
খন্দকার জলিল, জেলা ব্যুরো প্রধান, পটুয়াখালী
পটুয়াখালীর গলাচিপা উপজেলার ডাকুয়া ইউনিয়ন বিএনপির উদ্যোগে বেগম খালেদা জিয়ার সুস্থতা কামনা, রাষ্ট্র মেরামতের ৩১ দফা বাস্তবায়নের অঙ্গীকার এবং সার্বিক রাজনৈতিক পরিস্থিতি নিয়ে এক বিশাল দোয়া মাহফিল ও জনসভা অনুষ্ঠিত হয়েছে।
বুধবার (১০ ডিসেম্বর) বিকাল ৩টায় আটখালী মাধ্যমিক বিদ্যালয় মাঠে এ সমাবেশ অনুষ্ঠিত হয়। সভায় সভাপতিত্ব করেন ডাকুয়া ইউনিয়ন বিএনপির সভাপতি মো. সরোয়ার হোসেন খন্দকার। সঞ্চালনায় ছিলেন উপজেলা বিএনপির সাংগঠনিক সম্পাদক খন্দকার মো. মসিউর রহমান শাহিন এবং ডাকুয়া ইউনিয়ন বিএনপির সাধারণ সম্পাদক মো. ফরিদুল ইসলাম।
অনুষ্ঠানে প্রধান অতিথি ছিলেন বাংলাদেশ জাতীয়তাবাদী দল–বিএনপির কেন্দ্রীয় কার্যনির্বাহী কমিটির সদস্য ও গলাচিপা–দশমিনা আসনের মনোনয়ন প্রত্যাশী হাসান মামুন। বিশেষ অতিথি হিসেবে উপস্থিত ছিলেন গলাচিপা উপজেলা বিএনপির সভাপতি বীর মুক্তিযোদ্ধা মো. সিদ্দিকুর রহমান। প্রধান বক্তা ছিলেন উপজেলা বিএনপির সাধারণ সম্পাদক বীর মুক্তিযোদ্ধা আব্দুস সাত্তার হাওলাদার। এ ছাড়া উপজেলা ও ইউনিয়ন বিএনপি এবং অঙ্গসহযোগী সংগঠনের নেতাকর্মীসহ স্থানীয় গণমাধ্যমকর্মীরাও উপস্থিত ছিলেন।
পবিত্র কোরআন তেলাওয়াত, গীতা পাঠ, জাতীয় ও দলীয় সঙ্গীত পরিবেশনের মধ্য দিয়ে জনসভার সূচনা হয়। অনুষ্ঠানের শুরুতেই সাবেক প্রধানমন্ত্রী বেগম খালেদা জিয়ার সুস্থতা কামনা করে দোয়া অনুষ্ঠিত হয়।
প্রধান অতিথি হাসান মামুন তার বক্তব্যে বেগম খালেদা জিয়ার সুস্থতা কামনা করেন এবং স্বৈরাচার পতন আন্দোলনে ডাকুয়া ইউনিয়নে শহীদ হওয়া নেতাকর্মীদের স্মরণ করেন। তিনি বলেন, “ইতিমধ্যে গলাচিপার নানা ইউনিয়নে সভা-সমাবেশ করেছি। আপনাদের সমর্থন বেগম খালেদা জিয়া ও তারেক রহমানের দৃষ্টি আকর্ষণ করেছে। দল আমাকে মনোনয়ন দেবে বলে আশাবাদী; তবে কৌশলগত কারণে দল যদি অন্য কাউকে মনোনয়ন দেয়, তাহলেও আমি জাতীয়তাবাদী দলের পক্ষেই নির্বাচনে থাকবো।”
তিনি আরও বলেন, “আমরা ১৭ বছর ধরে আন্দোলন-সংগ্রাম করেছি, নির্যাতিত হয়েছি, কারাভোগ করেছি। এই আসন আমরা কাউকে ছেড়ে দেব না। সাধারণ জনগণ যাতে নিরাপদে চলাফেরা করতে পারে—এটা নিশ্চিত করাই আমাদের লক্ষ্য।”
সনাতন ধর্মাবলম্বীদের উদ্দেশ্যে তিনি বলেন, “আমরা শতাব্দীর পর শতাব্দী ধরে শান্তিপূর্ণভাবে একত্রে বসবাস করে আসছি। ভবিষ্যতেও সেই ঐতিহ্য বজায় রাখতে চাই। আপনাদের নিরাপত্তা, সন্তানের নিরাপত্তা এবং ধর্মীয় প্রতিষ্ঠানের নিরাপত্তার নিশ্চয়তা দেবে জাতীয়তাবাদী শক্তি।”
নারীদের উদ্দেশ্য তারেক রহমানের ৩১ দফার কথা উল্লেখ করে তিনি বলেন, “বিএনপি ক্ষমতায় গেলে প্রতিটি পরিবারকে একটি ‘ফ্যামিলি কার্ড’ দেওয়া হবে, যার মাধ্যমে ন্যায্যমূল্যে মাসের বাজার করা যাবে।”
কৃষক–শ্রমিকদের উদ্দেশ্যে তিনি বলেন, “তারেক রহমানের ৩১ দফা বাস্তবায়িত হলে দেশের সামগ্রিক ভাগ্য পরিবর্তন হবে।”
তার বক্তব্যের প্রতিটি অংশে উপস্থিত হাজারো জনতা করতালির মাধ্যমে সমর্থন জানান। তিনি নেতাকর্মীদের নির্বাচনের দিন পর্যন্ত ধৈর্য ও ঐক্য বজায় রাখার আহ্বান জানান।
জনসভাকে কেন্দ্র করে ইউনিয়ন বিএনপি ও অঙ্গসহযোগী সংগঠনের নানা মিছিল একের পর এক মাঠে প্রবেশ করে। মুহূর্তেই মাঠ কানায় কানায় পূর্ণ হয়ে যায়। নারীদের উপস্থিতিও ছিল উল্লেখযোগ্য।