
সাখাওয়াত ভ্রাম্যমান প্রতিনিধি ফরিদগঞ্জ (চাঁদপুর)
চাঁদপুর-৪ (ফরিদগঞ্জ) আসনের বিএনপি মনোনীত প্রার্থী, বিএনপির কেন্দ্রীয় নির্বাহী কমিটির ব্যাংকিং ও রাজস্ব বিষয়ক সম্পাদক ও সাবেক এমপি লায়ন মো. হারুনুর রশিদ বলেছেন,
“২৪-এর গণঅভ্যুত্থান শুধু পুরুষের আন্দোলন ছিল না—এটি ছিল নারীর অধিকার সচেতনতার এক ঐতিহাসিক উত্তরণ। নারীরা রাজপথে নেমে প্রমাণ করেছে, তারা নিজেদের অধিকার রক্ষায় আর পিছিয়ে থাকতে চায় না।
শুক্রবার (১৪ নভেম্বর ২০২৫) বিকালে চরদুঃখিয়া পশ্চিম ইউনিয়ন মহিলা দলের আয়োজনে বিরামপুর উচ্চ বিদ্যালয় মাঠে অনুষ্ঠিত বৃহৎ মহিলা সমাবেশে অংশ নেন হাজারো নারী। বেলা বাড়ার সঙ্গে সঙ্গে মাঠে উপস্থিত মানুষের ঢল বাড়তে থাকে। পুরো মাঠ একসময় নারী কর্মী–সমর্থকে কানায় কানায় পূর্ণ হয়ে যায়।
ইউনিয়ন বিএনপির সাবেক সভাপতি শফিকুর রহমানের সভাপতিত্বে অনুষ্ঠিত এ সমাবেশে স্থানীয় নারীরা প্ল্যাকার্ড, ব্যানার হাতে অংশ নিয়ে বিএনপির ৩১ দফা বাস্তবায়নের দাবিতে স্লোগানে মুখরিত করে তোলে পুরো এলাকা। অনুষ্ঠান পরিচালনা করেন ইউনিয়ন যুবদলের সাবেক সভাপতি সেলিম গাজী।
প্রধান অতিথির বক্তব্যে লায়ন হারুনুর রশিদ বলেন—
“বাংলাদেশে নারীর অধিকার, শিক্ষা, কর্মসংস্থান, নিরাপত্তা ও আর্থিক ক্ষমতায়নের যে বীজ রোপণ হয়েছিল—তার সূচনা করেছিল বিএনপি সরকার। নারীদের আজ যেসব রাষ্ট্রীয় সুবিধা ও সুযোগ আছে, তার অনেকগুলোই বিএনপির যুগান্তকারী নীতির ফল। এ কারণেই নারীরা সবসময় বিএনপি তথা ধানের শীষ প্রতীকের প্রতি আস্থাশীল।”
“দেশের অর্থনীতির যে উন্নয়ন হয়েছে, তার বড় অংশই এসেছে গ্রামীণ নারীর পরিশ্রম ও অবদানের ফলে। তাঁরা কৃষি, ক্ষুদ্র ব্যবসা, হস্তশিল্প, গার্মেন্টসসহ বহু খাতে নিজেদের অবস্থান শক্ত করেছেন। কিন্তু বিগত তিনটি জাতীয় নির্বাচনে তারা নিজেরাই ভোটাধিকার প্রয়োগ করতে পারেননি—এটাই দেশের গণতন্ত্রের সবচেয়ে বড় লজ্জা।”
লায়ন হারুনুর রশিদ আরও বলেন—
“২৪-এর গণঅভ্যুত্থানে নারীরা ঘরে বসে থাকেনি। তারা রাজপথে নেমে গণতন্ত্র পুনরুদ্ধারের আন্দোলনে নেতৃত্ব দিয়েছে। নারীরা যে দেশপ্রেমে ও অধিকার সচেতনতায় পুরুষের চেয়ে কোনো অংশে কম নয়—তা আবারো প্রমাণিত হয়েছে।”
নারী ও শিশুস্বাস্থ্য, নিরাপত্তা, শিক্ষা, কর্মসংস্থান, আইনি সুরক্ষা এবং রাজনৈতিক ক্ষমতায়ন নিয়ে বিএনপির ঘোষিত ৩১ দফা প্রণীত হয়েছে অত্যন্ত আধুনিক ও যুগোপযোগী দৃষ্টিভঙ্গিতে—এ কথা উল্লেখ করে তিনি বলেন—
“৩১ দফা বাস্তবায়ন করা হলে আর কোনো সংস্কার বাকি থাকবে না। নারী–শিশুর স্বাস্থ্যব্যবস্থা থেকে শুরু করে কর্মসংস্থান, সামাজিক নিরাপত্তা, শিক্ষা এবং প্রযুক্তিগত দক্ষতা—সব ক্ষেত্রে অভূতপূর্ব সংস্কার হবে। গ্রামীণ অর্থনীতির প্রকৃত শক্তি হবে নারীরা।”
“আগামী জাতীয় সংসদ নির্বাচনে নারীরা যদি আবারো বিএনপির প্রতি বিশ্বাস ও আস্থা রাখে, তবে নারীর অধিকার ও উন্নয়ন নিয়ে বিএনপি আরও ব্যাপক কর্মপরিকল্পনা বাস্তবায়ন করবে। নারীদের নিরাপদ কর্মপরিবেশ, উদ্যোক্তা উন্নয়ন ও আর্থিক প্রণোদনা বাড়ানোর জন্য বিশেষ নীতি নেওয়া হবে।”
সমাবেশে আরও বক্তব্য রাখেন—
উপজেলা বিএনপির সাবেক সাধারণ সম্পাদক আজিজুর রহমান আজিজ
যুবদলের সাবেক আহ্বায়ক নাছির পাটওয়ারী
ইউনিয়ন বিএনপির সাবেক সাধারণ সম্পাদক ফজলুল করিম মেম্বার
সাবেক সাংগঠনিক সম্পাদক মমিনুল ইসলাম
যুবদলের সাবেক সভাপতি রুহুল আমিন দেওয়ান
উপজেলা মহিলা দলের নেত্রী শারমিন করিম
ইউনিয়ন ছাত্রদলের মনির হোসেন
আবু গাফ্ফার
সাবেক যুবদল নেতা আরাফাত রহমান দিপু প্রমুখ
এছাড়া অনুষ্ঠানে উপস্থিত ছিলেন সৌদি প্রবাসী চাঁদপুর জেলা বিএনপির যুগ্ম সাধারণ সম্পাদক শরিফ খানসহ উপজেলা ও পৌর বিএনপি, যুবদল, মহিলা দল, ছাত্রদল ও অঙ্গসংগঠনের বিপুলসংখ্যক নেতৃবৃন্দ।
বিরামপুর উচ্চ বিদ্যালয় মাঠে অনুষ্ঠিত এই মহিলা সমাবেশটি এলাকার নারীদের রাজনৈতিক সচেতনতা ও অংশগ্রহণের নতুন উদাহরণ সৃষ্টি করেছে।