
মোঃ রুবেল মিয়া সংবাদদাতা ব্রাহ্মণবাড়িয়া
ব্রাহ্মণবাড়ীয়া জেলায় কোনো এক ‘অদৃশ্য কারণে’ দীর্ঘদিন ধরে লেনদেনের ক্ষেত্রে প্রায় অচল হয়ে পড়েছে ১ ও ২ টাকার ধাতব মুদ্রা। ব্যাংক, ব্যবসায়ী কিংবা সাধারণ মানুষ—কেউই এখন আর এই মুদ্রা আদান-প্রদান করতে চাইছেন না। এমনকি ভিক্ষুকরাও এই কয়েন গ্রহণে অনিহা প্রকাশ করছেন। ফলে জেলার প্রতিটি উপজেলায় ক্রেতা ও বিক্রেতা উভয়কেই পোহাতে হচ্ছে চরম ভোগান্তি।
ঐতিহাসিক প্রেক্ষাপট ও বর্তমান চিত্র:স্বাধীনতার পর ১৯৭২ সালে বাংলাদেশে টাকার প্রচলন শুরু হয়। পরবর্তীতে ১৯৭৫ সালে ১ টাকার এবং ২০০৪ সালে ২ টাকার ধাতব মুদ্রা (কয়েন) চালু করা হয়। কিন্তু গত ৮ থেকে ১০ বছর ধরে ব্রাহ্মণবাড়ীয়া জেলার নাসিরনগরসহ বিভিন্ন এলাকায় সরকারি এই মুদ্রাটি কার্যত অচল হয়ে আছে। স্থানীয়দের আশনাকা, এখনই ব্যবস্থা না নিলে ভবিষ্যৎ প্রজন্মের কাছে এই মুদ্রাগুলো অচেনা ইতিহাস হয়েই থাকবে।
খুচরা বিড়ম্বনা ও ‘চকলেট’ বাণিজ্য:মুদ্রা অচল হওয়ার ফলে দৈনন্দিন কেনাকাটায় সৃষ্টি হয়েছে জটিলতা। কোনো পণ্য কেনার পর বিল যদি ৪, ৯, ১৪, ২৯ বা ৯৯ টাকার মতো হয়, তবে ১ বা ২ টাকার খুচরা ফেরত দেওয়া বা নেওয়া সম্ভব হয় না। এর সমাধান হিসেবে দোকানিরা ক্রেতাদের হাতে জোর করে চকলেট ধরিয়ে দিচ্ছেন অথবা টাকা বাকি রাখতে বাধ্য হচ্ছেন।
ব্যবসায়ীদের অভিযোগ ও ব্যাংকের ভূমিকা:এই অচলাবস্থার পেছনে ব্যবসায়ীরা ব্যাংক ও ডিস্ট্রিবিউশন কোম্পানিগুলোকে দায়ী করছেন। তাদের অভিযোগ:
১. ব্যাংকে ১ ও ২ টাকার কয়েন জমা দিতে গেলে তারা তা গ্রহণ করতে চায় না।
২. বিভিন্ন কোম্পানির বিক্রয় প্রতিনিধিরা পণ্য সরবরাহের বিনিময়ে এই কয়েন নিতে অস্বীকৃতি জানায়।
ফলে ব্যবসায়ীদের কাছে এই কয়েনগুলো জমে বোঝা হয়ে দাঁড়াচ্ছে এবং তারা সাধারণ ক্রেতাদের কাছ থেকেও তা নিতে ভয় পাচ্ছেন।
ভুক্তভোগীদের দাবি:সরকারি মুদ্রা এভাবে অচল হয়ে পড়া কোনোভাবেই কাম্য নয়। এই পরিস্থিতি থেকে উত্তরণের জন্য স্থানীয় জনগণ ও ব্যবসায়ীরা প্রশাসনের কঠোর হস্তক্ষেপ কামনা করেছেন। ১ ও ২ টাকার কয়েন পুনরায় সচল করতে এবং জনভোগান্তি দূর করতে সরকারের দ্রুত পদক্ষেপ গ্রহণ এখন সময়ের দাবি।