নিজস্ব প্রতিবেদক:
সামাজিক সংগঠন হল ব্যক্তি এবং গোষ্ঠীর মধ্যে সম্পর্কের একটি ধারণ । সামাজিক সংগঠনের মধ্যেমে মৌন গঠন, স্থানিক সমন্বয়, নেতৃত্ব, কাঠামো তৈরী, শ্রম বিভাজন, যোগাযোগ ব্যবস্থা ইত্যাদির মতো গুণাবলী অন্তর্ভুক্ত করে উন্নয়ন এর লক্ষ্যে কাজ করা।
সামাজিক দায়বদ্ধতা থেকে মানুষের কল্যাণে অব্যবসায়ীক মনমানসিকতা নিয়ে কোনো কাজ করাই হলো সামাজিক কাজ। সমাজে পিছিয়ে পড়া মানুষদের সাহায্যের হাত বাড়িয়ে দেওয়াও সামাজিক কাজের অন্তর্ভুক্ত। এক সমাজে গরিব-ধনী, অসহায়, এতিম, সহায়–সম্বলহীন নানা রকম মানুষের বসবাস। একা ভালো থাকার নাম ভালো থাকা বলে না। একজন ব্যক্তির সব সার্থকতা অন্যকে ভালো রাখার মাঝেই লুকিয়ে আছে। অন্যকে উপকার করার দ্বারা শুধু অন্যদের সহযোগিতা করা হয় না, বরং একজন ব্যক্তির ব্যক্তিত্ববোধ ফুটে ওঠে। সমাজ নিয়ে তার ইতিবাচক চিন্তা ভাবনা গড়ে ওঠে। সামাজিক কাজের দ্বারা শুধু একজনই উপকৃত হয় না, বরং এর দ্বারা একটা পরিবার উপকৃত হয়, সমাজ উপকৃত হয়, রাষ্ট্রও উপকৃত হয়। সামাজিক কাজ মানুষের দক্ষতা বিকাশ করে ও কর্মসংস্থান সৃষ্টি করে। ফলে সামাজিক ও আর্থিক অবস্থা উন্নত করে। মানুষের জীবনযাত্রার মান উন্নত করে। সামাজিক কাজকর্ম একজন ব্যক্তির একাকিত্ব দূর করে। যার ফলে মানসিক স্বাস্থ্য ভালো থাকে। সামাজিক কাজ আমাদের সুখী করে। আমাদের ভালো অনুভূতি দেয়।
সামাজিক কার্যক্রমের উদ্দেশ্যগুলো হচ্ছে ১) রাস্তঘাট ও অন্যান্য উন্নয়নমূলক কাজের সংস্কার। ২) বৃক্ষরোপণ অভিযান পরিচালনা করা। ৩) গরিব ও অসহায় মানুষের জন্য খাদ্য ও বস্ত্রের ব্যবস্থা করা। ৪) শিক্ষাবঞ্চিত শিশুদের স্কুলে যাওয়ার সুযোগ করে দেওয়া। ৫) রোগী ও বৃদ্ধদের সহায়তা এবং পুনর্বাসন। ৬) অনৈতিকতা ও অসামাজিক কার্যকলাপ দূর করা।
সামাজিক এই সব কার্যক্রমের অংশীদার হওয়ার লক্ষ্যে ১৯৭৮ সালে ঢাকাস্থ সোনাগাজীবাসীদের নিয়ে ইঞ্জিনিয়ার গাজী আনোয়ারুল কাদের মুক্তু মিয়া গঠন করেন, সোনাগাজী সমিতি, ঢাকা। তার ধারা বাহিকতায় এটি চলমান আছে । ২রা নভেম্বর, ২০২৪ সালে সমিতির নিবার্হী কমিটির সভায় সোনাগাজী উপজেলা আওয়ামীলীগের প্রচার