সিনিয়র স্টাফ রিপোর্টার মোঃ শাকিল খান রাজু:
ভোলার মনপুরা থেকে অপহৃত হওয়া তিন জেলেকে এক লাখ টাকা মুক্তিপণের বিনিময়ে ছেড়ে দিয়েছে হাতিয়ার জলদস্যুরা। জলদস্যুদের ভয়েই উদ্ধার হওয়া জেলেরা গণমাধ্যমের ক্যামেরার সামনে আসতে রাজি হননি।
জানা গেছে, অপহৃত তিন জেলে হলেন গিয়াস উদ্দিন মাঝি, মলিন মাঝি ও রাজিব মাঝি। গিয়াস উদ্দিন ও মলিন মাঝির বাড়ি মনপুরা উপজেলার ৪ নম্বর দক্ষিণ সাকুচিয়া ইউনিয়নের রহমানপুর গ্রামে এবং রাজিব মাঝির বাড়ি দক্ষিণ সাকুচিয়া গ্রামে।
অপহৃতদের পরিবার ও আড়তদার মহিউদ্দিন হাওলাদার ও ফোরকান বদ্দার জানান, গত শনিবার (২৬ জুলাই) গভীর রাতে মনপুরা ও হাতিয়ার মাঝামাঝি উড়িচর নামক স্থানে মাছ ধরার সময় হাতিয়ার একদল জলদস্যু তাদের ট্রলারে হামলা চালায়। পরে জেলেসহ ট্রলার ও মালামাল নিয়ে যায় তারা। এরপর দস্যুরা একই ট্রলার ব্যবহার করে আরও দুইটি ট্রলারে হামলা চালিয়ে তিনজন মাঝিকে অপহরণ করে নিঝুমদ্বীপের গভীর বনে নিয়ে যায়। সেখানে চোখ বেঁধে গাছের সঙ্গে বেঁধে বেধড়ক মারধর করা হয় অপহৃতদের।
পরিবারের সদস্যদের ফোনে জলদস্যুরা মুক্তিপণ দাবি করে। দুইদিন দরকষাকষির পর এক লাখ টাকায় রফা হয়। সোমবার রাতে ওই টাকা নগদ ও বিকাশের মাধ্যমে জলদস্যুদের দেওয়া হলে মঙ্গলবার (২৯ জুলাই) রাত ১০টার দিকে ট্রলারে করে অপহৃতরা মনপুরায় ফিরে আসেন।
অপহৃত গিয়াস উদ্দিন মাঝি বলেন,
আমাদের নির্যাতনের সময় পরিবারের সদস্যদের ফোন দিয়ে সেই আওয়াজ শোনানো হয়। তারা বলেছে, যদি প্রশাসনের কাছে কিছু বলি, তাহলে নদীতে ফেলে দিয়ে মেরে ফেলবে। এমনকি ছাড়া সময় আমাদের একটি টোকেন দিয়েছে, যেন আমরা আবার ধরা পড়লে সেই টোকেন দেখিয়ে প্রাণে বাঁচি।"
জেলে পরিবারের সদস্যরা জানিয়েছেন, পুলিশ বা কোস্টগার্ডকে কিছু না জানানোই ভালো মনে করেছেন তারা, কারণ জলদস্যুরা হুমকি দিয়েছিল—অভিযোগ জানালে জেলেদের হত্যা করা হবে।
এদিকে স্থানীয় জেলেরা অভিযোগ করেছেন, প্রতি বছরই মনপুরার জেলেরা হাতিয়ার জলদস্যুদের হাতে অপহৃত হন, কিন্তু মেঘনায় নেই কোনো কার্যকর ট্রলিং। নৌ-পুলিশ ফাঁড়ি থাকলেও নিঝুমদ্বীপ থেকে মনপুরার জেলেদের নিরাপত্তা নিশ্চিত করতে কোনো কার্যকর উদ্যোগ নেওয়া হয় না।
এ বিষয়ে মনপুরা থানার অফিসার ইনচার্জ (ওসি) আহসান কবির জানান,
অপহৃত জেলেরা ফিরে আসার খবর পেয়েছি। তবে এখনো কেউ কোনো অভিযোগ বা মামলা করেনি।"