি ঘটেছে গত ৬ নভেম্বর (বুধবার) গভীর রাতে কালীগঞ্জ উপজেলার নিয়ামতপুর ইউনিয়নের ৬নং ওয়ার্ডের মহেশ্বরচাঁদা গ্রামের ত্রিমোহনী এলাকায়। স্থানীয় সূত্রে জানা যায়, মাওলানা আবু তালেবের নির্বাচনী প্রতীক ‘দাঁড়িপাল্লা’ সম্বলিত একটি বিশাল বিলবোর্ড সেখানে স্থাপন করা হয়েছিল। বৃহস্পতিবার সকালে স্থানীয়রা দেখতে পান, সেটি সম্পূর্ণ কেটে ফেলে রাখা হয়েছে। একই রাতে উপজেলার নলডাঙ্গা বাজার এলাকা ও আশপাশের বিভিন্ন স্থানে প্রায় ত্রিশটিরও বেশি পোস্টার ছিঁড়ে ফেলার অভিযোগ পাওয়া গেছে। এ ঘটনায় স্থানীয় জামায়াত নেতাকর্মীদের মধ্যে তীব্র ক্ষোভ দেখা দিয়েছে। তারা অভিযোগ করেন, এসব কর্মকাণ্ড প্রার্থীর জনপ্রিয়তা নষ্ট করার উদ্দেশ্যে পরিকল্পিতভাবে করা হয়েছে। নলডাঙ্গা জামায়াতের পক্ষ থেকে এক বিবৃতিতে বলা হয়েছে, “এ ধরনের ঘৃণ্য কর্মকাণ্ড গণতান্ত্রিক সংস্কৃতির পরিপন্থী। রাজনৈতিক প্রতিহিংসা থেকে পোস্টার-বিলবোর্ড ছিঁড়ে ফেলা নিন্দনীয় ও কাপুরুষোচিত কাজ। আমরা প্রশাসনের কাছে দাবি জানাই— এই ঘটনায় জড়িতদের চিহ্নিত করে দৃষ্টান্তমূলক শাস্তি নিশ্চিত করা হোক।” স্থানীয় বাসিন্দারাও প্রশাসনের তাৎক্ষণিক হস্তক্ষেপ দাবি করেছেন। তারা বলেন, নির্বাচনের আগে এমন পরিস্থিতি সৃষ্টি হলে তা ভোটের পরিবেশকে মারাত্মকভাবে ক্ষতিগ্রস্ত করতে পারে। একজন স্থানীয় ব্যবসায়ী জানান, “এভাবে পোস্টার ছেঁড়া বা বিলবোর্ড কেটে ফেলা কেবল একটি দলের ক্ষতি নয়, বরং এটি একটি সুষ্ঠু নির্বাচনী সংস্কৃতির ওপর আঘাত।” এ বিষয়ে জামায়াতের প্রার্থী মাওলানা আবু তালেব বলেন, “আমার জনপ্রিয়তাই এখন তাদের আতঙ্কের কারণ হয়ে দাঁড়িয়েছে। জনগণ দিন দিন আমাদের প্রতি আস্থা ও সমর্থন বাড়িয়ে তুলছে। তাই তারা রাতের অন্ধকারে কাপুরুষোচিতভাবে পোস্টার-বিলবোর্ড নষ্ট করছে। কিন্তু আমি জনগণের ভালোবাসায় বিশ্বাস করি— এই ধরনের নাশকতা আমাদের মনোবল ভাঙতে পারবে না। ইনশাআল্লাহ, আমরাই বিজয়ী হব।” তিনি আরও বলেন, “আমি প্রশাসনের দৃষ্টি আকর্ষণ করছি— যেন এ ধরনের ঘটনার পুনরাবৃত্তি না ঘটে এবং নির্বাচনী পরিবেশ শান্তিপূর্ণ থাকে। আমরা আইনের প্রতি শ্রদ্ধাশীল ও শান্তিপ্রিয়ভাবে নির্বাচনী কার্যক্রম চালিয়ে যাচ্ছি।” রাজনৈতিক বিশ্লেষকরা মনে করছেন, এই ঘটনার পেছনে স্থানীয় প্রতিদ্বন্দ্বী মহলের ‘ভোটে জনপ্রিয়তা হারানোর আতঙ্ক’ কাজ করছে। তবে অন্য একটি অংশ বলছে, এটি একটি পরিকল্পিত নাশকতা, যার উদ্দেশ্য নির্বাচনী অস্থিতিশীলতা তৈরি করা। এদিকে, এখন পর্যন্ত প্রশাসনের পক্ষ থেকে কোনো আনুষ্ঠানিক মন্তব্য পাওয়া যায়নি। তবে স্থানীয় সচেতন মহল বলছে, “ভোটের আগে এমন ঘটনায় প্রশাসনের নিরপেক্ষ অবস্থান ও দ্রুত তদন্ত জরুরি।”