সম্পাদক সাহাদাত হোসেন জুয়েলের নেতৃত্বে সহসভাপতি দুলাল, শিক্ষা সম্পাদক ফারুক, সালাহ উদ্দিন শিমুল, উপজেলা আওয়ামী লীগের যুগ্ম সম্পাদক বয়াতী সেলিম(পদ ত্যাগকারী) সহ রংপুর, দিনাজপুর ও অন্যান্য এলাকার বহিরাগত ৪০ জনের একটি টোকাই গ্রুপ নিয়ে সমিতি অফিস দখলের পায়তারা করেন। ভারপ্রাপ্ত সভাপতি কিসলু খান বিষয়টি টের পেয়ে সভাটি স্থগিত ঘোষনা করেন। এবং সমিতির অফিসের সভাস্থল ত্যাগ করেন।
পরবর্তীতে গত ৩১ অক্টোবর ২০২৫ খ্রি. বিকাল ৪:০০ ঘটিকার সময় সোনাগাজী সমিতি ঢাকা’র পূর্ব নির্ধারিত নির্বাহী কমিটির সভায় অযোক্তিক মিছিলের নেতুত্ব দিয়ে ফরহাদ ছাত্র , নুরুল আলম(ইনসুরেন্স কর্মচারী) সভাটি ভন্ডুল করে দেয়। সমিতির সাবেক সভাপতি ও সাধারণ সম্পাদক সমিতির কার্যক্রমে দীর্ঘদিন ধরে অনুপস্থিত রয়েছেন। সাবেক সহসভাপতি এবং বর্তমান ভারপ্রাপ্ত সভাপতি জনাব মেসবাহ উদ্দিন খান কিসলু কে সম্পৃক্ত করে নানা ধরনের উস্কানিমূলক স্লোগান দিয়ে সভাস্থলে ভীতিকর পরিস্থিতি সৃষ্ট করে তুলেন। সমিতির কার্যালয়ে তালা লাগিয়ে দেয়। অফিসের সামনে ব্রিগেডিয়ার জেনারেল (অব:) ইঞ্জিনিয়ার গাজী আশরাফ উদ্দিন আহমেদ, জনাব আমির হোসেন জনি, জনাব সুলতান কামাল উদ্দিন সহ সোনাগাজীর বিশিষ্ট জনদের কে বিভিন্ন এলাকার বহিরাগতদেরকে সদস্য ফি- ৫০০০/- টাকা ব্যাতিত সদস্ করার জন্য চাপ প্রয়োগ সহ নানাভাবে নাজেহাল করেন। সোনাগাজী সমিতি ঢাকা’র কার্যালয়ের সামনের অনাকাঙ্ক্ষিত ও অপ্রীতিকর ঘটনায় সোনাগাজীর বিশিষ্ট জনেরা লজ্জিত, বিব্রত ও অপমানিত বোধ করেছেন। এতে করে সোনগাজীবাসীয়ানরা অ্ন্যায়ের বিরুদ্ধে সামাজিক ফেসবুক, হোয়াটসআ্যাপ, মেসেন্জআর, ও ইন্সট্রগ্রামে দুরবুত্তদের বিরুদ্ধে প্রতিবাদ ও নিন্দা জানান।
গত ৩১/১০/২০২৫ খ্রি: ঘটনার সাথে সংশ্লিষ্ট ফরহাদ বর্তমানে কলেজের ছাত্র, হাবিব, রানা এবং জাকির হোসেন সুমন রা সমিতির সদস্য ফি-৫০০০/- টাকা জমা দিয়ে সমিতির সদস্য হিসেবে এখন ও নিবন্ধিত হন নাই। নেপথ্যে থাকা নুরুল আলম, সালাহ উদ্দিন এবং সমিতির বর্তমান কমিটির একজন সহসভাপতি সহ বর্তমান কমিটির মেয়াদ পূর্তির আগে নির্বাচন ছাড়া নতুন কমিটি গঠন করার পায়তারা করে সোনাগাজীয়ানদের সমর্থন না পাওয়ায় ব্যর্থ হন। ব্যর্থ হয়ে তারা সেচ্ছাসেবী সংগঠনের নিয়মিত কার্যক্রমে বিশৃঙ্খলা সৃষ্টি করেন।
