শুক্রবার, ০২ জুন ২০২৩, ০৬:৫৫ অপরাহ্ন
ঘোষনা
কোরবানীর বাজার কাপাতে কুয়াকাটায় ১টন ওজনের কালু-চান্দু। চট্টগ্রামের কর্ণফুলী বড়উঠানে বাস-সিএনজি সংঘর্ষে একই পরিবারের তিনজন নিহত  ভালুকায়” মুক্তিযুদ্ধের চেতনায়” ভালুকা প্রেসক্লাবের সাধারণ পরিষদের সভা অনুষ্ঠিত হয়। দুদকের উদ্যোগে পলাশবাড়ীতে আন্তঃজেলা স্কুল বিতর্ক প্রতিযোগীতা অনুষ্ঠিত। স্বামীকে শ্বাসরোধ করে হত্যা মামলায় স্ত্রীর যাবজ্জীবন গাইবান্ধার সাদুল্লাপুরে দাদার লালসার স্বীকার ১৩ বছরের নাতনী,থানায় মামলা,অভিযুক্ত দাদা গ্রেফতার। গাইবান্ধা শহরে কিশোর বয়সের বিভিন্ন হাই স্কুল পড়ুয়া ছাত্ররা নতুন নতুন নেশায় আসক্ত হচ্ছে।  গাইবান্ধায় বর্ণাঢ্য আয়োজনে বিশ্ব দুগ্ধ দিবস পালন। পশ্চিম নাওডোবায় আমজাদীয়া একাডেমি হাইস্কুলে শিক্ষক কতৃক ৮ম শ্রেণীর ছাত্রীকে শ্লীলতা হানি ও ধর্ষন চেষ্টার অভিযোগ শাহজাদপুরে ব্র্যাকের আইনি সুরক্ষা কর্মসূচির আওতায় সপ্নসারথি দল গঠন

পলাশবাড়ীতে তান্ত্রিক দম্পতি চিকিৎসার নামে চলছে ভন্ডামী। হাতিয়ে নিচ্ছে অসহায় মানুষের লক্ষ লক্ষ টাকা অভিযোগ এলাকাবাসীর

রিপোর্টারের নাম
  • আপডেট টাইম : বুধবার, ২ মার্চ, ২০২২
  • ২২৪ বার পঠিত

গাইবান্ধার জেলা ব্যুরো প্রধানঃ আধুনিক চিকিৎসা বিজ্ঞানের যুগেও ভণ্ডামির নজির স্থাপন করেছেন চিত্তরঞ্জন সরকার ও তার স্ত্রী অদৃশ্য দৃষ্টির বদৌলতে তান্ত্রিক হয়ে ওঠা শেফালী রানী। বিভিন্ন গ্রাম-গঞ্জে কমিশন ভিত্তিক রোগী পটানোর দালাল রেখে চিকিৎসার নামে হাজার হাজার টাকা হাতিয়ে নেওয়ার অভিযোগ উঠেছে ওই দম্পতির বিরুদ্ধে।যে কোনো রোগে আক্রান্ত রোগীকে তন্ত্র-মন্ত্র-ঝাড়-ফুক আর নিজেদের তৈরি মহামূল্যবান ওষুধে সুস্থ্য করার খ্যাতি তার দালালদের মুখে মুখে। রোগ ভাল না হলেও হাজার হাজার টাকা হাতিয়ে নেয়ার অভিযোগ ভুক্তভোগী পরিবারের।

তান্ত্রিক চিত্ত-শেফালির অবস্থান গাইবান্ধা জেলার পলাশবাড়ী উপজেলার মনোহরপুর ইউপির কুমারগাড়ীর হিন্দুপাড়া গ্রামে। সপ্তাহের শনি ও মঙ্গলবার শিব ঠাকুরের সামনে ধ্যানে বসে রোগীদের গোপন রোগের বর্ণনা দিচ্ছেন শেফালী। রোগের বর্ণনা কাগজে লিখছেন মাস্টার সন্তোষ কুমার সরকার; আর সেই কাগজ চিত্তরঞ্জনের কাছে গেলে অপর পাতায় লেখা হচ্ছে রোগীর ব্যবস্থাপত্র ও চিকিৎসা উপকরণের নাম।

যেখানে লেখা থাকছে “৭টি বোতল; আড়াই কেজি চাল; পাঁচ প্রকার ফল; সোয়া গজ সুতি কাপড় এক রং; তিন হাজার টাকা; একটি ছাগল (পাঠা)। সবশেষে লেখা থাকে ঔষধ আলাদা।” এর সবই একজন রোগীর ব্যবস্থাপত্রে লেখা রয়েছে। তবে রোগ বিচারে রয়েছে ভিন্নতা।

