নিজস্ব প্রতিবেদক:
গত ২ সেপ্টেম্বর উপজেলা বিএনপির সদস্য সচিব অধ্যাপক জোবায়েদ হোসেনের সংবাদ সম্মেলনের প্রতিবাদ জানিয়ে শুক্রবার (৫ সেপ্টেম্বর) রাজশাহী প্রেস ক্লাবে সংবাদ সম্মেলন করেছেন দুর্গাপুর উপজেলা বিএনপির সদস্য মো. জার্জিস হোসেন সোহেল।
তিনি দাবি করেন, তাঁর বিরুদ্ধে আনা অভিযোগ সম্পূর্ণ মিথ্যা, বানোয়াট এবং ভিত্তিহীন।
সংবাদ সম্মেলনে সোহেল বলেন,“গত ২৯ আগস্ট দুর্গাপুর উপজেলা ও পৌর বিএনপির উদ্যোগে ৪৭তম প্রতিষ্ঠাবার্ষিকী উদযাপনের প্রস্তুতি সভায় যে হট্টগোল সৃষ্টি হয়, তার সঙ্গে আমি কোনোভাবেই জড়িত নই। সভাস্থল ত্যাগ করার পরই ওই পরিস্থিতি সৃষ্টি হয়। সংবাদ সম্মেলনে প্রকৃত ঘটনা আড়াল করে আমাকে হেয় প্রতিপন্ন করার চেষ্টা করা হয়েছে।”
তিনি বলেন,“প্রস্তুতি সভার আগে দুর্গাপুর বাজারে বিএনপির মনোনয়ন প্রত্যাশী ইসফা খায়রুল হক (শিমুল) দুর্গাপুর পৌরসভা বিএনপির সদস্য সচিব আহম্মেদ রেজাউল হক স্বপনের সদ্য প্রয়াত স্ত্রীর কবর জিয়ারত শেষে আসরের নামাজ আদায় করেন। পরে তিনি এনসিডিপি মার্কেটের সামনে অবস্থান করছিলেন। পথে আমার সঙ্গে হঠাৎ তাঁর দেখা হয়। আমি তাঁকে জানাই, আমি প্রতিষ্ঠাবার্ষিকীর প্রস্তুতি সভায় যাচ্ছি। তিনি সভায় উপস্থিত হয়ে নেতৃবৃন্দের সঙ্গে সালাম বিনিময় করতে পারেন, আমি তাঁকে সেই অনুমতি দিই।”
সোহেল আরও বলেন,“তারপরই আমি সভাস্থলে উপস্থিত হই এবং আমার নির্ধারিত আসনে বসি। সঞ্চালক অধ্যাপক জোবায়েদ হোসেনের আমন্ত্রণে শিমুল ভাই শুভেচ্ছা বক্তব্য রাখেন এবং উপস্থিত নেতৃবৃন্দের সঙ্গে সালাম বিনিময় করে প্রস্থান করেন। শিমুল ভাই চলে যাওয়ার পরেই জেলা কৃষক দলের সদস্য মো. দুলাল হোসেন এবং উপজেলা শ্রমিক দলের আহ্বায়ক আলাউদ্দিন, উপজেলা কৃষক দলের আহ্বায়ক আব্দুল হান্নানসহ অন্যান্য নেতৃবৃন্দ সভার মধ্যে হঠাৎ উত্তেজনা সৃষ্টি করেন।”
তিনি জানান,“উক্ত সময় আমার বাড়ি থেকে জরুরি ফোন আসে। আমি সভার সভাপতিকে অবহিত করে সভাস্থল ত্যাগ করি। এর এক ঘন্টা পরে হট্টগোলের খবর জানতে পারি। আমার উপস্থিতির পর সভায় যে বিশৃঙ্খলা সৃষ্টি হয়, তা আমার সঙ্গে সম্পর্কিত নয়। আমাকে নিয়ে যে সংবাদ সম্মেলন হয়েছে তা সম্পূর্ণ মিথ্যা ও প্রোপাগান্ডামূলক।”
সোহেল সাংবাদিকদের উদ্দেশ্যে বলেন, “আমার দল ও নেতৃবৃন্দের মধ্যে কোনো বিরোধ নেই। আমাকে সামাজিক ও রাজনৈতিকভাবে হেয় করা এবং অপপ্রচারের শিকার করার উদ্দেশ্যে এমন সংবাদ সম্মেলন আয়োজন করা হয়েছে। আমি জেলা বিএনপির দায়িত্বশীল নেতৃবৃন্দের কাছে এবং সকল সাংবাদিকদের কাছে আকুল আবেদন জানাচ্ছি, প্রকৃত ঘটনা খতিয়ে দেখুন।”
সংবাদ সম্মেলনে তিনি আরও বলেন, “প্রকাশিত সংবাদে প্রকৃত ঘটনা আড়াল করা হয়েছে। প্রস্তুতি সভার হট্টগোলের মূল কারণ এবং ঘটনাস্থলের প্রকৃত পরিস্থিতি তুলে ধরা হয়নি। সংবাদ সম্মেলনের মাধ্যমে ব্যক্তিগত ও রাজনৈতিক ভাবে আমাকে হেয় করার চেষ্টা করা হয়েছে।”
উল্লেখ্য, জেলা ও উপজেলা বিএনপির প্রতিষ্ঠাবার্ষিকী উদযাপন প্রস্তুতি সভা থেকে বিতর্কিত হট্টগোলের খবর গত ২ সেপ্টেম্বর সংবাদ মাধ্যমে ছাপা হয়। পরে মো. জার্জিস হোসেন সোহেল সাংবাদিকদের উপস্থিতিতে তাঁর বিরুদ্ধে আনা অভিযোগকে অস্বীকার করে প্রতিবাদ জানান।
সংবাদ সম্মেলনে আরও উপস্থিত ছিলেন- দুর্গাপুর পৌর বিএনপির সিনিয়র যুগ্ম আহ্বায়ক আয়নাল হক, দুর্গাপুর পৌর বিএনপির সাবেক সভাপতি বজলুর রহমান।
দুর্গাপুর পৌর বিএনপির সিনিয়র যুগ্ম আহ্বায়ক আয়নাল হক সাংবাদিকদের বলেন,“ঘটনাটি রাজনৈতিকভাবে প্ররোচিত করা হয়েছে। সভার সময় যে হট্টগোল সৃষ্টি হয়েছে, তার সঙ্গে জার্জিস হোসেন সোহেলের কোনো সম্পৃক্ততা নেই। দলে কোনো ব্যক্তিগত বিরোধ নেই, এটি একটি অপপ্রচারের অংশ।”
দুর্গাপুর পৌর বিএনপির সাবেক সভাপতি বজলুর রহমান বলেন,“প্রস্তুতি সভার উদ্দেশ্য ছিল দলের ৪৭তম প্রতিষ্ঠাবার্ষিকী উদযাপন। সেখানে ব্যক্তিগত বিরোধ বা হানাহানি ঘটেনি। সম্প্রতি আনা অভিযোগগুলো ভিত্তিহীন এবং রাজনৈতিক উদ্দেশ্যপ্রণোদিত। প্রকৃত ঘটনা খুঁজে বের করার জন্য নেতৃবৃন্দকে সতর্ক থাকার আহ্বান জানাই।”