বিশৃঙ্খলা সৃষ্টিকারী এবং নেপথ্যে থাকা উস্কানিদাতা ব্যক্তিদের বিরুদ্ধে দৃষ্টান্তমূলক শাস্তির জোর দাবি জানি্য়েছেন সমিতির বাকী নেতৃত্ব এবং ঢাকাস্থ সোনাগাজীবাসীয়ানরা। সবাই একমত পোষণ করে বলেন, ঘটনার সাথে সংশ্লিষ্ট ব্যক্তিদের মাধ্যমে সমাজের কল্যাণ আশা করা যায় না। তাদের কে তদন্ত করে সমিতি থেকে বহিস্কারকরন সহ শাস্তির আওতায় আনা উচিৎ।
সমিতির ফ্ল্যাট ক্রয় ও রেজিষ্ট্রেশন, ইন্টেরিয়র কাজ, ত্রাণ সামগ্রী ক্রয় ও বিতরণ, ম্যাগাজিন ছাপানোর কাজ, বৃত্তিপরীক্ষার ফটোকপির কাজ বাবদ সহ পরীক্ষা পরিচালনার হিসাব নিষ্পত্তির বিষয়ে ২০২৩-২০২৪ এবং ২০২৪-২০২৫ খ্রি: অডিট প্রতিবেদনে বিল, ভাউচার সঠিক ভাবে পাওয়া যায় নাই। হাতে লেখা বানোয়াট কাচা রশিদ এবং টাকার হিসাবে কয়েক লক্ষ টাকার গরমিল পাওয়া যায় বলে উল্লেখ করে অডিট কমিটি প্রতিবেদন দাখিল করেন। উক্ত প্রতিবেদন নির্বাহী কমিটির সভায় আলোচনার জন্য এজেন্ডায় রাখা হয়েছে ।
তারা তাদের গরমিল হিসাবের সংবাদ ধামাচাপা দেওয়ার জন্য এবং সম্পাদক পদে জোর জবর দখল করার প্রয়াসে সমিতির অফিসে নির্বাহী কমিটির সভায় বিশৃঙ্খলা সৃষ্টি করেন এবং কলাপসিবল গেইটে তালা লাগিয়ে দেন।
অডিট কমিটির সদস্য জনাব মিজানুর রহমান সাহেব কে অডিট প্রতিবেদন সমন্ধে প্রশ্ন করলে তিনি জানান, আমি কমিটির সদস্য হলেও আমাকে কোন বিল ভাউচার, হিসাব , রেজিস্ট্যার, লেজার বুক প্রদর্শন করতে পারেন নাই। অর্থ্যাৎ তাদের দেওয়া মৌখিক হিসাবে গরমিল পাওয়া গেছে, কিছু টাকা তছরুপ করা হয়েছে বলে প্রাথমিক ভাবে নিশ্চিত হওয়া গেছে । উক্ত অভিযোগের বিষয়ে সমিতির ক্যাশিয়ার নুরুল আলমের মোবাইলে কল দিলে তিনি রিসিভ করেন নাই।
এ প্রতিবেদকের হাতে সমিতির অফিসের আরো কিছু ছবি, অডিট প্রতিবেদন এর কপি, পূর্বর্তী হিসাব নিকাশের তথ্য এবং ম্যাগাজিন পকাশের হিসাব সংক্রান্ত ডকুমেন্ট এসে পৌছেছে। এই বিষয়ে বিস্তারিত অনুসন্ধান শেষে প্রতিবেদন-২ আগামী সংখ্যায় প্রকাশ করা হবে।