
কে এম নাছির উদ্দিন সিনিয়র ক্রাইম রিপোর্টার: উদ্বোধন করলেন জেলা প্রশাসক; নতুন কর্মচারী, নিরাপত্তা জোরদার সিরাজগঞ্জের শাহজাদপুরে অবস্থিত কবিগুরু রবীন্দ্রনাথ ঠাকুরের স্মৃতিবিজড়িত ঐতিহাসিক রবীন্দ্র কাছারি বাড়ি পুনরায় দর্শনার্থীদের জন্য খুলে দেওয়া হয়েছে। শুক্রবার (১৩ জুন) সকাল ১০টায় আনুষ্ঠানিকভাবে ফটক খুলে টিকিট বিক্রির উদ্বোধনের মাধ্যমে এর দ্বার উন্মুক্ত করেন সিরাজগঞ্জ জেলা প্রশাসক মোহাম্মদ নজরুল ইসলাম।
এ সময় আরও উপস্থিত ছিলেন প্রত্নতত্ত্ব অধিদপ্তরের তদন্ত দলের প্রধান ও উপসচিব (প্রশাসন) শেখ কামাল হোসেন, সিরাজগঞ্জ জেলার পুলিশ সুপার মোঃ ফারুক হোসেন, শাহজাদপুর উপজেলা নির্বাহী কর্মকর্তা (ইউএনও) মোঃ কামরুজ্জামান, শাহজাদপুর সার্কেলের অতিরিক্ত পুলিশ সুপার মোঃ কামরুজ্জামান, সহকারী কমিশনার (ভূমি) মোঃ মুশফিকুর রহমান, রবীন্দ্র কাছারি বাড়ির কাস্টডিয়ান হাবিবুর রহমান।
এ ছাড়া অনুষ্ঠানে স্থানীয় রাজনৈতিক নেতৃবৃন্দের মধ্যে উপস্থিত ছিলেন শাহজাদপুর উপজেলা বিএনপির সাবেক সভাপতি ইকবাল হাসান (হিরু), জামায়াতে ইসলামীর আমির মিজানুর রহমান, উপজেলা বি এন পির সাবেক সাধারণ সম্পাদক আরিফুজ্জামান (আরিফ), সাবেক সাংগঠনিক আমির হোসেন (সবুজ), পৌর বিএনপির সাবেক সভাপতি এমদাদুল হক নওশাদ।
আরও উপস্থিত ছিলেন শাহজাদপুর থানার অফিসার ইনচার্জ (ওসি) মোঃ আছলাম আলী, পরিদর্শক (অপারেশন) আবু সাঈদসহ বিভিন্ন দপ্তরের উচ্চপদস্থ কর্মকর্তা এবং স্থানীয় প্রিন্ট ও ইলেকট্রনিক মিডিয়ার সাংবাদিকরা।
ঘটনার পেছনের প্রেক্ষাপট:
গত ৮ জুন এক দর্শনার্থী তাঁর পরিবারের সদস্যদের নিয়ে কাছারি বাড়ি পরিদর্শনে আসেন। সেখানে মোটরসাইকেল পার্কিং ফি নিয়ে গেটের এক কর্মচারীর সঙ্গে কথা কাটাকাটি হয়। অভিযোগ রয়েছে, ওই দর্শনার্থীকে অফিস কক্ষে আটকে রেখে শারীরিকভাবে লাঞ্ছিত ও মারধর করা হয়।
এ ঘটনায় স্থানীয়দের মাঝে ক্ষোভের সৃষ্টি হয়। ১০ জুন শাহজাদপুরে মানববন্ধন ও বিক্ষোভ কর্মসূচি পালিত হয়। বিক্ষুব্ধ জনতা কাছারি বাড়ির অডিটোরিয়ামে ভাঙচুর চালায় এবং এক পরিচালককে মারধর করে। পরদিন প্রত্নতত্ত্ব অধিদপ্তরের নির্দেশে অনির্দিষ্টকালের জন্য দর্শনার্থীদের প্রবেশ নিষিদ্ধ ঘোষণা করা হয়।
প্রশাসনের অবস্থান:
সিরাজগঞ্জ জেলা প্রশাসক মোহাম্মদ নজরুল ইসলাম বলেন, “উদ্ভূত পরিস্থিতিতে কাছারি বাড়ির নিরাপত্তা বিঘ্নিত হতে পারত, তাই দর্শনার্থী প্রবেশ সাময়িকভাবে বন্ধ রাখা হয়। যারা বিক্ষোভে অংশ নিয়েছিলেন, তারা মূলত কর্মচারীদের আচরণে ক্ষুব্ধ ছিলেন, কাছারি বাড়ির ঐতিহ্য বিনষ্ট করাই তাঁদের উদ্দেশ্য ছিল না।”
তিনি আরও জানান, হামলার ঘটনায় জড়িত ছয়জন কে ইতোমধ্যে শনাক্ত করে গ্রেপ্তার করা হয়েছে। নিরাপত্তা ও ব্যবস্থাপনায় পরিবর্তন আনা হয়েছে—পুরাতন কর্মচারীদের স্থলে নতুন কর্মচারী নিয়োগ দেওয়া হয়েছে এবং দর্শনার্থীদের নিরাপত্তা নিশ্চিত করতে বিভিন্ন পদক্ষেপ নেওয়া হয়েছে।
উদ্বোধন শেষে জেলা প্রশাসক ও অন্যান্য অতিথিরা রবীন্দ্র জাদুঘর পরিদর্শন করেন। অপরদিকে রবীন্দ্র কাছারিবাড়ি খুলে দেওয়ার পর সেনাবাহিনীর ব্রিগেডিয়ার জেনারেল খুরর্শিদ আলম মূল কাছারিবাড়ি যাদুঘর পরিদর্শন করেন। এছাড়া তিনি কাছারিবাড়ির নিরাপত্তার বিষয়ে খোজখবর নেন।