সিনিয়র স্টাফ রিপোর্টার মোঃ শাকিল খান রাজু।।
বাংলাদেশের চলমান রাজনৈতিক অচলাবস্থার প্রেক্ষাপটে ন্যায়ভিত্তিক ও জবাবদিহিমূলক গণতন্ত্র প্রতিষ্ঠার লক্ষ্যে পাঁচ দফা দাবি ঘোষণা করেছে বাংলাদেশ জামায়াতে ইসলামি। এ দাবির অংশ হিসেবে শুক্রবার (২৬ সেপ্টেম্বর) বিকেলে ভোলার মনপুরায় উপজেলা জামায়াতের উদ্যোগে দলীয় কার্যালয় প্রাঙ্গণে সমাবেশ ও বিক্ষোভ মিছিল অনুষ্ঠিত হয়।
সমাবেশে সভাপতিত্ব করেন মনপুরা উপজেলা জামায়াতের আমির আমিমুল এহসান জসিম।
বক্তব্যে আমিমুল এহসান জসিম বলেন, জনগণের ভোটাধিকার প্রতিষ্ঠা ও একটি ন্যায়ভিত্তিক গণতান্ত্রিক রাষ্ট্র গড়তে আন্দোলনের কোনো বিকল্প নেই। ২০২৪ সালের জুলাই-আগস্টে সফল গণঅভ্যুত্থানের মাধ্যমে স্বৈরাচার শেখ হাসিনার পতন ঘটলেও জনগণের রক্তের বিনিময়ে অর্জিত সেই সাফল্য এখনো আইনগত স্বীকৃতি পায়নি। তাই জুলাই জাতীয় সনদকে আইনি স্বীকৃতি দিয়ে এর আলোকে নির্বাচন আয়োজন করতে হবে। অন্যথায় অভ্যুত্থানের অর্জন ব্যর্থতায় পর্যবসিত হতে পারে।
তিনি আরও বলেন, জনগণ এখন প্রকৃত গণতন্ত্র চায়—যেখানে জবাবদিহি থাকবে এবং নাগরিকের মৌলিক অধিকার নিশ্চিত হবে।
জামায়াতের ৫ দফা দাবি
১. জুলাই জাতীয় সনদের ভিত্তিতে আগামী ফেব্রুয়ারিতে জাতীয় নির্বাচন আয়োজন।
২. জাতীয় নির্বাচনে উভয় কক্ষে আনুপাতিক প্রতিনিধিত্ব (পিআর) পদ্ধতি চালু।
৩. অবাধ, সুষ্ঠু ও গ্রহণযোগ্য নির্বাচনে সবার জন্য সমান সুযোগ নিশ্চিত করা।
৪. ফ্যাসিস্ট সরকারের জুলুম-নির্যাতন, গণহত্যা ও দুর্নীতির বিচার দৃশ্যমান করা।
৫. ১৪ দলের সকল কার্যক্রম নিষিদ্ধ ঘোষণা।
প্রধান অতিথি ছিলেন সাবেক উপজেলা আমির ও জেলা সূরা ও কর্মপরিষদ সদস্য মাওলানা হাফেজ রফিকুল ইসলাম।
আরো বক্তব্য রাখেনকলাতলি ইউনিয়ন জামায়াত সভাপতি জসিম উদ্দিন,১নং মনপুরা ইউনিয়ন আমির মাওলানা সাহ ইমরান চৌধুরী,হাজিরহাট ইউনিয়ন আমির হাফেজ মাওলানা জামাল উদ্দিন,সূরা ও কর্মপরিষদ সদস্য মতিউর রহমান নিজামি,শ্রমিক কল্যাণ ফেডারেশনের সভাপতি মাওলানা ইউনুস।
সমাবেশ পরিচালনা করেন উপজেলা জামায়াতের সেক্রেটারি মাওলানা আলাউদ্দিন ফরাজি।
বক্তারা বলেন, বাংলাদেশের মানুষ আর প্রহসনের নির্বাচন দেখতে চায় না। জনগণ রক্তের বিনিময়ে গণতন্ত্রের পথ সুগম করেছে। এখন সেই অর্জনকে প্রাতিষ্ঠানিক রূপ দিতে হবে। পিআর পদ্ধতির নির্বাচন ছাড়া জনগণের প্রকৃত মতামত প্রতিফলিত হবে না। ন্যায়ভিত্তিক গণতন্ত্র প্রতিষ্ঠায় জামায়াত ঐক্যবদ্ধভাবে সংগ্রাম চালিয়ে যাচ্ছে।
তারা আরও বলেন, ফ্যাসিস্ট সরকারের জুলুম-নির্যাতন ও দুর্নীতির বিচার না হলে জনগণের আস্থা ফিরে আসবে না। গণতন্ত্রের নামে যারা স্বৈরাচার কায়েম করেছে, তাদের এ দেশে কোনো স্থান নেই। জনগণ জেগে উঠেছে, তারা রুখে দাঁড়াবে।
সমাবেশ শেষে বিক্ষোভ মিছিলটি দলীয় কার্যালয় থেকে শুরু হয়ে উপজেলা সদরের গুরুত্বপূর্ণ সড়ক প্রদক্ষিণ করে পুনরায় কার্যালয়ের সামনে এসে শেষ হয়।
সমাবেশে উপজেলার বিভিন্ন ইউনিয়ন থেকে আসা জামায়াতের নেতাকর্মী ও বিপুল সংখ্যক সমর্থক অংশ নেন।