গাইবান্ধা জেলা ব্যুরো প্রধানঃ
গাইবান্ধায় দ্বিতীয় স্ত্রীকে জবাই করে হত্যার দায়ে স্বামী ও প্রথম স্ত্রীর ভাইকে মৃত্যুদণ্ড দিয়েছেন আদালত। একই সাথে এই মামলার তিন আসামিকে খালাস দেয়া হয়েছে।
বৃহস্পতিবার (৩০ জুন) দুপুরে গাইবান্ধা অতিরিক্ত জেলা ও দায়রা জজ আদালতের বিচারক ফেরদৌস ওয়াহিদ এই রায় দেন। আদালতে আসামিদের উপস্থিতিতে এই রায় ঘোষণা করা হয়।
মৃত্যুদণ্ডপ্রাপ্তরা হলেন, সাঘাটা উপজেলার কামালেরপাড়া গ্রামের মফিজ উদ্দিন ব্যাপারির ছেলে সাইফুল ইসলাম ও একই উপজেলার বসন্তেরপাড়া গ্রামের চাঁন মিয়ার ছেলে করিম মিয়া। করিম মিয়া সাইফুলের প্রথম স্ত্রীর ভাই। তারা সম্পর্কে শালা-দুলাভাই।
এই মমামলায় খালাস পাওয়া তিনজন হলেন, সাইফুলের প্রথম স্ত্রী পারভীন আক্তার, মা কহিনুর বেগম বুলি ও শ্যালক কুদ্দুস রানা।
বিষয়টি নিশ্চিত করেছেন রাষ্ট্রপক্ষের আইনজীবী (অতিরিক্ত পিপি) আবু আহম্মেদ আব্দুল্লা কনক। আসামি পক্ষে মামলা পরিচালনা করেন আবু আলা সিদ্দিকুল ইসলাম ও শাহ মো. জামিল।
মামলার এজাহারের বরাত দিয়ে অতিরিক্ত পিপি আবু আহম্মেদ আব্দুল্লা কনক জানান, ২০১৫ সালে সাইফুল ইসলামের সাথে পারভীন বেগমের বিয়ে হয়। বিয়ের পর ঘর সংসার করলেও তাদের কোন সন্তান জন্ম হয়নি। সাইফুলের পুর্বের প্রথম স্ত্রী থাকায় প্রায়ই সাংসারিক বিষয় নিয়ে স্ত্রী পারভিনের সঙ্গে ঝগড়া লেগে থাকতো। এই ঘটনা চলাকালে একটি মাদক মামলায় সাইফুল ইসলাম গ্রেফতার হয়ে জেল হাজতে যায়। তখন পারভীন আকতার সাইফুলের বাড়ি ছেড়ে নিজ বাড়িতে আসে। সাইফুল জামিনে এসে পারভীনকে তার নিজ বাড়িতে নিয়ে আসে। কিন্তু হঠাৎ করেই ঘটনার দিন ২০১৭ সালের ২৬ জুলাই থেকে পারভীন বেগমের আর খোঁজ পাওয়া যায়নি। পরে ৩০ জুলাই সাইফুলের প্রথম স্ত্রীর খালা শাশুড়ির বাড়ি বসেন্তের পাড়ার সেফটিক ট্যাংক থেকে পারভীনের লাশ উদ্ধার করে পুলিশ।
এ ঘটনায় পারভীনের ভাই আজিজুল রহমান বাদি হয়ে সাঘাটা থানায় একটি হত্যা মামলা দায়ের করেন। মামলায় পাঁচ জনকে আসামি করা হয়। পরে তদন্ত শেষে পুলিশ আদালতে চার্জশীট দাখিল করে। এই মামলায় সাইফুল ও করিমকে গ্রেফতার করে কারাগারে পাঠায় পুলিশ।
এ্যাডভোকেট আবু আহম্মেদ আব্দুল্লা কনক আরও বলেন, ‘এটি একটি নি:শংস হত্যাকাণ্ড। আদালতে স্বামী সাইফুল ও তার প্রথম স্ত্রীর ভাই করিম পারভীনকে হত্যা করে লাশ সেফটিক ট্যাংকিতে ফেলে রাখার কথা স্বীকার করেন। আদালতে এই মামলার দীর্ঘ স্বাক্ষী প্রমাণের ভিত্তিতে হত্যাকাণ্ডে অংশ নেয়া দুই জনের সর্বোচ্চ শাস্তি হয়েছে। তবে মামলার বাকি তিন আসামি নিরাপরাধ হওয়ায় তাদের খালাস দিয়েছে আদালত। আদালতের এই রায়ে সন্তোষ প্রকাশ করেন তিনি।