শারমিন আরা ঝিনাইদহ প্রতিনিধি
ঝিনাইদহে আলোচিত কম্বোডিয়া প্রবাসী মাহাবুব হত্যাকাণ্ডের প্রধান আসামি রবিউল ইসলাম ওরফে রবি অবশেষে র্যাবের হাতে গ্রেফতার হয়েছে। জমি নিয়ে দীর্ঘদিনের বিরোধের জেরে সংঘটিত এই হত্যাকাণ্ড এলাকায় ব্যাপক চাঞ্চল্যের সৃষ্টি করেছিল। ঘটনার পর থেকেই রবি আত্মগোপনে ছিল বলে জানিয়েছে আইনশৃঙ্খলা বাহিনী।
র্যাব-৬ এর একটি বিশেষ দল গোপন সংবাদের ভিত্তিতে বৃহস্পতিবার রাতে শহরের আদর্শপাড়া এলাকার একটি বাড়িতে অভিযান চালিয়ে রবিকে গ্রেফতার করে। গ্রেফতারের সময় সে অন্যত্র পালিয়ে যাওয়ার প্রস্তুতি নিচ্ছিল বলে র্যাব সূত্রে জানা গেছে।
গ্রেফতারকৃত রবিউল ইসলাম ঝিনাইদহ সদর উপজেলার কালা গ্রামের মৃত আব্দুস সাত্তারের ছেলে। গ্রেফতারের পর তাকে শনিবার সকালে ঝিনাইদহ সদর থানায় হস্তান্তর করা হয়। র্যাব জানায়, হত্যাকাণ্ডে রবির সরাসরি সম্পৃক্ততা এবং পরিকল্পনার বিষয়ে বিস্তারিত জানতে তাকে জিজ্ঞাসাবাদ করা হচ্ছে।
পারিবারিক সূত্রে জানা যায়, প্রবাসী মাহাবুব দীর্ঘদিন ধরে কম্বোডিয়ায় অবস্থান করছিলেন। সম্প্রতি দেশে ফিরে তিনি পারিবারিক জমি-জমা নিয়ে স্থানীয় কিছু ব্যক্তির সঙ্গে বিরোধে জড়িয়ে পড়েন। সেই বিরোধ থেকেই সংঘর্ষের সূত্রপাত হয় এবং এক পর্যায়ে তাকে নির্মমভাবে হত্যা করা হয়।
এই হত্যাকাণ্ডে জড়িত ব্যক্তিরা পরিকল্পিতভাবে ঘটনাস্থলে হামলা চালায় বলে অভিযোগ নিহতের পরিবারের।
এ ঘটনায় নিহত মাহাবুবের ভাই রুবেল হোসেন বাদী হয়ে সদর থানায় একটি হত্যা মামলা দায়ের করেন। মামলায় ১৩ জনের নাম উল্লেখ করা হয়েছে এবং অজ্ঞাত আরও ১০–১২ জনকে আসামি করা হয়েছে। মামলার পর থেকে প্রধান আসামি রবি পলাতক ছিল। তার গ্রেফতারের মধ্য দিয়ে মামলার অগ্রগতি আরও এগিয়ে গেল বলে মনে করছে পুলিশ।
র্যাব জানায়, হত্যাকাণ্ডটি সুপরিকল্পিত ছিল। গ্রেফতার রবি হত্যার ঘটনাস্থলে উপস্থিত ছিল এবং হামলার নেতৃত্ব দেয়—এমন তথ্য তদন্তে পাওয়া গেছে। তাকে জিজ্ঞাসাবাদে হত্যাকাণ্ডের উদ্দেশ্য, কারা কারা এতে প্রত্যক্ষ ও পরোক্ষভাবে যুক্ত ছিল এবং বিদেশে অবস্থানকারী কারও সংশ্লিষ্টতা আছে কি না—এসব বিষয় খতিয়ে দেখা হচ্ছে।
প্রধান আসামির গ্রেফতারের খবরে কালা গ্রামসহ পুরো এলাকায় স্বস্তির সঞ্চার হয়েছে। স্থানীয়রা বলছেন, দীর্ঘদিন ধরে রবি গ্রামে নানা অপকর্ম চালালেও তাকে কেউ কিছু বলতে সাহস পেত না। র্যাব তাকে গ্রেফতার করায় লোকজন স্বাভাবিকভাবে চলাফেরা করতে পারছে।
নিহত মাহাবুবের পরিবার দ্রুত বিচারের দাবি জানিয়ে বলেছেন—“যারা যারা এই হত্যাকাণ্ডে জড়িত, সবাইকে শনাক্ত করে দৃষ্টান্তমূলক শাস্তি দিতে হবে।”