শরীয়তপুর জেলা প্রতিনিধিঃ আবু আলম
শরীয়তপুর জেলাকে ঢাকা বিভাগের অংশ হিসেবেই বহাল রাখার দাবিতে স্থানীয় সরকার, পল্লী উন্নয়ন ও সমবায় মন্ত্রণালয়ের মাননীয় উপদেষ্টা আসিফ মাহমুদের বরাবর স্মারকলিপি প্রদান করা হয়।
শুক্রবার (৩ অক্টোবর) সন্ধ্যায় শরীয়তপুর জেলা বাসীর পক্ষে থেকে স্মারকলিপি প্রদান করেন জাহাঙ্গীরনগর বিশ্ববিদ্যালয় কেন্দ্রীয় ছাত্র সংসদের (জাকসু) ভাইস প্রেসিডেন্ট আব্দুর রশিদ জিতু।
তিনি শরীয়তপুর জেলার গোসাইরহাট উপজেলার কোদালপুর ইউনিয়নের কৃতিসন্তান এবং নবনির্বাচিত জাকসু ভিপি।
স্মারক লিপিতে বলা হয়-
শরীয়তপুর জেলার ভৌগোলিক, সাংস্কৃতিক, ঐতিহাসিক ও প্রশাসনিক দিক থেকে ঢাকা বিভাগের সঙ্গে গভীর সম্পর্ক রয়েছে। দীর্ঘদিন ধরে এ জেলার প্রশাসনিক কার্যক্রম ঢাকার অংশ হিসেবেই পরিচালিত হয়ে আসছে। প্রস্তাবিত ফরিদপুর বিভাগে শরীয়তপুরকে অন্তর্ভুক্ত করা হলে জনমানসে বিভ্রান্তি ও ভোগান্তি তৈরি হবে। একইসঙ্গে পরিচিত প্রশাসনিক কাঠামো ও যোগাযোগ ব্যবস্থার ওপর নেতিবাচক প্রভাব পড়বে। জেলার উন্নয়ন, জনস্বার্থ রক্ষা এবং প্রশাসনিক কার্যকারিতার স্বার্থে শরীয়তপুর জেলা ঢাকার সঙ্গেই বহাল রাখা সমীচিন।
এ বিষয়ে উপদেষ্টা আসিফ মাহমুদ বলেন, প্রি-নিকার বৈঠকে এ বিষয়ে আলোচনা হয়েছে। আগামী সপ্তাহে নিকার সভায় বিষয়টি উঠবে। সবার স্বার্থ ও ইতিবাচক দিকগুলো বিবেচনা করে সিদ্ধান্ত নেওয়া হবে।
ভিপি আব্দুর রশিদ জিতু বলেন, দীর্ঘদিন ধরে এই জেলা ঢাকা বিভাগের অংশ হিসেবে পরিচিত ও পরিচালিত হয়ে আসছে। আমাদের শিক্ষা, চিকিৎসা, ব্যবসা-বাণিজ্য এবং সরকারি-বেসরকারি সেবার অধিকাংশ ক্ষেত্রেই রাজধানী ঢাকার সঙ্গে সরাসরি ও নিবিড় যোগাযোগ রয়েছে। হঠাৎ করে ফরিদপুর বিভাগের সঙ্গে যুক্ত করার প্রস্তাব কেবল মানুষের ভোগান্তিই বাড়াবে না, বরং আমাদের প্রাত্যহিক জীবনযাত্রায় নেতিবাচক প্রভাব ফেলবে। আমাদের দাবি স্পষ্ট—শরীয়তপুরকে ঢাকার অংশ হিসেবেই রাখতে হবে। জনগণের ইচ্ছার বিরুদ্ধে কোনো প্রশাসনিক সিদ্ধান্ত চাপিয়ে দেওয়া হলে তা মেনে নেওয়া হবে না,আমরা তা মেনে নিবো না। উন্নয়ন ও জনস্বার্থ রক্ষার জন্য শরীয়তপুরকে ঢাকার সঙ্গে রাখা-ই একমাত্র যৌক্তিক পদক্ষেপ। এ জেলার মানুষ বহু বছর ধরে যে প্রশাসনিক কাঠামো ও যোগাযোগের সুবিধা ভোগ করে এসেছে, তা নষ্ট হলে জেলার উন্নয়ন ব্যাহত হবে।
উল্লেখ্য, গত ৮ সেপ্টেম্বর ২০২৫ তারিখে মন্ত্রিপরিষদ সচিব আব্দুর রশীদের সভাপতিত্বে অনুষ্ঠিত প্রি-নিকার বৈঠকে ফরিদপুর ও কুমিল্লার নামেই দুটি নতুন প্রশাসনিক বিভাগ এবং নতুন দুটি উপজেলা গঠনের প্রাথমিক সিদ্ধান্ত হয়। প্রস্তাব অনুযায়ী ফরিদপুর, মাদারীপুর, রাজবাড়ী, গোপালগঞ্জ ও শরীয়তপুর জেলা নিয়ে ‘ফরিদপুর বিভাগ’ গঠনের উদ্যোগ নেওয়া হয়েছে। এই সিদ্ধান্তকে কেন্দ্র করে শরীয়তপুরের সাধারণ মানুষ ও স্থানীয় নেতৃবৃন্দ গভীর উদ্বেগ প্রকাশ করেছেন।