রোগের বিবরণে লেখা হয়েছে “শরীরের সমস্যা। ব্যাথাময়; জ্বরজ্বর ভাব। খাদ্যে অরুচি; কোমর থেকে মেরুদণ্ড পর্যন্ত ব্যাথা। কু-স্বপ্ন দেখে। ঔষধে কোন ক্রিয়া হয় না। দুর্বলতার ভাব। ঘুমের সমস্যা। উপরন্তি দোষ আকর্ষণ। বাড়িতে দোষ দৃষ্টি প্রবেশ। বাড়িতে শব্দ হয়। সঠিক ভাবে নামাজী হতে হবে। কিছু ডায়াবেটিসের সমস্যা আছে।”

রোগের বিবরণে লেখা এগুলো ধ্যানে বসা শেফালী রানী বলছেন; কাগজে লিখছেন মাস্টার সন্তোষ কুমার সরকার আর এসব শুনে রোগী ও তার স্বজনরা হচ্ছেন ভীত-নাজেহাল। ব্যবস্থাপত্রে লেখা আনুষাঙ্গিক উপকরণ কেনার সব টাকা না থাকায় কাছে থাকা সর্বস্ব দিয়ে অবশিষ্ট টাকা সংগ্রহে ফিরছেন বাড়ি। পরবর্তীতে টাকা পরিশোধে নেয়া ব্যবস্থাপত্রে কোনো সুবিধা না পাওয়ায় টাকা ফেরতে রোগীদের পড়তে হয় বিড়ম্বনায়। তান্ত্রিকদের দাবি টাকা দিয়ে পথ্য কেনা হয়েছে। ফেরত দেয়া যাবে না।

এ বিষয়ে সরেজমিনে উপস্থিত হয় চিত্তরঞ্জন সরকারের বাড়িতে। সেখানে গিয়ে দেখা যায়- বাড়ীর একটি ঘরে মূর্তি সামনে বসা তান্ত্রিক শেফালী রানী। ঘরের বারান্দায় বসা রোগী ও স্বজন। পাশেই তান্ত্রিকের কথাগুলোর প্রতিধ্বনি করে তা কাগজে লিখছেন মাস্টার সন্তোষ কুমার। বারান্দার একপাশে বিছানা পেতে বসে রোগীদের ব্যবস্থাপত্র লিখছেন চিত্তরঞ্জন দা। এদিনও রোগী উপস্থিত পনেরো-কুড়ি। বয়স ভেদে তান্ত্রিক আওড়াচ্ছেন রোগের বিবরণ। আর আগেই দালালদের মাধ্যমে রোগীর অবস্থা জানা চিত্ত দা ব্যবস্থাপত্রে লেখছেন ইচ্ছামত টাকা।

দীর্ঘক্ষণ অপেক্ষার পর কথা হয় শেফালী রানীর সাথে। তিনি জানান, আমার ওপর কালী ও শিবের দৃষ্টি রয়েছে। বিগত ২০ বছর আমি এটি ধরে রেখেছি। দেবতাদের দৃষ্টির সাহায্যেই আমি রোগীদের শরীরে লুকানো রোগ জানতে পারি। ডায়াবেটিস ও হার্ড ব্যতীত সব রোগের চিকিৎসা আমি দিয়ে থাকি। শত শত রোগী ভাল হয়েছে। ফি নেয়া হয় ২৫ টাকা। আনুষাঙ্গিক সব ব্যবস্থাপত্রে উল্লেখ থাকে।

তবে তাদের দাবিকে অস্বীকার করে ভুক্তভোগী পরিবার বলছে ভিন্ন কথা। নাম প্রকাশ না করার শর্তে রোগীর এক স্বজন জানান, সব মিথ্যা। ফাকি দিয়ে চাল,ফল, টাকা, পাঠা নেয়া হয়। রোগীর কোনো উন্নতি হয় না। যারা এখানে তান্ত্রিকের সুপারিশ করছে; ওরা ভাড়াটে দালাল। আমরা টাকা ফেরত চাইতে এসেছি। আমাদের বলা হচ্ছে পণ্য-উপকরণ কিনতে খরচ হয়েছে। এখানে টাকা ফেরত হয় না।

চিত্তরঞ্জনের দাবি, যারা বিশ্বাস করে; আমরা তাদেরই ব্যবস্থাপত্র দেই। রোগী ভাল হয়। আর চাল-ফল-পাঠা-টাকা দিয়ে পূজা-অর্চনা ও বাৎসরিক অনুষ্ঠান করা হয়।

নিউজটি শেয়ার করুন

Leave a Reply

Your email address will not be published.

এ জাতীয় আরো খবর..
এই পত্রিকার সকল সংবাদ, ছবি ও ভিডিও স্বত্ত্ব সংরক্ষিত © ২০২১ দৈনিক মাতৃজগত    
কারিগরি সহযোগিতায়ঃ Bangla Webs
banglawebs999991